শূন্য হাতে

লিখেছেন লিখেছেন মোবারক ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৮:৪৫:৪৩ রাত



এই ছবি টা তুলে ছিলাম ভোর সাড়ে ৬টায়।জেদ্দার ডলফিন পার্কের পাশের রাস্তায়।

শূন্য হাতে

মোবারক হোসেন ভুঁইয়া।

ভোরের ঊষা মাথায় বহে

কাজে জেতে হয়

ঘুম কাটেনি এখনো আমার

গাড়ী অপেক্ষায়।


নাস্তা খাচ্ছি রাস্তাঘাটে

খাচ্ছি দিবা দাঁড়িয়ে

খেতে একটু দেরি হলেই

বাবু বলবেন বাড়িয়ে।

দুপুর খাবার বিকেলবেলা

রাতের খাবার দশে

এমনি করে প্রবাস জীবন

চলছে হিসেব কষে।


আর চলেনা গতর আমার

কাঁপছে থরথর

তবুও যে যেতে হবে

পানে হিসেব তর।

এই নিয়মেই উপার্জিনু

পয়সা প্রবাসেতে

সেই পয়সাতে মত্ত আছ

তোমরা বিলাসিতে।


ফিরব যখন শূন্য হাতে

আমার প্রাণের নীড়ে

নিবে কি তখন করে আপন

তোমাদেরি ভিড়ে।


সহযোগীতা করেছে,আবু তাহের মিয়াজী ভাই ও মামুন ভাই।ভুল সংশোধন যোগ্য অবশ্যই বলে যাবেন।

বিষয়: বিবিধ

১৮০৩ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

355746
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:০১
ছালসাবিল লিখেছেন : Sad Sad
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২৯
295400
মোবারক লিখেছেন : মেমোরি তেমন ভালো না ইশারা বুঝি কম। ভাইয়া
০১ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৭:৫৪
295532
ছালসাবিল লিখেছেন : Smug Tongue Love Struck
355751
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১০:০৯
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : আহারে কষ্ট Sad
355752
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৩
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : সুখের ধ্যানে মায়াহীনতায়
তবু থাকতে হয়
কারন! জীবন মানে যুদ্ধ করা
মনে নিয়ে এ প্রত্যয় ।

সুন্দর হয়েছে চালিয়ে যান Good Luck
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৫
295406
মোবারক লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া।
355753
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১০:২২
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

মা শা আল্লাহ!!
ভাব ও বর্ণনা সুন্দর,
ছন্দ-মাত্রা ও শব্দচয়নে যত্ন বাড়াতে হবে!

নিচের এ লেখাগুলো পড়ুন
======================
কবিতা লেখার নিয়মকানুনঃ তিন প্রকার ছন্দ
লিখেছেন হাসিন ইউসুফ এর ব্লগ ১১ অগাস্ট ২০১২, রাত ১০:২৩
http://www.sonarbangladesh.com/blog/hasin82/123003

(প্রথমেই বলে রাখি, এটি মৌলিক লেখা নয়। কবিতা লেখার নিয়ম কানুন লেখা আমার কর্ম নয়। সেই প্রথম শ্রেণি থেকে ১০-১২ বছর ধরে ধাক্কাধাক্কি করে বাংলা ব্যকরণের নিয়ম কানুনটাই ঠিকমত বুঝতে পারলামনা, আবার কবিতা লেখার নিয়ম কানুন! ছোঃ!! আমি আসলেই কবিতার ছন্দ, মাত্রা, পর্ব ইত্যাদি ইত্যাদি এসব জিনিস কিছুই বুঝিনা। একবার কবিতা বুঝার জন্য এসব নিয়ম কানুন নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে বসেছিলাম কিন্তু কিছুতেই সুবিধা করতে পারিনি। সব নিয়ম কানুন মাথার ওপর দিয়ে গেছে। সবশেষে দুত্তেরি! বলে ছেড়েছুঁড়ে দিয়েছি। সেদিনই বুঝে গিয়েছিলাম এসব গোলমেলে ব্যপার বুঝা আমার মত নিরীহ পাঠকের কাজ নয়। যাই হোক, লেখাটি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমী হতে প্রকাশিত "হাসানআল আব্দুল্লাহ" বিরচিত "কবিতার কথা" হতে নেয়া হয়েছে এবং মুক্তমনা ব্লগে লেখক কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। অনেকের লেখাটা দরকার হতে পারে ভেবে হবহু তুলে দিলাম। আশাকরি কেউ মাইন্ড করবেননা।)

কবিতার উতকৃষ্টতার জন্যে ছন্দ একমাত্র উপজিব্য না হলেও এটি যে প্রধানতম একটি দিক তা অস্বীকার করার উপায় নেই। শিল্প সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম, কবিতা, সৃষ্টির আদিযুগ থেকেই তাল লয় সুর ইত্যাদির সংমিশ্রণে ভাষার মালা হয়ে মানুষের মনে দোলা দিয়ে আসছে। অক্ষর ও শব্দের নানামুখি চালে এই মালা তৈরীর প্রক্রিয়া বা নিয়মই আদতে ছন্দ।
কালের বিবর্তনে, অতিক্রান্ত সময়ের সদ্ধিক্ষণে উতকৃষ্ট কবিতা নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে প্রায় সব ভাষার বিশিষ্ট কবিরা তৈরি করেছেন সুনির্দিষ্ট ও সুবিন্যস্ত নিয়ম। বাংলা কবিতাকেও অন্যান্য ভাষায় রচিত কবিতার মতো বাঁধা হয়েছে ছন্দের শৃঙ্খলে। আর এক পর্যায়ে ভেঙেও দেয়া হয়েছে সেই শৃঙ্খল, কিন্তু ভাঙার সেই প্রক্রিয়াও তৈরী করেছে নতুন ধ্বনি মাধুর্য।

ইট তৈরির কথা দিয়েই শুরু করা যাক। প্রথমেই প্রয়োজন উতকৃষ্ট মাটির। মাটিকে আবর্জনা মুক্ত করে স্বচ্ছ পানি মিশিয়ে হাত দিয়ে বা মেশিনের সাহায্যে বারবার নেড়ে চেড়ে নরম করার প্রয়োজন পড়ে। তারপর এই মাটিকে ফর্মার মধ্যে ফেলা হয়। ফর্মায় মাটি ঠিক মতো পুরতে পারলেই মাটি আর মাটি থাকে না, ইটে পরিণত হয়। এখানেই শেষ নয়, এই নরম ইটকে শক্ত করার জন্য উচ্চ তাপে দগ্ধ করা হয়। লক্ষণীয় যে, নরম মাটিকে হাত দিয়ে পিটিয়ে বা মেশিনে নেড়ে চেড়েই ইটের রূপ দেয়া যায় না। দরকার একটি ফর্মা যা কিনা মাটিকে সুন্দর একটি ইটের আকার দিতে পারে।
কবিতার প্রসঙ্গেও একই রকম ভাবে বলা যায়, প্রথমেই প্রয়োজন সুন্দর একটা বিষয়। যদিও যে কোনো বিষয়েই উতকৃষ্ট কবিতা তৈরীর প্রমাণ যথেষ্ট রয়েছে, তথাপি কবিতা লেখার শুরুর দিকে বা তরুণ কবিদের ক্ষেত্রে বিষয়ের গুরুত্ব অবহেলা করা যায় না। বিষয় স্পষ্ট হলে, তাকে ভাষায় রূপ দেয়ার জন্য দরকার শব্দ। বিষয় ও শব্দের একত্র মেলবন্ধনে গঠিত হয় কবিতার ভাব, যা ইট তৈরির পূর্বের ক্ষেত্রটি প্রস্তুত করে। এখন প্রয়োজন ফর্মার। কবিতার ক্ষেত্রে এই ফর্মাই হলো ছন্দ। বিষয় এবং শব্দকে যদি নির্দিষ্ট ছন্দের মধ্যে গ্রন্থিত করা যায় তবে অন্তত দগ্ধ করার আগে কাঁচা ইটের মতো মোটামুটি একটা কবিতা দাঁড়িয়ে যায়। তারপর একে পরিপক্ক করার জন্য প্রয়োজন হয় উপমা, অনুপ্রাস, চিত্রকল্প ইত্যাদির। তাই, প্রথমে অন্তত সাধারণ ভাবে একটা কবিতা দাঁড় করার জন্য ছন্দের প্রয়োজনীয় দিকের প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাক।
ছন্দের ভেতরে প্রবেশের আগে জানা দরকার শব্দের শরীর। আবার শব্দের শরীর সম্পর্কে জানতে হলে সর্বাগ্রে জানা দরকার স্বর বা ধ্বনি। স্বর জানার পর শব্দের শরীর অনেকাংশে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

বাংলা স্বর বা ধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

১. বদ্ধস্বর
২. মুক্তস্বর

বদ্ধস্বর:
যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় জিভ মুখের প্রবহমান বাতাসকে আটকে দেয় তাদের বদ্ধস্বর বলা হয়। যেমন : কর, ধর, হায়, পাক, আঁক, ঝাঁক, থাক, দিন, বীন, হই, ইত্যাদি।

মুক্তস্বর:
যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের প্রবহমান বাতাস জিভের কোনো বাধা ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে তাদের মুক্তস্বর বলে। যেমন: হা, না, কা, চা, দি, দা, বা, বু ইত্যাদি।

এবার শব্দের শরীর প্রসঙ্গে আলোচনায় ঢোকার শুরুতেই বেছে নেয়া যাক “করলাম” শব্দটিকে। স্পষ্টত এটি দু’টি স্বর দিয়ে গঠিত। প্রথমটি ‘কর’ এবং দ্বিতীয়টি ‘লাম’। উপরে প্রদত্ত বদ্ধ এবং মুক্ত স্বরের সংজ্ঞানুসারে ‘কর’ এবং ‘লাম’ উভয়েই বদ্ধস্বর। তাহলে বলতে পারি “করলাম” শব্দটির শরীর দু’টি মাত্র বদ্ধস্বর দিয়ে গঠিত।
এবার “সঙ্গোপনে” শব্দটি গ্রহণ করা যায়। এ শব্দটি চারটি স্বর দিয়ে গঠিত সং, গো, প, এবং নে,। এটা স্পষ্ট, সং, বদ্ধস্বর এবং গো, প, ও নে এরা প্রত্যেকটিই মুক্তস্বর। অর্থাত সং উচ্চারণের সময় জিভ মুখের প্রবহমান বাতাসকে আটকে দেয় কিন্তু গো, প এবং নে উচ্চারণে জিভ সেটা করতে পারে না, ফলে মুখের ভেতরের বাতাস অনায়াসে বেরিয়ে আসে।
ছন্দের মূল আলোচনায় আসার আগে আরো একটি দিকে লক্ষ্য করা প্রয়োজন। তা হলো “মাত্রা”। স্বর জানার পর মাত্রা সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান অর্জন সহজতর হবে।

বাংলা কবিতার সব ছন্দেই একটি মুক্তস্বর, সে যে অবস্থানেই থাকুন না কেনো, একটি মাত্র মাত্রা বহন করে।
কিন্তু সমস্যা হলো বদ্ধস্বর নিয়ে। একটি বদ্ধ স্বর কখনো একটি আবার কখনো দু’টি মাত্রা বহন করে। অতএব পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনার মাধ্যমে বুঝে নেয়া দরকার বদ্ধস্বর কোন অবস্থায় একটি এবং কোন অবস্থায় দু’টি মাত্রা বহন করে। অবশ্য তার আগে জানা চাই ছন্দের প্রকার ভেদ।

বাংলা কবিতার ছন্দ প্রধানত তিন প্রকার।

১. স্বরবৃত্ত ছন্দ
২. মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
৩. অক্ষরবৃত্ত ছন্দ

স্বরবৃত্ত ছন্দ:
স্বরবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর এক মাত্রা বহন করে। কোনো অবস্থাতেই এ ছন্দে বদ্ধস্বর দু’মাত্রা বহন করতে পারে না। তাছাড়া মুক্তস্বরের মাত্রা এক।
কবিতার পঙ্ক্তি দিয়ে বিবেচনা করা যাক।

১. মামার বাড়ি আর যাবো না আর খাবো না মামীর গাল,
কথায় কথায় পড়বে না আর আমার পিঠে অমন তাল।

এখানে প্রতি পঙ্ক্তিতে তিনটি করে পর্ব এবং একটি করে অতিপর্ব আছে। প্রত্যেক পর্বে সমান সংখ্যক মাত্রা আছে এবং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অতিপর্ব পর্ব থেকে কম সংখ্যক মাত্রা ধারণ করেছে। ছন্দ বিন্যাস করলে দেখা যায়,

মামার বাড়ি/ আর যাবো না/ আর খাবো না/ মামীর গাল,

কথায় কথায়/ পড়বে না আর/ আমার পিঠে/ অমন তাল।
স্বরের উপরে লম্বা দাগগুলো মাত্রা চিহ্ন নির্দেশক। মুক্ত স্বরের উপরে শুধু একটি দাগ দিলেও বদ্ধস্বর বোঝাতে চাঁদের মতো চক্র রেখা এঁকে তার উপরে মাত্রা চিহ্ন দেয়া হয়েছে। প্রতি লাইনে আড়াআড়ি দাগ কেটে পর্ব নির্দেশ করা হয়েছে।

পর্ব, অতিপর্ব ও উপপর্ব:
কবিতার প্রতিটি লাইনে সমমাত্রার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশই হলো পর্ব। পঙ্ক্তি শেষের পর্বাংশকে অতিপর্ব বলা হয় যার মাত্রা সংখ্যা পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে সর্বদাই কম। এ ধরনের পর্বাংশ লাইনের শুরুতে থাকলে আমরা তাকে উপপর্ব বলে চিহ্নিত করবো।
উপরে প্রদত্ত উদাহণের ছন্দ বিন্যাস লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, প্রতিটি পর্বের মাত্রা সংখ্যা চার, এবং অতিপর্বের মাত্রা সংখ্যা তিন। এই কাব্যাংশে কোনো উপপর্ব নেই।

যদি কবিতাটি সম্পূর্ণ করার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে প্রতিটি বর্ধিত লাইনেও উপরের লাইনগুলির সমান সংখ্যক পর্ব একই মাত্রায় রাখতে হবে, এবং অতিপর্বেও উপরের লাইন অনুসারে তিন মাত্রা থাকবে। যেমন,

মামার বাড়ি আর যাবো না আর খাবো না মামীর গাল,
কথায় কথায় আমার পিঠে পড়বে না আর অমন তাল।
সকাল বেলা জেগে আমি তাই তো গেলাম মায়ের ঘর,
“ভায়ের বাড়ি যাওগে একা, আমার গায়ে ভীষণ জ্বর।”

তাহলে স্বরবৃত্ত ছন্দের এই কবিতাটির কাঠামো দাঁড়াবে:

৪ + ৪ + ৪ + ৩

২. যখন ওরা অপিশে যায় কিংবা চালায়
তুমুল দোকানদারি
তখন আমি ঢেউ সাজানো নদীর বুকে
দিব্যি জমাই পাড়ি।
(যখন ওরা/শামসুর রাহমান)

মাত্রা বিন্যাস:

যখন ওরা/ আপিশে যায়/ কিংবা চালায়/

তুমুল দোকান/ দারি

তখন আমি/ ঢেউ সাজানো/ নদীর বুকে/

দিব্যি জমাই/ পাড়ি।

কাঠামো:
৪ + ৪ + ৪
৪ + ২

এখানে চার মাত্রার চারটি পর্ব এবং দুই মাত্রার একটি অতিপর্ব দিয়ে পঙ্ক্তি গঠিত হয়েছে। সাথে সাথে লক্ষণীয় যে শামসুর রাহমান একটি পঙ্ক্তি ভেঙে দু’টি লাইন করেছেন। কিন্তু পর্ব সংখ্যা প্রতি দুই দুই লাইনে সমান রেখেছেন। ইচ্ছা করলে প্রথম উদাহরণের কবিতাটি একই ভাবে ভেঙে দেয়া যায়। যেমন,

মামার বাড়ি আর যাবো না
আর খাবো না মামীর গাল,
কথায় কথায় পড়বে না আর
আমার পিঠে অমন তাল।

এই নতুন আঙ্গিকে কবিতাটির কাঠামো দাঁড়াবে:

৪ + ৪ +
৪ + ৩

প্রতি দুই লাইনে পর্ব সংখ্যা সমান রাখা হয়েছে।

৩. মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে
মেঘের মতো পাল উড়িয়ে কী ভাসে!
(ভর দুপুরে/আল মাহমুদ)
মাত্রা বিন্যাস:

মেঘনা নদীর/ শান্ত মেয়ে/ তিতাসে

মেঘের মতো/ পাল উড়িয়ে/ কী ভাসে !

কবিতাটির কাঠামো:
৪ + ৪ + ৩
অর্থাত এই কবিতায় কবি প্রতি লাইনে চার মাত্রার দু’টি পর্ব এবং তিন মাত্রার একটি অতিপর্ব রেখেছেন।
উপরের উদাহরণগুলি থেকে দেখা যায় সব ক্ষেত্রেই প্রতিটি পর্বে চারমাত্রা এসেছে। তাহলে কি বলা যায়, স্বরবৃত্ত ছন্দে প্রতিটি পর্বে মাত্রা সংখ্যা চারে সীমাবদ্ধ থাকে? তাতক্ষণিক উত্তর হ্যাঁ-সূচক।
তবে স্বরবৃত্ত ছন্দে কবিতার পর্বকে আরো এক প্রকার মাত্রার সমন্বয়ে গঠন করা যায়। সেটি হলো ‘সাত মাত্রার মন্দাক্রান্তা ছন্দ’ বা সংক্ষেপে মন্তাক্রান্তা ছন্দ। স্বরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্ত উভয় ক্ষেত্রেই সংস্কৃত ধাচের এই বুনন সম্ভব। নাম থেকেই বোঝা যায় পর্বে মাত্রা সংখ্যা থাকবে সাতটি।
উদাহরণ:

৪. বাবুদের তাল পুকুরে
হাবুদের ডাল কুকুরে
সে কি বাস করলে তাড়া
বলি থাম একটু দাঁড়া।
(লিচু চোর/ কাজী নজরুল ইসলাম)

এখানে প্রতিটি লাইন সাত মাত্রার একটি মাত্র পর্ব দিয়ে গঠিত। আবার অন্যভাবে বলা যায় যে, প্রথমে তিন এবং পরে চার মাত্রার দু’টি পর্ব দিয়ে লাইন গঠিত হয়েছে।

একই ছন্দে রচিত অন্য একটি কবিতার কথা বিবেচনা করা যায়,

৫. আগুনের পরশ মণি/ ছোঁয়াও পাণে,
এ জীবন পূণ্য করো/ দহন-দানে।
আমার এই দেহখানি/ তুলে ধরো,
তোমার ওই দেবালয়ের/ প্রদীপ করো
নিশিদিন আলোক-শিখা/ জ্বলুক গানে।
(পরশমণি/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
লক্ষণীয় প্রতিটি লাইনের প্রথমে সাত মাত্রার একটি পর্ব ও শেষে চার মাত্রার একটি অতিপর্ব এসেছে।

এই বুননে কবিতাটির কাঠামো দাঁড়ায় :
৭ + ৪
৭ + ৪
তবে কেউ হয়তো বলতে পারেন, রবীন্দ্রনাথ এই কবিতায় তিন মাত্রার উপপর্ব রেখে চার মাত্রার পর্ব গঠন করেছেন। সেক্ষেত্রে মাত্রা বিন্যাস হবে নিন্মরূপ:

আগুনের পরশ মণি/ ছোঁয়াও পাণে,/
এ জীবন পূণ্য করো/ দহন-দানে।/
আমার এই দেহখানি/ তুলে ধরো,/
তোমার ওই দেবালয়ের/ প্রদীপ করো/
নিশিদিন আলোক-শিখা/ জ্বলুক গানে।/

কাঠামো:
৩ + ৪ + ৪
৩ + ৪ +৪

লক্ষণীয়, যে ভাবেই পড়া হোক না কেনো, কবিতার চাল প্রথম পর্বকে সাত মাত্রায় টেনে নিয়ে যায়।

মাত্রাবৃত্ত ছন্দ:
মাত্রাবৃত্তের ক্রিয়া কলাপ অনেকটা স্বরবৃত্তের মতো হলেও এই ছন্দে বদ্ধস্বর দু’মাত্রা বহন করে। কোনো অবস্থাতেই বদ্ধস্বর একমাত্রা বহন করতে পারে না। কিন্তু স্বরবৃত্তের মতোই মুক্তস্বরের মাত্রা এক।
কবিতার পঙ্ক্তি দিয়ে বিবেচনা করা যায়।

১. মামার বাড়িতে/ যাবো না গো আমি/ খাবো না গো আর/ মামীর গাল,
কথায় কথায়/ পড়বে না আর/ পিঠের উপরে/ অমন তাল।

এখানে স্বরবৃত্ত ছন্দের প্রথম উদাহরণটি একটু ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি লাইনে এবার ছয় মাত্রার তিনটি করে পর্ব এবং পাঁচ মাত্রার একটি করে অতিপর্ব এসেছে।

মাত্রা বিন্যাস:
মামার বাড়িতে/ যাবো না গো আমি/ খাবো না গো আর/ মামীর গাল,

কথায় কথায়/ পড়বে না আর/ পিঠের উপরে/ অমন তাল।

অতএব কবিতাটির কাঠামো দাঁড়ায় :

৬ + ৬ + ৬ + ৫

অতিপর্বের মাত্রা সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, তবে কিছুতেই তা পর্বের মাত্রা সংখ্যার সমান হবে না। অতিপর্বের মাত্রা সংখ্যা যদি পর্বের মাত্রা সংখ্যার সমান হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে অতিপর্ব একটি পূর্ণ পর্বের রূপ নেবে। এখানে বলে রাখা ভালো, অতিপর্ব ছাড়াও শুধু পর্ব দিয়ে কবিতার কাঠামো তৈরি করা যায়। মাত্রা বিন্যাস সহ আরো কিছু কবিতার উদাহরণ:

ছয় মাত্রার পর্ব এবং চার মাত্রার অতিপর্ব:

২. কবি বন্ধুরা/ হতাশ হইয়া/ মোর লেখা পড়ে/ শ্বাস ফেলে

বলে কেজো ক্রমে/ হচ্ছে অকেজো/ পলি টিক্সের/ পাশ ঠেলে।
(আমার কৈফিয়ত/ কাজী নজরুল ইসলাম)

কবিতাটির কাঠামো:

৬ + ৬ + ৬ + ৪

ছয় মাত্রার পর্ব এবং তিন মাত্রার অতিপর্ব:

৩. সই পাতালো কি/ শরতে আজিকে/ স্নিগ্ধ আকাশ/ ধরণী ?

নীলিমা বহিয়া/ সওগাত নিয়া/ নমিছে মেঘের/ তরণী !
(রাখী বন্ধন/ কাজী নজরুল ইসলাম)

কাঠামো:

৬ + ৬ + ৬ + ৩

ছয় মাত্রার পর্ব এবং দুই মাত্রার অতিপর্ব:

৪ক. এ জগতে হায়/ সেই বেশি চায়/ আছে যার ভূরি/ ভূরি

রাজার হস্ত/ করে সমস্ত/ কাঙালের ধন/ চুরি।
(দুই বিঘে জমি/রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

খ. দুর্গম গিরি/ কান্তার মরু/ দুস্তর পারো/ বার

লঙ্ঘিতে হবে/ রাত্রি নিশিতে/ যাত্রীরা হুশি/ য়ার।
(কাণ্ডারী হুশিয়ার/ কাজী নজরুল ইসলাম)

কাঠামো:

৬ + ৬ + ৬ + ২

পাঁচ মাত্রার পর্ব কিন্তু অতিপর্ব নেই:

৫. তোমারে পাছে/ সহজে বুঝি/ তাই কি এতো/ লীলার ছল/

বাহিরে যবে/ হাসির ছটা/ ভিতরে থাকে/ আখির জল।/
(ছল/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
কাঠামো:

৫ + ৫ + ৫ + ৫

পাঁচ মাত্রার পর্ব এবং দু’মাত্রার অতিপর্ব:

৬ক. এ-ভূজমাঝে/ হাজার রূপ/ বতি

আচম্বিতে/ প্রাসাদ হারা/ য়েছে;

অমরা হতে/ দেবীরা সুধা/ এনে,

গরল নিয়ে/ নরকে চলে/ গেছে।
(নিরুক্তি/ সুধীন্দ্রনাথ দত্ত)

কাঠামো:

৫ + ৫ + ২

খ. হৃদয়ে তার/ অন্ধকার/ পৃথিবী নিঝ/ ঝুম

বিফল তার/ সকল বৈ/ভব

ভাঙে না তার/ বসন্তের/ অন্তহীন/ ঘুম

জাগে না কল রব/

কপালে যার/ আঁকেনি কেউ/ প্রেমের কুম/ কুম

ব্যর্থ তার/ সব।
(মধ্য ফাল্গুনে/নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী)

কাঠামো:

৫ + ৫ + ৫ + ২
৫ + ৫ + ২

গ. তখনো ছিলো/ অন্ধকার/ তখনো ছিলো/ বেলা

হৃদয় পুরে/ জটিলতার/ চলিতেছিলো/ খেলা

ডুবিয়াছিলো/ নদীর ধার/ আকাশে আধো/ লীন

সুষমাময়ী/ চন্দ্রমার/ নয়ান ক্ষমা/ হীন
(হৃদয়পুর/শক্তি চট্টোপাধ্যায়)

কাঠামো:

৫ + ৫ + ৫ + ২

আট মাত্রার পর্ব এবং ছয় মাত্রার অতিপর্ব:

৭. শেফালি কহিল আমি/ ঝরিলাম তারা !

তারা কহে আমারো তো/ হল কাজ সারা।
(এক পরিণাম/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

কাঠামো:
৮ + ৬

এখানে বলে রাখা ভালো এ কাঠামোর কবিতাকে আট-ছয় মাত্রার কবিতাও বলা যেতে পারে। চৌদ্দ মাত্রার সনেট সৃষ্টির কাজে এ ধরনের ছন্দ বিন্যাস বিশেষ ব্যবস্থায় কাজে লাগানো যায়। তাছাড়া অক্ষরবৃত্ত ছন্দে এর উপস্থিতি অনেক বেশি।

মাত্রাবৃত্তে সাত মাত্রার পর্বের ব্যবহার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনেকটা স্বরবৃত্তের মতোই তবে মাত্রাবৃত্তে অতিপর্ব রাখাটা বেশ সহজতর। প্রথমে অতিপর্বহীন কয়েকটি কবিতার উদাহরণের দিকে তাকানো যাক।

সাত মাত্রার দুই পর্ব বিশিষ্ট কবিতা:

৮. তোমার মুখ আঁকা/ একটি দস্তায়/

লুটিয়ে দিতে পারি/ পিতার তরবারি/

বাগান জোত জমি/ সহজে সস্তায়/

তোমার মুখ আঁকা/ একটি দস্তায়;/
(শোণিতে সৌরভ/ আল মাহমুদ)
কাঠামো:

৭ + ৭

সাত মাত্রার তিন পর্ব বিশিষ্ট কবিতা:

৮. উগ্র ঢাল, তার/ তীক্ষè শরমুখ/ রঙিন, কোপনীয়/

রেখেছে সঞ্চিত/ যা-কিছু মায়াময়,/ মধুর, গোপনীয়
(সুন্দর জাহাজ/অনু: বুদ্ধদেব বসু)

কাঠামো:
৭ + ৭ + ৭

সাত মাত্রার চার পর্ব বিশিষ্ট কবিতা:

৯.
অন্ধ রেল গাড়ি/ বধির রেলগাড়ি/ অন্ধ রেল বেয়ে/ চলছে দ্রুত বেগে/

দু-চোখে মরা ঘুম/ আকাশে মরা মেঘ/ সঙ্গে মরা চাঁদ/ অন্ধ আছি জেগে/

অন্ধ বগিগুলো/ ক্লান্ত হয়ে গেছে/ এগিয়ে চলে তবু/ অন্ধ প্রতিযোগী/

চলছে ট্রাগ বেয়ে/ জানে না কোথা যাবে/ নষ্ট রেলগাড়ি/ অন্ধদূর বোগী।/
(অন্ধ রেলগাড়ি / হুমায়ুন আজাদ)

কাঠামো:

৭ + ৭ + ৭ + ৭

সাত মাত্রার মাত্রাবৃত্তে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার অতিপর্ব ব্যবহারের নমুনা:

১০. ফসল অন্যের,/ তোমার শুধু
অন্য কোনো দূর/ অরণ্যের
পন্থহীনতায়/ স্বপ্নে কেঁপে ওঠা/
কোন অসম্ভব/ আকাক্সক্ষায়।
(অসম্ভবের গান/বুদ্ধদেব বসু)

কাঠামো:
৭ + ৫
৭ + ৫
৭ + ৭
৭ + ৬

এই চার লাইনে অতিপর্বে কোথাও পাঁচ কোথাও ছয় মাত্রা রাখা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় লাইনে কোনো অতিপর্ব নেই। ফলে, তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন মিলে একটি পঙ্ক্তি তৈরী করেছে।

১১. নিমেষে ভুলি সাধ/ অতল মোহে।
মোহিনী ও-মুখের/ মিথ্যা বুলি
সত্য সার ভাবি,/ এবং আমি
ধারি না ধার কোনো/ মহোদয়ের।
(কবর খোড়ার গান/শামসুর রাহমান)

কাঠামো:
৭ + ৫
৭ + ৫

এই কবিতায় পাঁচ মাত্রার অতিপর্ব রাখা হয়েছে।

১২. যেখানে লেজবস/ প্রণয় ঝর্ণায়/ উলঙ্গ
শান্ত বয়ে যায়/ গভীর শেষমেশ/ সমুদ্রে
ভাসিয়ে প্রান্তর/ যায় সে আঁকাবাঁকা/ খলখল
ঝঞ্ঝা গোপনীয়,/ দেবতা ভূমিতলে/ অসংখ্য
যেখানে লেজবস/ প্রণয় ঝর্ণায়/ উলঙ্গ।
(লেসবস/অনু: হাসানআল আব্দুল্লাহ)

কাঠামো:
৭ + ৭ + ৪
৭ + ৭ + ৪

বোদলেয়ার রচিত এই কবিতাটি অনুবাদে অতিপর্বে চার মাত্রা রাখা হয়েছে। দু’টি করে পর্ব দিয়ে কবিতার লাইন গঠিত।

অক্ষরবৃত্ত ছন্দ:
অক্ষরবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর কখনো একমাত্রা এবং কখনো দুই মাত্রা বহন করে। অর্থাত পর্বে মাত্রা গণনা রীতি কোথাও স্বরবৃত্তের আবার কোথাও মাত্রাবৃত্তের মতন। বদ্ধস্বর যদি শব্দের প্রথম বা মাঝে থাকে তবে তা এক মাত্রা কিন্তু শব্দের শেষে অবস্থান করলে দুই মাত্রা বহন করে। উদাহরণ স্বরূপ “সূর্যশোক” শব্দটি বিবেচনা করা যেতে পারে।
স্বর বিন্যাসে শব্দটি নতুন করে লিখে আমরা পাই:

সূর + য + শোক

প্রথম এবং শেষেরটি বদ্ধস্বর, কিন্তু মাঝেরটি মুক্তস্বর। “সূর” বদ্ধস্বরটি শব্দের প্রথমে থাকায় এর মাত্রা সংখ্যা এক। অন্যদিকে “শোক” বদ্ধস্বরটি শব্দের শেষে থাকায় এর মাত্রা সংখ্যা দুই। আর মুক্ত স্বর “য”-এর মাত্রা সংখ্যা সর্বদাই এক। অতএব অক্ষরবৃত্তের এই নিয়মে “সূর্যশোক” এর মাত্রা সংখ্যা চার।

মাত্রা বিন্যাস:
সূর্যশোক

সূর + য + শোক
= ১ + ১ + ২
= ৪

মাত্রা বিন্যাস সহ অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত কয়েকটি কবিতা।

পর্বে আট মাত্রা এবং অতিপর্বে ছয়মাত্রা আছে এমন একটি কবিতা:

১. হাজার বছর ধরে/ আমি পথ হাঁটিতেছি/ পৃথিবীর পথে,

সিংহল সমুদ্র থেকে/ নিশীথের অন্ধকারে/ মালয় সাগরে

অনেক ঘুরেছি আমি ;/ বিম্বিসার অশোকের/ ধূসর জগতে

সেখানে ছিলাম আমি;/ আরো দূর অন্ধকারে/ বিদর্ভ নগরে;
(বনলতা সেন/ জীবনানন্দ দাশ)
কাঠামো:

৮ + ৮ + ৬

এখানে “সংহল” “সমুদ্র” “অন্ধকার” এবং “বিম্বিসার” শব্দ চারটি লক্ষ্য করা যায়। প্রথম শব্দ দু’টি তিনটি করে এবং শেষের শব্দ দু’টি চারটি করে মাত্রা বহন করছে।
এদের স্বর ও মাত্রা বিন্যাস নিম্নরূপ:

সিংহল

সিং + হল
= ১ + ২
= ৩

সমুদ্র

স + মুদ + রো
= ১ + ১ + ২
= ৩
অন্ধকার

অন্ + ধো + কার
= ১ + ১ + ২
= ৪

বিম্বিসার

বিম + বি + সার
= ১ + ১ + ২
= ৪
দেখা যাচ্ছে, শব্দের প্রথমে এবং মাঝে অবস্থিত বদ্ধস্বরগুলি এক মাত্রা কিন্তু শেষে অবস্থিত বদ্ধস্বরগুলি দু’মাত্রা বহন করছে।

অক্ষরবৃত্ত ছন্দে মাত্রা গণনার এই রীতি কবি ইচ্ছা করলে বদলে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সব বদ্ধস্বরকে দিতে হবে দু’মাত্রা বহন করার ক্ষমতা। তবে, সতর্ক থাকা প্রয়োজন, যাতে পুরো কবিতায় একই নিয়ম প্রতিফলিত হয়। এক কবিতায় দু’রকম নিয়ম অনুসরণ করলে একদিকে পাঠক যেমন বিভ্রান্ত হবেন, অন্যদিকে কবিরও ছন্দে অদক্ষ হাতের প্রমাণ থেকে যাবে।
সকল বদ্ধস্বরকে দু’মাত্রা বহন করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এমন একটি কবিতা:

২. বহুদিন থেকে আমি/ লিখছি কবিতা

বহুদিন থেকে আমি/ লিখিনা কবিতা
(বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা/ সৈয়দ শামসুল হক)

কাঠামো:

৮ + ৬

এখানে “লিখছি” শব্দটির “লিখ” বদ্ধস্বরটি শব্দের প্রথমে বসেও দুই মাত্রা বহন করছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রম। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে, এটা কবির ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
শব্দের প্রথম ও মাঝের বদ্ধস্বরকে একমাত্রা দেয়া হয়েছে এমন আরো দু’টি কবিতা:

৩. …রহে বলী; রাজদণ্ড/ যত খণ্ড হয়

তত তার দুর্বলতা,/ তত তার ক্ষয়।

একা সকলের উর্ধ্বে/ মস্তক আপন

যদি না রাখিতে রাজা,/ যদি বহুজন…
(গন্ধারীর আবেদন/রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
কাঠামো:
৮+৬

৪. হে দারিদ্র্য তুমি মোরে/ করেছ মহান

তুমি মোরে দানিয়েছ/ খ্রীস্টের সম্মান।

কণ্টক-মুকুট শোভ!/ ─দিয়াছ, তাপস

অসঙ্কোচ প্রকাশের/ দুরন্ত সাহস:
(দারিদ্র / কাজী নজরুল ইসলাম)

কাঠামো:

৮ + ৬

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এ দু’টি কবিতাই চোদ্দ মাত্রার সনেট নির্মাণের কাজে অবদান রাখতে পারে। সনেট অধ্যায়ে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।

এবার অন্য একটি কবিতা:

৫. ক্রূর ঝড় থেমে গেছে,/ এখন আকাশ বড়ো নীল/
গাছের সবুজ পাতা/ কেঁপে কেঁপে অত্যন্ত সুষম/
বিন্যাসে আবার স্থির/
(বাজপাখি / শামসুর রাহমান)

এই কবিতাটির প্রতিটি লাইনের প্রথম পর্ব আট মাত্রা এবং দ্বিতীয় পর্ব দশ মাত্রা বহন করছে। যদি পর্বের আলোচনার আলোকে এটা বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে বলা যায় শেষের দশ মাত্রার পর্বটি অতিপর্ব। কিন্তু তা কি করে হয়? অতিপর্বের মাত্রা তো পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে কম হওয়ার কথা। তবে কি এক্ষেত্রে মন্তব্য করা যাবে যে কবিতাটি লেখা হয়েছে ৮+৮+২ কাঠামোতে অর্থাত আট মাত্রার দু’টি পর্ব এবং দুই মাত্রার অতিপর্ব রেখে। কিন্তু তাও ঠিক নয়। কারণ, প্রথম লাইনের “নীল” শব্দটি দুইমাত্রা বহন করায় এটাকে দুই মাত্রার অতিপর্ব ধরলেও ধরা যায়। কিন্তু সমস্যা হয় দ্বিতীয় লাইনের “সুষম” শব্দটিকে নিয়ে। দুই মাত্রার অতিপর্ব বের করতে হলে “সুষম” থেকে “সু” স্বরটিকে পূর্বের পর্বের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়, এবং “ষম” কে অতিপর্ব ধরতে হয়। অর্থাত তিন অক্ষরের এই শব্দটিকে ভেঙে দিয়ে কবিতার পর্ব বিন্যাস করতে হয়। এক্ষেত্রে যা যুক্তিপূর্ণ নয়। তাই এই কবিতাটিকে “আট-দশ” মাত্রার বা “আট-দশ” চালের কবিতা বলা প্রয়োজন, যা অক্ষরবৃত্তে কবিতা লেখার অন্য একটি নিয়ম হিসেবে বেশ কয়েক যুগ ধরে বাংলা কবিতায় প্রচলিত এবং এটাই হচ্ছে আঠারো মাত্রার সনেট গঠনের নির্ভরযোগ্য কাঠামো।

অক্ষরবৃত্ত ছন্দের আলোচনায় অগ্রসর হলে মনে হতে পারে যে এর অঙ্গন অনেক প্রশস্ত এবং কিছুটা খোলামেলা।
আসলেই তাই। বাংলা কবিতার ত্রিশের দশকের গুরুত্বপূর্ণ কবিরা অক্ষরবৃত্তের উপর প্রচুর কাজ করেছেন এবং একে একটা মুক্ত রূপ দিয়েছেন; যা অক্ষরবৃত্ত ছন্দের মাত্রা গণনার নিয়মকে ঠিক রেখে পর্বে মাত্রা বাড়িয়ে কমিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পর্ব ভেঙেচুরে ছন্দকে শাসন করে সজোরে আছাড় মেরে কবিতাকে সোজা করে দাঁড় করা হয়েছে। উঁকি দিয়েছে অক্ষরবৃত্তের নতুন ধারা। অক্ষরবৃত্তের এই নতুন রূপকে অনেকে “মুক্ত ছন্দ” বলেন। কিন্তু আমরা একে “নঞ ছন্দ” বলবো। নাই অর্থে নঞ। অর্থাত সাধারণ ভাবে দেখলে কবিতায় ছন্দ নেই, কিন্তু বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করলে ছন্দের দৃঢ় বন্ধন দৃষ্টিগোচর হয়। নঞ ছন্দের উদাহরণ লক্ষ্য করা যাক:

১. আকাশ জানে না,/
প্রকাশ রাস্তায় একী/ কুড়ানো স্বাক্ষর,/
নক্ষত্র সমাজ খোঁজে/ শেষ পরিচয়/
ওরা পরস্পর/
নূতন বিরহে পায়/ অভিন্ন বিচ্ছেদে দীপ্তিময়/
উদ্ভাসিত দূরে দূরে/ অনন্ত বাসর।/
(যুগ্মদূর/ অমিয় চক্রবর্তী)
কাঠামো:

৮ + ৬
৮ + ৬

৮ + ১০
৮ + ৬

২. সজীব সকালে চোখ মেলি,/ প্রতিদিনের পৃথিবী/
আমাকে জানায় অভি/ বাদন। টাটকা রোদ
পাখিদের উড়াউড়ি,/ গাছের পাতার দুলুনি,/ বেলফুলের গন্ধ/
ডেকে আনে আমার বালকবেলাকে/
(একটি দুপুরের উপকথা / শামসুর রাহমান)

কাঠামো:
১০ + ৮
৮ + ৮
৮ + ৮ + ৮
১৪

৩. যখন তাদের দেখি/ হঠাত আগুন লাগে/ চাষীদের মেয়েদের/
বিব্রত আঁচলে;/ সমস্ত শহর জুড়ে/ শুরু হয় খুন, লুঠ,/ সম্মিলিত অবাধ ধর্ষণ,
ভেঙে পড়ে শিল্পকলা,/ গদ্যপদ্য;/ দাউদাউ পোড়ে/ পৃষ্ঠা সমস্ত গ্রন্থের;
ডাল থেকে/ গোঙিয়ে লুটিয়ে পড়ে/ ডানা ভাঙা নিঃসঙ্গ দোয়েল
আর্তনাদ করে বাঁশি/ যখন ওঠেন মঞ্চে/ রাজনীতিবিদগণ।
(রাজনীতিবিদগণ/ হুমায়ুন আজাদ)

কাঠামো:
৮ + ৮ + ৮
৬ + ৮ + ৮ + ১০
১০ + ৪ + ৬ + ৮
৪ + ৮ + ১০
৮ + ৮ + ৮

এইসব উদাহরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে পর্বে মাত্রা সংখ্যা অসমান; কিন্তু জোড় মাত্রার পর্ব গঠিত হয়েছে।
মুক্ত বা নঞ ছন্দে কবিতা লেখার সহজ উপায়

এখন প্রশ্ন হলো মুক্ত বা নঞ ছন্দে কবিতা লেখার নিয়ম কি? এ ছন্দে লেখা কবিতাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে যা ধরা পড়বে তা হলো:

১. অক্ষরবৃত্ত ছন্দের মাত্রা গণনার নিয়ম ঠিক থাকবে।
২. প্রতিটি পর্বে জোড়সংখ্যক মাত্রা থাকতে হবে।
৩. পর্বে মাত্রা সংখ্যা দুই থেকে শুরু করে চার, ছয়, আট, দশ যে কোনো সংখ্যক রাখা যেতে পারে।

মুক্ত বা নঞ ছন্দে কবিতা লেখার সময় যদি একটা বিশেষ নীতি মেনে চলা হয় তবে উপরের তিনটি শর্তই একসঙ্গে পূরণ করা সম্ভব। নীতিটি হলো:

জোড়ে জোড়, বিজোড়ে বিজোড়।

তার মানে জোড় মাত্রার শব্দের পাশাপাশি জোড় মাত্রার শব্দ এবং বিজোড় মাত্রার শব্দের পাশাপাশি বিজোড় মাত্রার শব্দ বসানো। এরপর ইচ্ছা মতো লাইন তৈরি করা হলেও ছন্দের কোনো বিচ্চুতি ঘটে না।


বিষয়শ্রেণী: বিবিধ

আব্দুল হালিম লিখেছেন : একটি প্রশ্ন যারা কবিতা লিখেন তারা কি ব্যকরন মেনে ই কবিতা লিখেন নাকি তাদের কবিতা দেখে কবিতার নিয়ম তৈরী হয় কোনটা। এতো নিয়ম খুজলেতো কবিতার ভাব ই ছুটে পালাবে। তারচেয়ে বরং এটা ভালো না যে যা লিখতে ইচ্ছে হয় লিখে গেলেন, যদি প্রকৃত মেধা আপনার থাকে তাহলে দেখবেন যে ব্যকরনই আপনার কবিতাকে অনুসরন করছে। গ্রামার শিখে কেউ ভাষা শিখতে পারেনা। তেমনি আমার ব্যক্তিগত অভিমত এসব কাব্যিক নিয়ম আত্নস্ত করলে কবির ভাব ছুটে দৌড় দিবে।

যাই হোক আপনার পোষ্টটি অবশ্যই মুল্যবান সেজন্য ধন্যবাদ না দিলে আপনাকে ছোট করা হবে। ধন্যবাদ।


হাসিন ইউসুফ এর ব্লগ লিখেছেন : আপনার কথা একদম ঠিক। তবে অনেকেই এসব কঠিন নিয়ম জানতে চান। তাদের জন্য আমার এই পোস্ট।
আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
| রিপোর্ট করুন

৩০ অগাস্ট ২০১২; রাত ০১:৫৩840362
egypt12 লিখেছেন : কবিতা হতে ছন্দ চলে গেলে ওই কবিতা স্থায়িত্ব হারায় তাই স্থায়ী কবিতা লিখতে ছন্দ ও ব্যকরন আবশ্যক
| রিপোর্ট করুন

৬ 847556 ৩০ অগাস্ট ২০১২; রাত ০১:৫৪
egypt12 লিখেছেন : ধন্যবাদ প্রিয়তে রইল...আমি নিয়ম মেনেই লিখার চেষ্টা করি বাকিটা আল্লাহর মর্জি


৭ 847703 ৩০ অগাস্ট ২০১২; সকাল ১০:৫৬
মো: জুলফিকার আলী লিখেছেন : সুন্দর পোস্ট। প্রিয়তে রাখলাম। ধন্যবাদ।


************ *************


বাংলা কবিতার ছন্দ (প্রাথমিক নিয়ম)
লিখেছেন আহত কোকিল ০৬ মে ২০১১, রাত ১১:০৯
http://www.sonarbangladesh.com/blog/sohojpola/39510

প্রথমে বলে রাখি ছন্দ নিয়ে আমার জানাশুনা খুবই কম । তাই ভুল হলে প্রথমেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। লেখাটা আমি যথা সম্ভব ছোট করেছি । এত অল্পতে ছন্দ শেখা যায়না। ভালো করে শিখতে চাইলে এ বিষয়ে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই! এখানে অত্যন্ত প্রাথমিক বিষয় গুলোই শুধু উল্লেখ করা হল।
এ পোস্ট টা দেয়ার আমার দুটি উদ্দেশ্য আছে-
১। সোনা ব্লগে কবিতা আসর নামে একটা আসর বসে তাতে যারা লিখেন তারা যাতে আমার এ পোস্ট দ্বারা সামান্য হলেও উপকার পান
২। এটা লিখতে লিখতে আমার নিজের যে বিষয়গুলো নিয়ে খটকা আছে তা যেন ক্লিয়ার হয় (এটাই আসল উদ্দেশ্য )
তাহলে শুরু করা যাক।
বাংলা স্বর বা ধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

১. বদ্ধস্বর
২. মুক্তস্বর

বদ্ধস্বর:
যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় জিভ মুখের বাতাসকে আটকে দেয় সেগুলো বদ্ধস্বর .যেমন : দিন,মন,দান ধান, কর, ধর, পাক, ঝাঁক, থাক, ইত্যাদি।

মুক্তস্বর:
যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় কোনো বাধা ছাড়াই বেরিয়ে আসতে পারে তাদের মুক্তস্বর বলে। যেমন: সা,রে, গা, মা, পা, দা ,নি,সা ইত্যাদি

কবিতার প্রাথমিক ছন্দ মূলত তিনটি-
১। স্বরবৃত্ত
২। মাত্রাবৃত্ত এবং
৩। অক্ষরবৃত্ত।

১। স্বরবৃত্তঃ
স্বরবৃত্ত ছন্দ মানুষের সহজাত। এই ছন্দ মানুষের ভেতর আপনাআপনি আসে । কেউ কেউ এটাকে ছড়ার ছন্দ বলে। স্বরবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর এক মাত্রা এবং মুক্তস্বরের মাত্রা ও এক।
একটি ছড়ার লাইন দিয়ে একে বোঝানো যেতে পারে-

আয় ছেলেরা/ আয় মেয়েরা/ ফুল তুলিতে/ যাই
১+৩/১+৩/১+৩/১
ফুলের মালা/ গলায় দিয়ে/ মামার বাড়ি/ যাই
২+২/২+২/২+২/১
এখানে বদ্ধস্বর ও মুক্তস্বরের মাত্রা একমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্থাত মাত্রাবিন্যাস দাঁড়িয়েছে এমন-
৪/৪/৪/১
৪/৪/৪/১

২।মাত্রাবৃত্তঃ
মাত্রাবৃত্তের ছন্দে বদ্ধস্বর দু’মাত্রা ।কিন্তু স্বরবৃত্তের মতোই মুক্তস্বরের মাত্রা এক।

কবি বন্ধুরা/ হতাশ হইয়া/ মোর লেখা পড়ে/ শ্বাস ফেলে

বলে কেজো ক্রমে/ হচ্ছে অকেজো/ পলি টিক্সের/ পাশ ঠেলে।
(আমার কৈফিয়ত/ কাজী নজরুল ইসলাম)
কবিতাটির কাঠামো:
৬ + ৬ + ৬ + ৪
অথবা
এইখানে-- তোর/ দাদীর --কবর
২+১+১--২/ ১+২--১+২=৬+৬
ডালিম --গাছের/ তলে
১+২--১+২/ ১+১=৬+২
তিরিশ বছর/ ভিজায়ে-- রেখেছি
১+২--১+২/ ১+১+১--১+১+১=৬+৬
দুই --নয়নের/ জলে
২--১+১+২/ ১+১=৬+২
অর্থাত মাত্রাবিন্যাসটা এ রকম--৬+৬, ৬+২, ৬+৬, ৬+২।

অথবা
আমাদের/ ছোট নদী/ চলে বাঁকে/ বাঁকে
১+১+২/১+১--১+১/১+১--১+১/১+১=৪+৪+৪+২
বৈশাখ/ মাসে তার/ হাঁটু জল/ থাকে
২+২/১+১--২/১+১--২/১+১=৪+৪+৪+২
অর্থাত মাত্রাবিন্যাসটা এ রকম--৪+৪+৪+২, ৪+৪+৪+২।

৩। অক্ষরবৃত্তঃ
তৃতীয় ছন্দ হলো অক্ষরবৃত্ত। তবে বোঝার দিক দিয়ে এই ছন্দ সবচেয়ে সোজা। শুধুমাত্র অক্ষর গুণে গুণে এই ছন্দের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। একক অক্ষর বা সংযুক্ত অক্ষরকে ১ মাত্রা ধরা হয়।তবে কখনো কখনো সংযুক্ত অক্ষরকে ২ মাত্রাও ধরা হয়। সেটা নির্ভর করবে কবির লেখার বানান-রীতির উপর।
উদাহরণঃ
জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতায়-
অর্থ নয়, কীর্তি নয়,/ সচছ্লতা নয়-
২+২+২+২/ ৪+২
আরো / এক বিপন্ন বিস্ময়
২/ ২+৩+৩
আমাদের অন্তর্গত / রক্তের ভিতরে
৪+৪/ ৩+৩
খেলা করে
২+২
অর্থাত ছন্দবিন্যাসটা এ রকম- ৮/৬, ২/৮, ৮/৬, ৪

বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে কবিতাগুলোতো ৮ মাত্রা মিলানোর প্রচেষ্টা রয়েছে সব সময়। এটাই হলো পয়ারের রীতি। যেখানে ৮ মাত্রা মেলেনি সেখানে কিন্তু জোড় মাত্রা মেলাতে হবে, কখনোই বিজোড় নয় । এটাই হলো অক্ষরবৃত্তের প্রাথমিক নিয়ম।
এবার সংক্ষেপে বলিঃ
১। স্বরবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর ও মুক্তস্বর দুটোতেই এক মাত্রা গুনবেন।
২। মাত্রাবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর গুনবেন ২ মাত্রা আর মুক্তস্বর গুনবেন ১ মাত্রা।
৩।অক্ষরবৃত্ত ছন্দে একক অক্ষর বা সংযুক্ত অক্ষরকে ১ মাত্রা গুনে গুনে মাত্রা বিন্যাস করবেন।

উফ
আপনারা বুঝেছেন কিনা জানিনা তবে আমি বুঝিনি

বিঃদ্রঃ কবিতার প্রতিটি লাইনে সমমাত্রার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ হলো পর্ব। পঙ্ক্তি শেষের পর্বাংশকে অপূর্ণ পর্ব বলা হয় যার মাত্রা সংখ্যা পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে সব সময় কম। এ ধরনের পর্বাংশ লাইনের শুরুতে থাকলে সেটাকে উপপর্ব বলে।


নেটপোকা লিখেছেন : বাক-স্বাধীনতা আর মুক্ত তথ্য-মাধ্যমের এই যুগে ব্লগে ব্লগে অসংখ্য অকবির 'কবিতা'র ছড়াছড়ি দেখে জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত উক্তি মনে পড়ে বার বার:

সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি
ভাল জিনিস তুলে ধরেছেন। অনেক ধন্যবাদ।

আহত কোকিল লিখেছেন : আমার ব্লগ-বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভ কামনা।ভাল থাকবেন ।

আহত কোকিল লিখেছেন : আমার ব্লগ-বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভ কামনা।ভাল থাকবেন ।
| রিপোর্ট করুন

৭ 256536 ০৭ মে ২০১১; সকাল ০৯:৫৬
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : ধন্যবাদ। দারুন একটি পোষ্ট। শিক্ষণীয়। এটি সবার জন্য বাড়তি সুবিধা। কেউ মানবে কি মানবে না এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আলোচ্য বিষয়টি গুরুত্বপুর্ন। যারা কবিতা লিখে ও লিখতে চায়, তাদের জন্য অতীব জরুরী।


৯ 269693 ১৯ মে ২০১১; সকাল ০৫:১৩
আকাশ নির্ঝর লিখেছেন : আহা কতো আশা নিয়ে এই পোস্ট টা পড়তে ঢুক্লাম! ভা্বলাম, আমি যা চাচ্ছি তা পেয়ে গেছি! কিন্তু হায় আগা আর মাথা কিছুই বুঝলাম না! সা্মনা সা্মনি ক্লাস করলে হয়তো কিছুটা ধরতে পারতাম! কিন্তু তার স
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১২
295407
মোবারক লিখেছেন : আরেকটু ছোট করে লিখলে হতো না। বিশাল লেখা। মনে থাকে কিনা সন্দেহ আছে। ধন্যবাদ।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫
295433
আবু সাইফ লিখেছেন : আমি মূল লেখাদুটি মন্তব্যসহ কপি-পেস্ট করেছি, আপনি সেভ করে রেখে দিন, সময় সুযোগমত বারবার পড়বেন, কাজে লাগবে!!

এ বিষয়ে আরো কয়েকটা ভালো বই আছে!

আসলে ঐ গানটার কথা স্মরণ করুন-

যে কোন কাজ করো না ভাই
যে কোন কাজ করো-
তা যেন হয় সবার চেয়ে
সবচেয়ে সুন্দর..
....
....
হোকনা সেটা কাপড় কাচা,
বাজার করা-ই ধর...
তা যেন হয় সবার চেয়ে
সবচেয়ে সুন্দর..
....
আর তা করতে হলে অবশ্যই ঐ বিষয়ে মৌলিক জ্ঞানার্জন করতে হয়!
দোয়া করি- অনেক দূর এগিয়ে যান...
355759
৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২১
জিসান গাজি লিখেছেন : লিখেন নিজের কথা আপন ভাবনায় ,অনেক ভাল লিখনী। ধন্যবাদ ভাইয়া। ​
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১২:১২
295408
মোবারক লিখেছেন : আপনার মন্তব্য পেয়ে আমি আনন্দিত ধন্যবাদ ভাইয়া।
355777
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০১:৩০
দ্য স্লেভ লিখেছেন : সত্য বিষয় দু:খের বিসয় তুলে ধরেছেন।
০২ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৫৫
295628
মোবারক লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File