স্বপ্ন: প্রবাস (সাত)Rose প্রতি পদে বিড়ম্বনার শিকার

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৩ মার্চ, ২০১৪, ০৫:২৫:৫৭ বিকাল



অনেক কান্নাকাটি আর সকলের কাছ থেকে বিদায়ের পর এক বুক হাহাকার নিয়ে একজন প্রবাস যাত্রী যাত্রা শুরু করেন। সেই যাত্রা কালে এবং প্রবাস যাওয়ার পর নানাবিধ বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় একজন প্রবাসীকে।

হরতাল-ধর্মঘট-অবরোধের বিড়ম্বনা: আমরা যারা গ্রাম থেকে বা মফস্বল শহর থেকে প্রবাসের উদ্দেশ্যে বের হই তাদের অনেকেই নানান দলের রাজনৈতিক কর্মসুচীর কারনে বিড়ম্বনার শিকার হন। আপনাকে আমাকে এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য একটি মাইক্রো ভাড়া করতে হয়। যেদিন আপনি বাড়ি থেকে বের হবেন সেদিন যদি কোন রাজনৈতিক দলের হরতাল, ধর্মঘট বা অবরোধ থাকে তাহলে আপনি আর ঠিকমত পৌছতে পারছেন না। রাস্তায় নানান যায়গায় আপনাকে আটকিয়ে দেয়া হবে। কোন কোন যায়গা থেকে আপনি শত অনুনয় বিনয় করে তার পর ছাড়া পাবেন। আবার কোথাও কোথাও আপনি যারা আটকালো তাদের হাতে কিছু একটা দিয়ে তার পর যেতে পারবেন। আর যদি ড্রাইভার শ্রমিক ধর্মঘট হয় তাহলে আপনি আরো বেশি বিড়ম্বনার শিকার হবেন। রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা কিছুটা সহনশীল হলেও এক্ষেত্রে শ্রমিকরা কোন ছাড় দিতে যেন রাজি হয়না।

এই কারনে অনেক প্রবাসীকে বাড়ি থেকে দুই তিন দিন আগে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্টের কাছাকাছি চলে আসতে হয়। তাছাড়া যানজটের মত একটি সমস্যা হামেশা লেগে আছে।

যার কারনে অনেককেই দেখেছি ঠিকমত এয়ারপোর্ট পৌছতে না পেরে ফ্লাইট মিছ করেছেন।

ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা : এটা একটা উদ্ভট ঝামেলা। আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের সামান্য কিছু হেরফের হলেই আপনাকে হেনস্তা করেই ছাড়বে। সেটা কিন্তু আপনার ডকুমেন্টসের সমস্যার জন্য নয়, আপনার পকেট থেকে কিছু হাতিয়ে নেয়ার জন্য। বাক বিতন্ডায় জড়ালে আপনাকে লাইনের এক পাশে দাড় করিয়ে রাখবে,যা আপনার জন্য খুবই বিরক্তিকর। অবশেষে আপনি কিছু একটা ধরিয়ে দিলেই পার পেয়ে গেলেন। অনেকেই এই উদ্ভট ঝামেলা থেকে বাচার জন্য কিছু ভাংতি পয়সা পকেটে আগে থেকেই রেখে দেন।

শুধু কি এখানেই শেষ। ইমিগ্রেশন পুলিশ গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করেনা। কিছুদিন পুর্বে ইউকে'র একজন টিভি প্রেজেন্টরকে কিভাবে মারধর করলো ইমিগ্রেশন পুলিশ যা পত্রপত্রিকায় প্রকাশের পর দুষি পুলিশদের শাস্হি পর্যন্ত হয়। একজন সেলিব্রেটিকে মারধর করার কারনে এই খবরটা পত্রিকায় এসেছে এবং তিনি ইউকের বাসিন্ধা হওয়ায় পুলিশের বিচার হলো। কিন্তু এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে যা পত্রিকায় আসেনা। কেননা সবাইতো আর সেলিব্রেটি নয়,নয় ইউরোপ আমেরিকার বাসিন্ধা।

ট্রানজিট বিড়ম্বনা : যারা ইউরোপ আমেরিকায় বা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে যান তাদেরকে ট্রানজিটেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। হা, যদি আপনার পাসপোর্ট হয় বাংলাদেশী তবেই।বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখার পরই যেন তাদের কান খাড়া হয়ে যায়। আপনার পাসপোর্ট সহ যাবতীয় ডকুমেন্ট একেবারে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখবে। অসহ্য লাগবে যখন দেখবেন আপনার পাশ দিয়ে অন্য যাত্রিরা চলে যাচ্ছে আর আপনাকে দাড় করিয়ে ভালোমত পরীক্ষা-নিরিক্ষা করছে।

বিমানেও দেখবেন আপনার সাথে দুই রকম ব্যবহার করা হচ্ছে। যে দেশের বিমানেই আসেন না কেন। এই ব্যবহারটা অবশ্য আরব দেশের প্রবাসীরা বুঝবেন না।

কিভাবে ?

যেমন ধরুন আপনি কাতার এয়ারওয়েজে করে ফ্রান্স আসছেন। এখন বাংলাদেশ থেকে কাতার পর্যন্ত আপনি এক ধরনের ব্যবহার পাবেন আর কাতার থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত আপনি অন্য রকম ব্যবহার পাবেন। খাওয়া দাওয়ার মান সহ আপনি সবকিছুতেই এই পার্থক্য দেখতে পাবেন। অবশ্য এই জন্য আমরাও অনেকটা দায়ি। আমরা বাংলাদেশী একজন যাত্রী আর অন্য দেশের একজন যাত্রীর ব্যবহারেও থাকে পার্থক্য।

চলবে.............

Rose Rose Rose

বিষয়: বিবিধ

১৬২০ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

196658
২৩ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : দুবাই এয়ারপোর্টে অনেক যতেষ্ট ভালো লেগেছিল কিন্তু যখন ঢাকা এয়ারপোর্টে গিয়ে নামলাম মনে হয়েছে তাদের কাজের ছেলে এসেছি ,,,আম্মা বলেছে গালি দিতে নেই না হলে এখন লম্বা একটা দিতাম
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৮
146760
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : গালি দিয়ে লাভ নাই ভাই। আসলে আমরা জাতিগতভাবে এমনি।
196669
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : চলতে থাকুক..........প্রবাসীর বড় অসহায়। আমার পাশের বাসার ভাবীর হাজবেন্ড কয়েকদিন আগে সৌদী আরবে মারা যান.....লাশটি দেশে পৌছতে আরো অনেক দিন লাগবে.এই পরিবারের সদস্যদের অবস্থা কিরকম হতে পারে একবার ভাবুন তো?
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৯
146762
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : প্রবাসীদের ব্যাপারে আরব দেশের ভাইদের অবস্হা খুব একটা জানিনা।যদি শেয়ার করতেন তাহলে পরবর্তি পর্বে কাজে লাগানো যেত।
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৬
146768
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : আরব দেশে বাংলাদেশী প্রবাসীদের সংখ্যায় বেশী। তাদের মাত্র কয়েক পাসসেন্ট ভাল বেতনের জব করে বাকীদের অবস্থা খবু বেশী ভাল নয়।
196681
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩০
শেখের পোলা লিখেছেন : হাঁ ঠিকই৷ তফাৎগুলো বেশ ভাল ভাবেই পরিষ্কার হচ্ছে৷ ধন্যবাদ৷
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
146767
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ধন্যবাদ। এই তফাৎ গুলোর জন্য আমরাও দায়ি।
196699
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২১
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : কাতার এয়ারওয়েজে ভ্রমন করে যে অভিজ্ঞতা, আর আলোকে বলতে হবে যেঃ যদি বাংলাদেশ বিমানের সকল কেবিনক্রু বাংলাভাষীর পরিবর্তে অন্য কোন ভাষাভাষী করা হয়, তাহলে বাংলাদেশী পেসেঞ্জারের ডিমান্ড কমে যাবে। তখন বাংলাদেশ বিমানকে ভাল লাগতে শুরু করবে।
২৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:১১
146809
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আবার অনেকে হইহুল্লুড় ও নানা ধরনের আচরন করতেও দেখেছি।
196700
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : আমি কাতার এয়ার ওয়েজে অনেক বাংলাদেশীকে দেখেছি যাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে চিকেন খাবেন না ফিস খাবেন না ডায়েট খাবার? উনি চিকেন বলেছেন। কিন্তু তাকে ভূলক্রমে ডায়েট খাবার দেয়ার পর তিনি কোন প্রতিবাদ, ডিমান্ড বা প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং অত্যন্ত সন্তুষ্ঠ চিত্তে খেয়েছেন।
২৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:১২
146810
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আবার অনেকে হইহুল্লুড় ও নানা ধরনের আচরন করতেও দেখেছি।
196703
২৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : গতবারের সফরটা ছিল এমিরাতে। বেচারী আমাকে জিজ্ঞেস করলেন চিকেন না ফিস। আমি বললাম ফিস। উনি আমাকে চিকেন দিলেন। আমি ফিস না পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম-এটাকে কি এমিরাতের ভাষায় ফিস বলে। বেচারী তাড়াতাড়ি একটা ফিসের ব্যবস্থা করলেন এবং চিকেনটা ফিরিয়ে নিতে চাইলেন। আমি বললামঃ আমি তো বলিনি যে, আমি চিকেন খাবোনা। এখানে দুইটাই খাবারের সুযোগ নাই। বেচারী বললেনঃ ওকে থ্যান্ক ইউ।
196733
২৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৪৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ এর সাথে শুধু বোধহয় দাদাদের দেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ এর তুলনা চলে। অভদ্রতাতে এরা তাদের অধিকার বলে মনে করে। একবার কলকাতায় আমার এক সহযাত্রি ভয় পেয়ে ইমিগ্রেশনকে ১০০ ডলার দিয়ে দেয়। আমি পরে তাকে বলি যে সে দেরি করাতেই এই সুযোগ পেয়েছে। ।অথচ যে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিক ধরার জন্য খুব কড়াকড়ি করা হয় সেখানেও অতি ভদ্র ব্যবহার পেয়েছি। কারো সমস্যা থাকলে তারা তাকে একটি টোকেন দিয়ে এয়ার পোর্ট এর ভিতরে বসার সুযোগ দেয়।
২৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৫১
146817
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
196845
২৩ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:৫৮
নানা ভাই লিখেছেন : ভালো লাগলো।
ফেসবুকে একটা পেইজ আছে, https://www.facebook.com/pages/Probashi/372804382850180
চাইলে এইখানেও লিখতে পারেন।
২৪ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
147237
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার ছবিটা পরিবর্তন করা দরকার মনে করছি নানা ভাই।
196951
২৪ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩৪
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ইমিগ্রেসন বিড়ম্বনা নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। আপনার সব কিছু ঠিক থাক আর না থাক বাংলাদেশের ইমিগ্রেসন অফিসার আপনার সাথে কোন না কোন বিষয় নিয়ে ঝামেলা পাকাবেই।
২৪ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
147238
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : হু। এরকমইতো মনে হলো।Good Luck
১০
197375
২৫ মার্চ ২০১৪ রাত ১২:৩৮
দ্য স্লেভ লিখেছেন : যদিও আমি কখনও বিড়ম্বনায় পড়িনি,তবু্ও এটা প্রচুর শুনেছি এবং এটা জগন্ন লেগেছে। এটার প্রতিবার হওয়া উচিত এবং আমাদের চরিত্রের পরিবর্তন হওয়া জরুরী
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:১০
147980
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার কপাল ভালো বলে বেচে গেছেন।
১১
197394
২৫ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:১১
জোবাইর চৌধুরী লিখেছেন : সময়োপযুগী, ভালো লাগল। ধন্যবাদ।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:১০
147981
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনাকেও।
১২
197484
২৫ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : এটা একটা উদ্ভট ঝামেলা। আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের সামান্য কিছু হেরফের হলেই আপনাকে হেনস্তা করেই ছাড়বে। সেটা কিন্তু আপনার ডকুমেন্টসের সমস্যার জন্য নয়, আপনার পকেট থেকে কিছু হাতিয়ে নেয়ার জন্য। বাক বিতন্ডায় জড়ালে আপনাকে লাইনের এক পাশে দাড় করিয়ে রাখবে,যা আপনার জন্য খুবই বিরক্তিকর। অবশেষে আপনি কিছু একটা ধরিয়ে দিলেই পার পেয়ে গেলেন। অনেকেই এই উদ্ভট ঝামেলা থেকে বাচার জন্য কিছু ভাংতি পয়সা পকেটে আগে থেকেই রেখে দেন।

নিরেট সত্যি কথাটা বলেছেন। এ হয়রানী ভুক্তভোগীরা ছাড়া আর কেউ জানেনা। ধন্যবাদ প্রবাসীদের হয়ে কথাগুলো তুলে ধরার জন্য।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:১৬
147984
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File