ফুটফুটে প্রজাপতি হাযিহী সানা এবং নবীজি(ﷺ)এর শিশুপ্রেম

লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৪ অক্টোবর, ২০১৬, ০৬:৪৩:৩০ সন্ধ্যা



ফুলের সুঘ্রাণ সকলেই প্রাণভরে উপভোগ করে। ভালোবাসে। শিশুরা ফুলের কুঁড়ি। এদেরকে স্নেহ মায়ামমতা ও দরদের ছায়াতলে দ্বীনি সুবাসিত পরিবেশে লালন পালন করা জরুরী।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একজন সাহাবী ছিলেন যার নাম হযরত খালিদ (রাঃ)। উম্মে খালিদ নামে তাঁর একটি ফুটফুটে আদুরে শিশুকন্যা ছিল। আনন্দ উচ্ছলতায় চঞ্চল প্রজাপতির মত সারাক্ষণ সে হাসি খুশীতে মেতে থাকতো। একদিন তাঁর বাবা তাকে নিয়ে এলেন নবীজি (সাঃ) এর কাছে। উম্মে খালিদ নবীজির সান্নিধ্য পেয়ে মহা খুশী। বাবাকে ছেড়ে সে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছিলো। একবার নবীজির বালিশ ধরে টানে তো আরেকবার ধরে কম্বল। এভাবে খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে নবীজির পিছনে দাঁড়িয়ে খেলা করতে লাগলো। নবীজি অনুভব করলেন কে তার পেছনে দাঁড়িয়ে এবং নরম তুলতুলে হাত দুটি দিয়ে একান্ত মনে বিলি কাটছিল।

অকস্মাৎ বাবার দৃষ্টি তার মেয়ের উপর পড়তেই তিনি ব্যস্ত হয়ে উঠলেন এবং বললেন, একি করছো উম্মে খালিদ। নবীজিকে বিরক্ত করছো কেন? উম্মে খালিদ হকচকিয়ে গেলেন। কিন্তু নবীজি বিরক্ত হওয়া তো দুরের কথা উম্মে খালিদকে আদর সোহাগে আপ্লুত করলেন। আদর পেয়ে উম্মে খালিদ খুশীতে আটকানা। কচিমাখা মুখে বলে উঠলেন নবীজি আব্বুর চেয়েও ভাল। আব্বু শুধু শুধু বকা দিলেন আর নবীজি আমাকে কিছুই বললেন না। শুধু আদর করলেন।

একদিন নবীজি কিছু জিনিসপত্র বণ্টন করছিলেন। এর মধ্যে দুদিকে সুন্দর পাড়ওয়ালা একটি ছোট নকশা করা ওড়না পেলেন। নবীজি ভাবতে লাগলেন এটা কাকে দেয়া যায়। কিছুক্ষণ ভেবে একজনকে ডেকে বললেন, উম্মে খালিদকে নিয়ে আসো। উম্মে খালিদ এলে নবীজি তার মাথায় নিজের হাতে ওড়নাটা পরিয়ে দিলেন। বললেন, উম্মে খালিদ! হাযিহী সানা!

পিতামাতা ছোট বেলায় তাকে নিয়ে হাবশা দেশে হিজরত করেছিলেন। সে দেশ থেকে উম্মে খালিদ তাদের কিছু কিছু ভাষা শিখেছিলেন। সুন্দরকে আরবী ভাষায় বলে হুসনা। উম্মে খালিদ এটাকে হাবশী ভাষায় বলতেন, সানা। তাই নবিজীও বললেন সানা।

নবীজির উপহার পেয়ে উম্মে খালিদের কচি মুখখানা ফুলের মত সুন্দর হাসিতে ভরে উঠলো। আর তার কানে মধুমাখা কথাগুলো বাজতে লাগলো। শিশু হৃদয়ে ধ্বনিত হতে থাকলো নবীজির বাণী উম্মে খালিদ! হাযিহী সানা।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন শিশুদের সুবাস জান্নাতী সুবাসের অন্তর্গত। এই জান্নাতী শিশুদের প্রতি রাসুলের উম্মত হিসাবে আমাদেরকেও ঠিক তেমনিভাবে স্নেহ মায়ামমতা, আদর সোহাগ ও প্রেম ভালোবাসাপূর্ণ পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদান করে শিশুপ্রীতির উত্তম অনুসরণীয় পথ উন্মুক্ত করতে হবে। দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বশ্রেষ্ঠ মূলধন হিসাবে।



বিষয়: বিবিধ

১১২৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378297
০৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:৩১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অত্যন্ত শিক্ষনিয় এই পোষ্টটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
০৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:৪৯
313489
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু পরম শ্রদ্ধেয় ভাইয়া।

সুন্দর প্রেরণাপূর্ণ মন্তব্যটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
378315
০৫ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:৫৯
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু। সুন্দর শিক্ষণীয় পোস্টের জন্য জাযাকাল্লাহ খাইর।

আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ পরিপূর্ণভাবে অনুসরণের তাওফিক দিন। আমীন।
০৬ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০১:৪৬
313515
সন্ধাতারা লিখেছেন : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় ভাইয়া।

সুন্দর প্রেরণাপূর্ণ মন্তব্যটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
378399
০৭ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৬:৫৩
নিশা৩ লিখেছেন : মাশাআল্লাহ। নতুন কিছু শিখলাম আজ। অনেক ধন্যবাদ।
০৮ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:২০
313556
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু।



আপনার সুন্দর উপলব্ধি ও প্রেরণাপূর্ণ অনুভূতির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File