এত মানুষ থাকতে তোমার কি দরকার জাতির কথা ভেবে নিজের ক্যারিয়ার বরবাদ করার?

লিখেছেন লিখেছেন অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:৩২:২৮ রাত

জীবনের মানে

এত মানুষ থাকতে তোমার কি দরকার জাতির কথা ভেবে নিজের ক্যারিয়ার বরবাদ করার? দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছ এবার ভাল করে পড়াশুনা কর যাতে........ যাতে কি? ভাল চাকরি পাও। চাকরি পেলে কি হবে? সম্মানজনক বেতন পাবে, তারপর ঘর-সংসার নিয়ে সুখ শান্তি করবে। কত বছর? ভাল চাকরি পেতে পেতে বয়স মোটামুটি ৩২-৩৫ হয়ে যাবে, তারপর আর বেশি হলে ২০-২৫ বছর (কেউ কেউ অবশ্য চাকরিতে যোগদান করার আগেই, অথবা ছাত্রত্ব থাকতেই পরপারে পাড়ি জমায়) বাচব। তারপর কি হবে? মাটি । তাহলে এত কষ্ট করে ক্যারিয়ারের পিছনে ছোটার ফলাফল হল মাটি, তাই না? তাই যদি হয় তাহলে গরু ছাগলের সাথে মানুষের পার্থক্য থাকল কোথায়? তারাও খায় দায় ঘুমায়, বংশ বৃদ্ধি করে তারপর তার জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গাফেল থাকে। এক সময় হয়ত মারা যায় অথবা মানুষের পেটে, সর্বশেষ? মাটি। তাহলে মানুষ আর পশুতে পার্থক্য থাকল কোথায়? তাই তো এভাবে তো কখনো ভাবিনি! তাহলে কি করা উচিৎ? অবশ্যই কিছু করণীয় আছে। দিন-রাতের কর্মব্যস্ততার মধ্যে ১০ মিনিটের জন্য একটু ভেবে দেখরে বোকা, তোকে কে এত সুন্দর আকৃতি দিয়ে , বিবেক দিয়ে দুনিয়াতে কি জন্য পাঠিয়েছে। তাহলে নবী-রাসুলের দরকার হবে না নিজেই জানতে পারবি আসলে সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ তায়ালার মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য। আপনার দাদা, তার পূর্ব বংশধর, এভাবে কতজনের নাম বলতে পারবেন আপনি? বড়জোর দু’তিন জন কেউ কেউ আবার তাও পারেনা। তাহলে ফলাফল কি দাঁড়াল? তারা এমন কিছু করে যান নি যার কারণে অনায়াসে তাদের নাম মনে রাখা যায়। অথচ আপনি ইতিহাস পড়ে এখান থেকে হাজার হাজার বছর আগের রাজা-বাদশাহদের নাম ও কাম সম্পর্কে জানেন বা জানার চেষ্টা করেন কারণ তারা ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছে আর আপনি আমি সেই ইতিহাস পড়ছি। আমরাও একদিন হারিয়ে যাব কিন্তু যদি ইতিহাস সৃষ্টি করার মত কিছু না করে যাই তাহলে আমাদের উত্তরসূরিরাও আমাদের কে স্মরণ করবে না। অন্তত এমন কিছু করি যাতে কমপক্ষে আপনার-আমার জন্য হাত তুলে দোয়া করার মত কিছু মানুষ তৈরি হয়। আপনি দাওয়াতী কাজের স্পৃহা বা তাড়না অনুভব করেন না, অথবা সংশয়-দোলাচলে ভোগেন মানুষকে দাওয়াত দিবেন কি না, অথবা কে কি বলবে, আমি কেন ? অথবা নামাজ-রোজা করেই তো জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা ১০০ ভাগ। ২০ লাখ ৫০ লাখ নেকির দোয়া তো আছেই। তাহলে কি দরকার নিজের আরামের জীবনে জেল,জুলুম, মামলা, পঙ্গুত্ব, বাস্তুহারা হওয়ার? সুন্দরী স্ত্রী, ফসলী জমি, লাভজনক ব্যবসা, চক্ষু শীতল কারী সন্তান-সন্ততির মায়া ছেড়ে কাঁটা বিছানো পথে হাঁটবেন কেন? একটু চিন্তা করে দেখুন। একটি কথা স্মরণ রাখবেন ! মহানবী সা: এর চেয়ে বেশি কেউ ইসলাম বুঝেন নি, সুতরাং তিনি স্বয়ং যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছেন, সারা শরীরে অসংখ্য কাটা চিহ্ন নিয়ে এবং সর্বশেষ বিষযুক্ত খাবার ও খেয়ে যেতে হয়েছে। আবুবকর রা: ছাড়া আর তিন খলিফা প্রত্যেকেই নৃশংসভাবে শহীদ হয়েছেন আততায়ীর হাতে। আর আপনি এত বেশি বুঝেন আর আবেদ হয়ে গেছেন যে আল্লাহ আপনাকে কাশফের মাধ্যমে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন যে তুই পীর হয়ে বোস, গা বাঁচানো দাওয়াতী কাজ কর যাতে হক আর বাতিলের সুন্দর আপোষ হয়ে যায়, আর মার খাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকেনা। ইসলাম তো শান্তির ধর্ম তাই না? কোর আন আর হাদিসের উদ্ধৃতি দিলাম না কারণ আমি আপনাদের মত বড় আল্লামা নই। সর্বশেষ কথা হল ব্যতিক্রম হওয়ার চেষ্টা করুন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৩৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

270089
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:৫৭
সাদাচোখে লিখেছেন : মাশাআল্লাহ্‌। চমৎকার লিখেছেন। বোল্ড, লাউড এন্ড ক্লিয়ার। কিছুদিন আগে আনোয়ার আল আওলাকির একটি ভিডিও দেখে পুরো রাত ঘুমাতে পারিনি - নিজেকে বড় বেশী ফ্রেম এ বন্দী মনে হয়েছে - আজকে আপনার লিখাটা ও অনুরূপ চিন্তার ভিড় জমাবে।

আল্লাহ আমাদের শক্তি দিক বুঝার ও তা বুঝটা কার্যে পরিনত করার।

ধন্যবাদ এমন একটি লিখা উপহার দেবার জন্য।
270162
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০১
অয়েজ কুরুনী আল বিরুনী লিখেছেন : আপনাকেও শুকরিয়া জানাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File