ইসলামী শিক্ষানীতিঃ সামাজিক অনৈতিকতা প্রতিরোধের একমাত্র ব্যবস্থা

লিখেছেন লিখেছেন ইহসান আব্দুল্লাহ ১২ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:৩২:৫২ সন্ধ্যা



ভূমিকা

ব্রিটিশ শাসনের সুত্র থেকেই ইসলামী শিক্ষার নাম নিশানা জাতীয় পর্যায় থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। ব্রিটিশদের প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলমানরা গ্রহণ না করলে একদিকে যেমন জাতীয় জীবনে মুসলমানদের মধ্যে মুর্খতা জেঁকে বসে অন্য দিকে ব্রিটিশদের পরিবর্তিত ইসলামী শিক্ষায় অনিহা প্রকাশ করায় মুসলমানরা সকল প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে দূরে যেতে থাকে। এমতাবস্থায় কিছু ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠান ইসলামী শিক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট হলেও তা পরিপুর্ন না হওয়াই অন্যদের তুলনায় মুসলমানরা পশ্চাৎ ধাবন করতে থাকে। ফলস্বরূপ জাগতিক উপায় উপকরন ও ইসলামী নৈতিকতা হারিয়ে উপমহাদেশে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পুজি হারিয়ে ফেলে।

আর বর্তমান বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে যে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে তার দরুন মুসলমানরা তাদের জাতি সত্ত্বা হারিয়ে নৈতিক অধঃপতনের দিকে এগোচ্ছে। সমাজ এক সঙ্কটাপন্ন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। দেশের আপাদমস্তক সার্থপর, দুর্নীতিবাজ, লোলুপ নেতৃত্ব রাজ করছে। আজকের এই শিক্ষা ব্যবস্থা সহযোগীর স্থলে নিজেকে প্রতিযোগী হতে শিখাচ্ছে যার দরুন জাতীয় জীবনে প্রতিহিংসার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং অসৎ পন্থা অবলম্বন করে হলেও উদ্দেশ্য হাসিলের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।

সুতারাং জাতীয় জীবনের এই জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে দেশ ও জাতির উত্তরণের জন্য শুধুমাত্র একটি আদর্শ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় দুইশত পঞ্চাশ বছরের গ্লানির ইতিহাসকে পেছনে ফেলে একটি আদর্শ ইসলামী সমাজ উপহারের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশে শান্তির পতাকা উড্ডয়ন করতে পারে।

শিক্ষার পারিভাষিক অর্থ

শিক্ষা দৈহিক এবং আধ্যাত্মিকতার উন্নতির মাধ্যমে সৎ গুনের বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধন করে। শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে প্লেটো বলেন “শিক্ষা যতদূর সম্ভভ দৈহিক ও মানসিক নান্দনিকতা ও উৎকর্ষ সাধন করে”। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের চক্ষুকে বিস্ফোরিত করে যা মানুষের দৈহিক ও মানুষিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রন করে এবং মেধা ও মনন শক্তি বৃদ্ধি ও তীক্ষ্ণ বিচার বুদ্ধির মাধ্যমে দায়িত্বানুভুতি জার্গত করে। শিক্ষা একটি পুর্নজীবনের প্রশিক্ষণ স্বরূপ, যা যেকোন কাজকে সুচারু রুপে সম্পাদন করতে প্রয়াস যোগায়। শিক্ষা মানুষকে সার্বিক নিয়ম নীতি শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ সচেতন হিসেবে গড়ে তোলে যা মানুষের সার্বিক জীবনের পুনর্বিন্যাস সাধন করে সুস্থ ও সুন্দর জীবন অতিবাহিত করার প্রয়াস যোগায়। শিক্ষা এমন একটি বস্তু যা ব্যাক্তি ও পরিবেশের মাঝে সেতু বন্ধন তৈরি করে যা প্রথমে ব্যক্তি নিজেকে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে সমাজকে সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে সমাজ জীবনে পরিবর্তন সাধন করে।



ইসালামী শিক্ষা

ইসলাম এমন এক অনন্য ধর্ম যা মানব জীবনের সমগ্র বিষয় সমুহের সমন্বয় করে এবং মুসলমানগণ আল্লাহ্‌ প্রদত্ব পবিত্র আলকোরআন ও রাসুল (সাঃ) নির্দেশিত পন্থা থেকে তাদের দিক নির্দেশনা পেয়ে থাকে। মুসলমানরা প্রত্যেকটি কাজ করে থাকে নিছক আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির আশায়, জান্নাতের আশায়। সুতারাং দুনিয়াতে এমন কোন ব্যবস্থা মুসলমানদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয় যা ইসলামের বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যার মাধ্যমে আখেরাতের নাজাতের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাহোক ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক রাজনৈতিক কিংবা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা। আল্লাহ্‌তায়ালার বিধান শিক্ষা দিতে তিনি যুগে যুগে বহু নবী রাসুল দুনিয়াই পাঠিয়েছিলেন। শেষ নবী, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেন “নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলেন যখন তিনি তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকে দাঁড় করালেন একজন রসূল যিনি তাঁর নির্দেশাবলী তাদের কাছে পাঠ করেন ও তাদের পরিশোধিত করেন ও তাদের কিতাব ও জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেন।” সুতারাং মুসলমানদের জন্য প্রয়োজন এমন একটি শিক্ষা নীতি যা আল্লাহ্‌র বিধান শিক্ষার দ্বারা ইসলামী নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ, জাগতিক উপায় অপকরন অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি ও আখেরাতে সাফল্য সাফল্য অর্জন।

ইসলামী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মানুষের শারীরিক ও মানুষিক বিকাশের জন্য শিক্ষা অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। শুধু মাত্র ব্যাক্তিগত প্রাপ্যতা নয় সামাজিক দিক থেকে ইসলামী শিক্ষাকে অবহেলা করার বিন্দু মাত্র সুযোগ নাই। মানুষকে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে হয় বিধায় শিশু জন্মের পর থেকে এই সমাজেরই শিক্ষানবীশে পরিনত হয়। একটি আদর্শ শিক্ষিত সমাজ ব্যবস্থা যেমন একজন মানুষকে আদর্শিক করে তোলে তেমনি একজন আদর্শিক শিক্ষিত ব্যক্তি আদর্শ সমাজ বিনির্মানে মুখ্যভূমিকা রাখে। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। এই জরাজীর্ণ, ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন একটি আদর্শিক শিক্ষা ব্যবস্থা। সুতারাং আল্লাহ্‌ প্রদত্ব এই ধরায় আদর্শিক শিক্ষার বিকল্প কিছু হতে পারে না।

ইসলামী শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ইসলামী শিক্ষার প্রধানতম উদ্দেশ্য হচ্ছে পবিত্রতা ও শুদ্ধতা অর্জন এবং আল্লাহতায়ালা সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন। ইমাম গাযযালি (র) বলেছেন,

“ওহে যুবক, নিদ্রাহীন বহু রজনী জ্ঞানার্জনের আশায় বইয়ের পাতা আত্বস্ত করেছ। কিন্তু আমি জানি না তোমার লক্ষ্যটা কি? যদি তা হয় বিশ্বকে জেনে, এর উচ্ছিষ্ট আহরণ করে নিছক সম্মানের আশায় তা অন্যের পুর্বে প্রদর্শন। তাহলে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে সীমাহীন দুর্দশা। আর তোমার লক্ষ্য যদি হয় রাসুল (সাঃ) এর সুন্নত সমূহ প্রাণবন্ত করা, আদর্শকে পরিশুদ্ধ করা, হারাম পরিহার করা তাহলে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে উত্তম পুরস্কার।”
(আইয়ুহাল ওয়ালাদঃ ৯৪)

ইসলামী শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যক্তির ইসলামী চিন্তা শক্তির সর্বোৎকৃষ্ট বিকাশ ও আল্লাহ্‌র হুকুমের সর্বচ্চো অনুধাবন ও অনুসরণ, কঠোর পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে জ্ঞানার্জন ও অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি।

ইসলামী শিক্ষার কাঠামোঃ বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

সমসাময়িক বাংলাদেশের নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি দ্বারা আদৌ ইসলামী অনুসৃতির অনুধাবন সম্ভব নয়। এজন্য ভারসাম্যপুর্ন এমন এক ইসলামী শিক্ষা কাঠামো প্রয়োজন যাতে থাকবে ইসলাম ও বিজ্ঞানের এক চমকপ্রদ সংমিশ্রণ। ইহকাল ও পরকাল প্রাপ্তির এক অভিনব সহজ পন্থা।

জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষাকে সহজে পরিবেশন ও সুচারুরূপে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে দুইটি মন্ত্রনালয় যথাক্রমে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিন্যাস করা যেতে পারে। যেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক নিম্ন-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা।

উপরে উল্লেখিত কাঠামোকে নিম্নোক্ত ভাবে বিন্যাস করা যাইতে পারে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রাক-প্রাথমিক

শিশুর বয়সের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম বছরগুলোতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামুলক। এজন্য তিন বছর মেয়াদী এই কোর্সের অন্তে বিশেষ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা থাকবে। প্রতি ছয় মাসে অর্ধ বছরের সিলেবাস থাকবে এবং তিন বছরের ছয়টি অর্ধ বছরের নাম হবে যথাক্রমে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত। প্রত্যেক অর্ধ বছরে পৃথক পৃথক ফলাফল সংরক্ষিত হবে এবং প্রাক-প্রাথমিক অধ্যয়ন শেষে তা গুচ্ছ আকারে প্রদান করা হবে। গ্রীষ্ম কোর্সের জন্য ফলাফল দুটি গ্রেড বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ, বর্ষার জন্য আষাঢ় ও শ্রাবণ, শরৎ এর জন্য ভাদ্র ও আশ্বিন, হেমেন্তের জন্য কার্তিক ও অগ্রাহায়ন, শীতের জন্য পৌষ ও মাঘ এবং বসন্তের জন্য ফাল্গুন ও চৈত্রে বিভক্ত থাকবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে দ্বিতীয় গ্রেডকে অগ্রাধিকার প্রদান করে ৪ নম্বর এবং প্রথম গ্রেডকে ২ নম্বর প্রদান করে। এতে ছয়টি কোর্সের শেষে সর্বোচ্চ ২৪ প্রাপ্তকে পারফেক্ট, ২০ প্রাপ্তকে কর্মঠ, ১৬ প্রাপ্তকে পরিশ্রমী এবং ১২ প্রাপ্তকে অলস উপাধি প্রদান করা হবে। এখানে ছন্দে ছন্দে শিক্ষা, ছবি দেখে শিক্ষা, খেলনা দ্বারা শিক্ষা,ইংরেজি শিক্ষা ও কবিতা মুখস্ত করণ, আরবি হরফ শিক্ষা ও সূরা মুখস্ত করণ, ইসলামের আদব-কায়দা শিখন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

প্রাথমিক

শিশুর বয়সের অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ, ও দ্বাদশ বছরগুলোতে পাঁচ বছরের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকবে। প্রাথমিক শিক্ষার শেষে অনুরুপ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা থাকবে। তবে তা প্রচলিত গ্রেডিং পদ্ধতি অনুযায়ী হবে। যেখানে সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ ৪ এবং প্রত্যেক বছরের পৃথক পৃথক ফলাফলের গড় নিয়ে তা প্রকাশিত করা হবে। কায়েদা মুখস্ত সহ হাদিস কোরআনের মৌলিক জ্ঞান সমূহ ও ইসলামের পাঁচ রুকন শিক্ষা দেয়া হবে। আরবি ও ইংরেজি গ্রামারের মৌলিক বিষয়গুলো শিক্ষা দেয়া হবে। এছাড়া বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানকে ধর্মের সাথে তুলনা করে পড়ানো হবে এবং এখানে সর্বৎকৃষ্ট বিধানটা অনুধাবন করার ব্যবস্থা করা হবে। অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে।

নিম্ন মাধ্যমিক

দুই বছরের জন্য নির্ধারিত নিম্ন-মাধ্যমিক কোর্সে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হিফজুল কোরআন বাধ্যতামূলক। এছাড়াও সাধারন বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞানের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও বিশ্ব ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত আলোচনা থাকবে। অবশ্যই হিফজুল কোরআনের জন্য আলদা সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা থাকবে।

মাধ্যমিক

মাধ্যমিক শিক্ষা দুইটি স্তরে বিভক্ত থাকবে। প্রথম স্তর একবছরের এবং দ্বিতীয় স্তর দুই বছরের জন্য। প্রথম স্তরকে দ্বিতীয় স্তরের প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এবং দ্বিতীয় স্তরকে তিনটি ক্যাটাগরি বিজ্ঞান, মানবিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায়ী বিজ্ঞানে বিভক্ত করা হবে। প্রত্যেক বিভাগের জন্য শারীরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে আরবী সাহিত্য ও আরবী গ্রামারসহ ফিকাহ শাস্ত্রের বিস্তর আলোচনা থাকবে। এবং সমাজে ইসলামী ন্যায়নীতি সম্পর্কে সার্বিক ধারণা দেয়া হবে।

উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রনালয়

উচ্চ শিক্ষাই জাতীয় জীবনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত করার মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে। সুতারাং উচ্চ শিক্ষার প্রতি সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া অপরিহার্য। উচ্চ মাধ্যমিক কোর্স দুই বছরের জন্য নির্ধারিত। এই কোর্সে হাদিস, কোরআন, ফিকাহ সহ বাংলা, ইংরেজি এবং বিজ্ঞান, ব্যবসায় বিজ্ঞান ও মানবিকের শাখা সমুহকে বিস্তর ভাবে পড়ানো হবে এবং শিক্ষার্থিদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হবে। আর উচ্চ শিক্ষা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর অনার্স, মাস্টার্সের পর ডক্টরেট করার ব্যবস্থা করা।

ইসলামে নারী শিক্ষা



আল্লাহ্‌তায়ালা বলেন, “আর হে নবী মুমিন মহিলাদের বলে দাও তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়, যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া৷ আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে৷ তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে......... তারা যেন নিজেদের যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেবার উদ্দেশ্য সজোরে পদক্ষেপ না করে” (সূরা নুর-৩১)

রাসুল (সাঃ) বলেন, “নির্জনে মহিলাদের সাথে দেখা করা নিষিদ্ধ যদিনা তাদের সাথে তাদের মুহারিম থাকে” রক্তের সম্পর্ক ও অধিকার ব্যাতিত মহিলাদের স্পর্শ করাও নিষিদ্ধ। এবং আল্লাহতায়ালা মহিলাদের ঘড়ের ইবাদতকে পুরুষদের মসজিদের ইবাদতের সমতুল্য করে দিয়েছেন। সুতারাং আল্লাহ্‌ প্রদত্ব ও রাসুল (সা) নির্দেশিত বিধান মেনে মহিলারা শিক্ষাসহ যেকোন কর্মমুখী ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে তা যেন এমন পর্যায়ে পৌঁছে না যায় যে পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করে পুরুষের সমকক্ষতা লাভে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হওয়া। আর যদি বাস্তবিকই এমন ঘটে যায় তাহলে পারিবারিক সম্পর্কে টানাপড়েনের সৃষ্টি হবে, মায়ের অভাবে সন্তানের মানুষিক বিকাশ উন্নতর হবে না। কর্মব্যাস্ত নারীরা ব্যাস্ততার জন্য সন্তান নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করবে আর তাতে পারিবারিক কাঠামো ভেঙ্গে পরার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সাথে মহিলারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় পুরুষের আয় কমে যাবে আর নারী তার স্বকীয়তা হারিয়ে কর্মমুখী হবে। আর তাতে কর্মক্ষেত্রের স্বল্পতার দরুন অনেকের কর্মসংস্থান না হওয়াই অসামাজিক কাজে লিপ্ত হবে। এতে বেকার পুরুষরা চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি সহ বহুবিধ অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পরবে এবং নিশ্চিত কর্মসংস্থান না পাওয়াই নারীরা পতিতাবৃত্তির দিকে ঝুকে পরবে।

এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য অবিলম্বে পুরুষদের মতো কর্মমুখী শিক্ষার পরিবর্তে নারীদের জন্য আলাদা সিলেবাস প্রণয়ন এবং যৌথ শিক্ষার পরিবর্তে আলাদা পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং তাদের জন্য তাদের মত করে কর্মক্ষেত্রের দ্বার উন্মোচন যাতে পরিবারকে সর্বোচ্চ সময় দিয়ে জাতি গঠনে ভুমিকা রাখতে পারে।

ইসলামে সামরিক শিক্ষা

ইসলামে সামরিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে, মুসলমানদের জানমাল রক্ষার্থে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ইসলাম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দিয়েছে। বিশ্বটা তারাই শাসন করেছে, তাদেরই আদর্শের পতাকায় উড্ডয়ন হয়েছে যারা সামরিক দিক থেকে যতটা অগ্রসর হয়েছে। সুতারাং শুধু পেশা সৈনিক নয়, জাতিকে সামরিক দিক থেকে এমন পর্যায়ে উপনিত হতে হবে যে, যেকোন বহিঃ শক্তিই এই জাতিসত্তাকে ধ্বংস করতে পারবে না। আর ইসলামী জাতি সত্ত্বায় শুধু শারীরিক শক্তি নয় সামরিক ক্ষেত্রে মানসিক শক্তিকে চাঙ্গা করার জন্য সামরিক শিক্ষার প্রয়োজন।

আল্লাহ্‌তায়ালা বলেন “হে ঈমানদারগণ! যখন কোন দলের সাথে তোমাদের মোকাবিলা হয়, তোমরা দৃঢ়পদ থাকো এবং আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো বেশী বেশী করে৷ আশা করা যায়, এতে তোমরা সাফল্য অর্জন করবে৷ আর আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ করো না, তাহলে তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দেবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তির দিন শেষ হয়ে যাবে৷ সবরের পথ অবলম্বন করো, অবশ্যি আল্লাহ সবরকারীদের সাথে রয়েছেন৷”



বিষয়: বিবিধ

৩৩২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File