চৈত্র সংক্রান্তি কি ? কোন মুসলমান কি এতে অংশ নিতে পারে ?

লিখেছেন লিখেছেন আবদুস সবুর ০৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:০৫:৫৮ রাত

►চৈত্র সংক্রান্তি কি ? কোন মুসলমান কি এতে অংশ নিতে পারে ? মুসলমান হিসেবে এই প্রশ্নের জবাব আপনিই খুজে বের করুন ..



বাংলা বছরের শেষ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি । চৈত্র সংক্রান্তি হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব। হিন্দুরা এ দিনটিকে অত্যন্ত একটি পুন্যদিন বলে মনে করে।

সনাতন পঞ্জিকা মতে দিনটিকে গণ্য করা হয় মহাবিষুব সংক্রান্তি। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এই দিনটিকে নানা উৎসবের মাধ্যমে পালন করে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজু ও বৈসাবি উৎসব। হিন্দুরা পিতৃপুরুষের তর্পন করে থাকে, নদীতে বা দিঘীতে পুন্যস্নান করে থাকে।

বাংলা উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এই উপলক্ষে একগ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়, একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্যদানব প্রভৃতি সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে। এ সময়ে শিব সম্পর্কে নানারকম লৌকিক ছড়া আবৃত্তি করা হয়, যাতে শিবের নিদ্রাভঙ্গ থেকে শুরু করে তার বিয়ে, কৃষিকর্ম ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ থাকে। এই মেলাতে সাধারণত শূলফোঁড়া, বানফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছের ঘোরা, আগুনে হাঁটা প্রভৃতি সব ভয়ঙ্কর ও কষ্টসাধ্য দৈহিক কলাকৌশল দেখানো হতো।

হিন্দুদের শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এইদিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পূণ্যজনক বলে মনে করা হয়। চৈত্র থেকে বর্ষার প্রারম্ভ পর্যন্ত সূর্যের যখন প্রচন্ড উত্তাপ থাকে তখন সূর্যের তেজ প্রশমণ ও বৃষ্টি লাভের আশায় কৃষিজীবী সমাজ বহু অতীতে চৈত্র সংক্রান্তির উদ্ভাবন করেছিলেন বলে জানা যায় ইতিহাস ঘেটে।

সনাতন ধর্ম মতে বাংলা মাসের শেষ দিনে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যের কাজ বলা মনে করা হয়।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে উদ্বিগ্ন কৃষককুল নিজেদের বাঁচার তাগিদে বর্ষার আগমন দ্রুত হোক, এই প্রণতি জানাতেই পুরো চৈত্র মাসজুড়ে উৎসবের মধ্যে সূর্যের কৃপা প্রার্থনা করে। এখন সূর্য তার রুদ্ররূপে প্রতিভাত। তাই চৈত্র সংক্রান্তিতে নানা উপাচারের নৈবেদ্য দিয়ে তাকে তুষ্ট করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

বাঙালী য়ে দিন চৈত্র সংক্রান্তির পালন করে থাকে সেদিন অদিবাসী সম্প্রদায় পালন করে থাকে তাদের বর্ষ বিদায় ও বর্ষবরন অণুষ্ঠান- বৈসাবি । এবার আমরা দেখবো বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি কী ? পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান প্রধান উপজাতিদের মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা উপজাতি সাধারণত পুরাতনবর্ষকে বিদায় এবং নতুন বর্ষকে স্বাগত জানাতে যথাক্রমে বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু উৎসব পালন করে থাকে। ত্রিপুরাদের বৈসুক শব্দ থেকে ‘বি’, মারমাদের সাংগ্রাই থেকে ‘সা’ এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিঝু ও বিষু শব্দদ্বয় থেকে ‘বি’ আদাক্ষরগুলির সমন্বয়ে ‘বৈসাবি’ উৎসবের নামকরণ করা হয়েছে।ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব বৈসুক। বাংলা বছরের শেষ তিনদিন পার্বত্যবাসী অতি আনন্দের সাথে এই উৎসব পালন করে থাকে।

বছরের শেষ দিনের আগের/পূর্বের দিনকে হারি বৈসুক, শেষদিনকে বলে বৈসুকমা আর নতুন বৎসরকে বলে আতাদাকি। হারি বৈসুক দিনে প্রথমে তারা ফুল সংগ্রহ করে বাড়ী-ঘর, মন্দির সাজায়, তারপর তারা গায়ে কুচাই পানি (পবিত্র পানি) ছিটিয়ে স্নান করে আসে, সাথে বয়োঃজ্যেষ্ঠদের পানি তুলে স্নান করিয়ে আশীর্বাদ নেয়।

পরবর্তীদিনে পাড়ার যুবক ছেলেরা একজন ওঝার নেতৃত্বে দলবেঁধে গরয়া নৃত্যের মহড়া দেয়। এই গরয়া দেবতার পুজোদিয়ে আশীর্বাদ বক্ষবন্ধনী কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে। তাদের বিশ্বাস কারায়া গরয়া হচ্ছে বনের হিংস্র পশুদের নিয়ন্ত্রণকারী দেবতা। তাদের পুজোর আশীর্বাদ গ্রহণ করলে পরবর্তী বছরে জুমচাষ ও বিভিন্ন কাজে বনে জঙ্গলে গেলে হিংস্র পশুদের আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া যাবে।

>>>

সর্বশেষ একটি হাদীস

>>>

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

”যে কেউ কোনো কওমের সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়।”

(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪০৩৩)

=== সিদ্ধান্ত আপনার, আপনি হাশরের মাঠে কোন সম্প্রদায় বা কওমের অন্তর্ভুক্ত হতে পছন্দ করবেন ...

বিষয়: বিবিধ

১৭৫০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

365092
০৯ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৩১
শেখের পোলা লিখেছেন : অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া কোন মুসলীমের চলেনা৷ ইসলাম ছাড়া সব ধর্ম শির্কে ভরপুর৷ তা এড়িয়ে চলাই উচিৎ৷ আর এ গুলি আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষাও বটে৷ ধন্যবাদ৷
365094
০৯ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৩৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : যে কেউ কোনো কওমের সাদৃশ্য গ্রহণ করে,সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়। ইসলাম ছাড়া সব ধর্ম শির্কে ভরপুর সুতরাং তা এড়িয়ে চলাই ঈমানদারের কর্তব্য ধন্যবাদ আপনাকে
365102
০৯ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৫০
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আমি আমার ধর্মের উতসব অনুষ্ঠান পালন করে সাচ্চা মুসলমানদের দলভুক্ত হয়ে থাকতে চা. আল্লাহ্ সহাহ হোন
365177
১০ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১০:০৩
বিবেক নাই লিখেছেন : “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” মুসলিমরা যারা এই দাবির পক্ষে কন্ঠ মিলিয়ে বলে তারা দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ। মনে রাখতে হবে ইসলাম কখনো নীতিগত ভাবেই এধরণের বিষয় স্বীকার করেনা। মহান আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা সূরা কাফিরূন এর শেষ আয়াতে ই স্পষ্ট করেছেন, যার যার দ্বীন তার এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাফেরদের উদ্দেশ্যে বলতে বলেছেন –“তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে। ” – সূরা কাফিরুন আয়াত ৬
ধর্ম যার যার উত্সব সবার – যদি সত্যি এমন হত তাহলে রাসুল (সাঃ) ইহুদি খ্রিষ্ঠানদের উত্সব বাতিল করে মুসলমানদের শুধু মাত্র দুই ঈদের সুসংবাদ দিলেন কেন? যদি জায়েজ হত উনি তখন সাহাবিদেরকে সেই সকল উত্সব উদযাপনে নিষেধ করতেন না! এখানেই রয়েছে ঈমানের পরীক্ষা! যার অনুষ্ঠান সে পালন করুক তাতে মুসলমানের কিছু আসে যায় না, যার প্রেক্ষিতে সুরা ক্বাফিরুন নাজিল হলো!
যদি কাফেরদের এই সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়া বা শরিক হওয়া বা তাতে সমর্থন দেওয়া জায়েজই হত তাহলে তো সুরা কাফিরুন রহিত ঘোষিত হত। কাজেই কাফির-মুশরিকরা কখনোই মুসলমান এর দ্বীন ইসলাম এর বিষয়গুলো পালন করতে পারে না। তদ্রপ মুসলমানদের জন্য কাফির-মুশরিকদের ধর্মের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা, কৃষ্টি-কালচার, আদর্শ, পরামর্শ কোনোটাই গ্রহণ করা জায়িয নেই। আপনি বলতে চান আমি তো সেখানে পূজা করতে যাচ্ছি না, শুধুমাত্র দেখতে যাচ্ছি। কিন্তু কেন?
365348
১১ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৫৩
বিবেক নাই লিখেছেন : ‘ইসলাম কাউকে ঘৃণা করতে শেখায় না, সবাইকে ভালোবাসতে শেখায়, বিধর্মীরা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালুন করুক। তাতে ইসলাম বাধা দেয়না কিন্তু কোন মুসলমান যদি তাদের সে অনুষ্ঠানে যায়, শুভেচ্ছা যানায় তাহলে সে মারাত্বক অপরাদ করলো।
ইমাম ইবনে কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) এর বক্তব্য শুনুন,
“কাফেরদের তাদের উৎসবে সম্ভাষণ জানানো আলিমদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ। এটা কাউকে মদ খাওয়া বা খুন করা বা ব্যভিচার করায় সাধুবাদ জানানোর মতো। যাদের নিজের দ্বীনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই, তারাই কেবল এ ধরনের ভুল করতে পারে। যে অন্যকে আল্লাহ্‌র অবাধ্যতা, বিদ’আত, অথবা কুফরীতে জড়ানোর কারণে শুভেচ্ছা জানাবে সে আল্লাহ্‌র ক্রোধ ও শাস্তির সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করল”।হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
365352
১১ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৫৯
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশী মুসলমানদেরকে ডিসাইড করতে হবে তারা পরকালে আল্লাহর সামনে নিজেকে কি হিসেবে উপস্থাপন করতে চায় :

১. একজন সংষ্কৃতিমনা বাঙ্গালী হিসেবে যেটার সবটুকুই শিরকে্‌ পরিপূর্ণ , না কি

২.
একজন আল্লাহ ভীরু মুসলমান হিসেবে ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File