জ্বিন মানুষের গল্প- অন্তরজগত (প্রথম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৯:১৮:২২ রাত



(প্রথম পর্ব)

অনন্ত আকাশের উপরে স্তরে স্তরে ভাসমান আসমান আর নীচে বিস্তৃর্ণ ভূমন্ডল। আসমানে ফেরেস্তা আর ভূমন্ডলে জ্বিনজাতি। ফেরেস্তা নূরের তৈরী আর জ্বিন ধূয়াবিহীন আগুনের তৈরী। আল্লাহ বলেন, ‘আর এর পূর্বে জ্বিনকে বানিয়েছি ধ্রুম্রহীন বিশুদ্ধ অগ্নি হতে’। ফেরেস্তার নিজস্ব কোন স্বাধীনতা না থাকলেও কিন্তু জ্বিনজাতিকে আল্লাহ স্বাধীনতা দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার এই দুই মাখলুখ বা সৃষ্টি ছাড়া অন্য কোন বু্দ্ধিমান সৃষ্টির অস্তিত্ব ভূমন্ডল ও নভোমন্ডলে ছিল না। সৃষ্টিকর্তার হুকুম পালন করাই ফেরেস্তার কাজ। অন্যদিকে জ্বিনকে সৃষ্টিকর্তা চাল-চলন, আচার-আচরণ, জীবন অতিক্রম করার গাইডলাইন দিয়েই পাঠিয়েছেন। তবে তাদেরকে নিজস্ব স্বাধীনতাও দিয়েছেন। জ্বিন জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে দুনিয়াতে ছেড়ে দেয়া হয়। বলা হয়ে থাকে মানুষ তৈরীর দুই হাজার বছর পূর্বে জ্বিন সৃষ্টি করা হয়। জ্বিনের আদি পিতা আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় চেয়েছিলেন যা মহান আল্লাহ কবুল করেছিলেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আবুল জিন্নাত (বা জ্বিনজাতির আদিপিতা) ‘সামূম’কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন তুমি কিছু কামনা করো। সে বলে- ‘আমার কামনা হলো এই যে, আমরা (সবাইকে)দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না-দেখে এবং আমরা যেন পৃথিবীতে অদৃশ্য হতে পারি আর আমাদের বৃদ্ধরাও যেন যুবক হয়ে তারপর মারা যায়।’ অতএব তার এই কামনা পূরণ করা হয়। ' জ্বিনেরা নিজেরা সবাইকে দেখতে পায়, কিন্তু অন্যদের চোখে পড়ে না এবং মারা গেলে যমীনের মধ্যে গায়েব হয়ে যায় আর জ্বিনদের বুড়োরাও জোয়ান হয়ে মারা যায়।

জ্বিনজাতিকে গাইড লাইনের মাধ্যমে দিক-নির্দেশনা দেয়া থাকলেও তারা অল্প কিছু দিন লাইনমত চলে তারপর আবার বেপরোয়া চলতে থাকে। নিজেদের মাঝে কলহ-বিবাদ, মারা-মারি, কাটা-কাটি লেগেই থাকত। তাদের সৃষ্টির উপাদান আগুন হওয়ার কারণেই হয়তো তাদের উশৃংখল জীবনধারা অব্যাহত ছিল। সৃষ্টিকর্তা মাঝে মাঝে তাদেরকে সতর্ক করলে কিছুদিন ভাল থেকে আবার আগের মত আচরণ শুরু করে। সৃষ্টিকর্তা মাঝে মাঝে আসমান থেকে ফেরেস্তার প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে তাদেরকে সতর্ক করেন। আবার বেশী বাড়াবাড়ি করলে ফোরেস্তার শক্তিশালী কমান্ডো দল পাঠিয়ে তাদেরকে দমন করেন। যারা বেশী অবাধ্য আচরণ করে তাদেরকে হত্যা করা হত।

এভাবে হাজার হাজার বছর জ্বিনদের জীবনাচরণ দেখে তাদেরকে শৃংখলার জীবনে ফিরিয়ে আনতে একসময় জ্বিনদের মধ্য থেকে ইয়াকুব নামের একজন নবীও পাঠানো হলো। ফাইনালী দুষ্টু জ্বিনেরা তাদের নবীকেও হত্যা করল। তাদের অশান্তির কারণে যখন পৃথিবীতে বিশৃংখলা দেখা দিল তখন সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য আসমান থেকে একদল ফেরেস্তা পাঠালেন। ফেরেস্তারা প্রায় সমস্ত জ্বিনকে ধরে ধরে হত্যা করল। অল্প কিছু ভাল জ্বিন দুর-দূরান্তে পালিয়ে গেল, কতককে সৃষ্টকর্তার সৈন্যবাহিনী সাগর ও দূর্গম পাহাড়, দ্বীপপুঞ্জের দিকে তাড়িয়ে দিল। এসময় ফেরেস্তারা জ্বিনের এক বাচ্চাকে পেল যে দেখতে খুব সুন্দর ছিল। নাদুস নুদুস ছেলেটিকে বেশ আদর লাগছিল। বাচ্চাটির নাম ছিল আযাযিল। শিশু আযাযিলের প্রতি ফেরেস্তাদের মায়া হল এবং তাদের নিজেদের সাথে আযাযিলকে আসমানে নিয়ে যাবার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দরখাস্ত করল। আযাযিলের ব্যাপারে সৃষ্টকর্তা ফেরেস্তাদের আবেদন মঞ্জুর করলেন। ফলে ফেরেস্তারা ফিরে যাবার সময় আযাযিলকে তাদের সাথে দ্বিতীয় আসমানে নিয়ে গেলেন। শুরু হল নতুন এক অধ্যায়।

ফেরেস্তাদের দেখাদেখি আযাযিলও সৃষ্টিকর্তার ইবাদতে মশগুল হয়ে থাকত। আযাযিলের ভদ্র আচরণ আর ইবাদতে একাগ্রতা দ্বিতীয় আসমানের ফেরেস্তাদেরকে ছাড়িয়ে গেলে সৃষ্টিকর্তা তাকে তৃতীয় আসমানে তুলে নিলেন। এভাবে প্রতি আসমানের ফেরেস্তাদের চেয়ে বেশী ইবাদত করায় আযাযিল একসময় সপ্তম আসমানে উঠে গেল। সেখানেও সে অগ্রগামী থাকায় সৃষ্টিকর্তা আযাযিলকে ফেরেস্তাদের সর্দার বানিয়ে দিলেন। আগুনের তৈরী আযাযিল হয়ে গেল আযাযিল ফেরেস্তা।

ঐদিকে দুনিয়ায় জ্বিনদেরকে ধ্বংস করার পর দুনিয়াটা বিরানভূমি হয়ে থাকল। সৃষ্টকর্তা চাইলেন দুনিয়াতে এমন একটি জাতি থাকুক যারা সর্বদা তাঁরই প্রসংশা করবে। তাই তিনি ফেরেস্তাদের ডেকে বললেন আমি দুনিয়াতে আমার প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে চাই। ফেরেস্তাদের সীমিত জ্ঞান, তারা সৃষ্টিকর্তার শিখানো বুলি ছাড়া কিছুই জানে না। তারা ইতিপূর্বে দু্ষ্টু জ্বিনদের মারামারি, রক্তারক্তি দেখেছে। তাই ফেরেস্তেরা আল্লাহকে বলল, আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যারা মারামারি, কাটাকাটি করবে? আল্লাহ বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জাননা।

আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কালো পচা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে।’ অত:পর আদমের সেই মাটির দেহকাঠামো চল্লিশ দিন যাবত ইবলীসের সামনে রেখে দেন। ইবলীস, হযরত আদমের সেই দেহকাঠামোর কাছে আসত। সেটিকে পা দিয়ে ঠোকর মারত। মুখ দিয়ে ঢুকে পিছনের রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যেত এবং পিছন দিয়ে ঢুকে মুখ দিয়ে বেরিয়ে যেত। আর বলত-তোর কোনও গুরুত্ব নেই। তোকে সৃষ্টি করা না হলে কী এমন হত। আমাকে যদি তোর উপর দেওয়া হয়, তবে তোকে আমি ধ্বংস করে দেব। তোর পিছনে আমাকে লাগানো হলে, তোকে আমি নানান অপমানে জড়িয়ে দেব। আল্লাহ তায়ালা হযরত আদমের দেহে প্রাণ সঞ্চারিত করার পর ফিরিস্তাদের নির্দেশ দেশ আদমকে সাজদা করার। সবাই সাজদা করলেও অস্বীকার করে কেবল আযাযিল। তার অন্তরে যে গর্ব-অহংকার সৃষ্টি হয়েছিল, তার দরুন সে ঐদ্ধত্য দেখায় এবং বলে-‘আমি ওকে সাজদা করব না। আমি ওর চাইতে সেরা। বয়সে বড় এবং শক্ত-সামর্থ শরীরের মালিক।

সেই সময় আল্লাহ তার থেকে সদগুণগুলো ছিনিয়ে নেন, যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে এবং তাকে ‘অভিশপ্ত শয়তান’ বলে অভিহিত করেন।

চলবে......

(পজেটিভ সমালোচনা কাম্য) Thumbs Up

বিষয়: বিবিধ

৪৯৭২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381839
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০১:৩৯
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : সামূম জ্বিন জাতির আদিপিতা এবং ইবলিসকে ফেরেশতারা ছোট অবস্হায় পেয়েছিল এসব তথ্য যথেষ্ট আলেমদের নিকট বিতর্কিত কারণ এসকল তথ্যাদি মূলত মুসলিমদের লেখনীতে আসে ইহুদি সোর্স থেকে। বেশ কয়েকজন সাহাবী যারা পূর্বে ইহুদি ছিলেন এবং পরে তারা মুসলিম হয়েছেন তারা তাদের কাছে থাকা ইহুদি তথ্যাদির সাথে ইসলামের সমন্বয় ঘটিয়েছেন যার জন্য সত্য মিথ্যার মিশ্রণ ঘটেছে। তাদের কাছ থেকে অথবা সরাসরি ইহুদি গ্রন্হাদি থেকে মুসলিম তাফসীরকারকরাও অনেকসময় নিজেদের তাফসীরগ্রন্হে উদ্ধৃতি দিয়েছেন ইহুদি আলেমদের অপকর্মের মাঝে একটি ছিল, আসমানী বাণী ও নবীদের ঘটনাবলী বিকৃত করা ফলাফলে অনেক বিকৃত তথ্য আমাদের তাফসীর ও ইতিহাস গ্রন্হাদীতে জায়গা করে নিয়েছে।
হাদিসে বলা হয়েছে, কুকুর ও গাঁধা এই দুই শ্রেণীর প্রাণী জীনদের দেখতে পায়। এজন্য গাধার ডাক বা কুকুরের ডাক শুনলে জীন শয়তানদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে বলা হয়েছে। খন্দক যুদ্ধের সময় সদ্য বিবাহিত এক মুসলিম যুবক যুদ্ধ থেকে তার ঘরে পৌছানোর পর স্ত্রীকে ঘরের বাইরে ভীত অবস্হায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে কারণ জিঙ্গাসা করলে সে জানায়, বিছানায় বিরাট আকৃতির বিষাক্ত সাপ বসে আছে যার জন্য ভয়ে সে বাইরে দাড়িয়ে আছে। যুবক বর্ষা হাতে ঘরে প্রবেশ করলে সাপটিকে তার বিছানায় বসে থাকতে দেখে এবং বর্ষা দিয়ে সাপটিকে আঁঘাত করে বর্ষায় গেঁথে বাইরে নিয়ে আসলে সাপটিও তাকে আক্রমণ করে বসে, সাপ ও যুবক উভয়ই মারা যায়। খবর ছড়িয়ে পরলে প্রতিবেশি মুসলিমরা তার লাশ নিয়ে রাসূল (সাঃ) এর নিকট গিয়ে ঘটনা বর্ণনা করে এবং আকুতি জানায়, তিনি যেন আল্লাহর কাছে দোয়া করে যুবকটিকে বাঁচিয়ে তোলেন। জবাবে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, নাহ! বরং তোমরা তোমাদের সাথীর কর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। কারণ মদিনার বেশ কিছু জীন ইসলাম গ্রহণ করেছে কাজেই তোমরা যদি কোন সাপকে তোমাদের গৃহে পাও তাকে ৩ দিন সতর্ক কর, এরপরেও যদি সে ফীরে আসে তখনই তাকে হত্যা কর। (অর্থাৎ সাপটি মুসলিম জ্বীন ছিল)।
কাজেই জীনেরা সব প্রাণীর কাছে অদৃশ্য না। এজন্য তাদের আদিপিতার দোয়ায় তারা আদৃশ্য, এই ব্যপারটি সম্ভবত ইহুদি বর্ণনা। ইমাম ইবনে তাইমিয়া জ্বীনদের উপর বই লিখেছেন যার একটি ইংলিশ অনুবাদ "ibn taimiyas essay on the jiin" নামে শাইখ বিলাল ফিলিপস অনুবাদ করেছেন। বইয়ের শুরুতেই জীনের পরিচয় অংশে বলা হয়েছে, "জিন" শব্দটি এসেছে "জান্না" থেকে যার অর্থ গুপ্ত, লুকানো। যেমন মায়ের গর্ভকে বলা হয়, জানীন এবং মানুষের হৃদয়কে বলা হয়:- জানান( একবচনে জান) কারণ জানীন বা মাতৃগর্ভে মানব ভ্রুণ ৩ টি পর্দার আড়ালে রক্ষিত থাকে এবং হৃদয় বুকের মাঝে গুপ্ত থাকে। জিন শব্দটি জিন্নি এর বহূবচন। সামূমই যে, জ্বীন জাতির আদিপিতা ছিল, সেটি সঠিক না কারণ আলেমদের বড় একটি অংশ দাবি করেন, মূলত ইবলিসই জীন জাতির আদিপিতা কারণ যুক্তি হল, তুলনার ক্ষেত্রে একই জাতীয় বা সমগোত্রীয় দুটি জিনিসের বা বিষয়ের তুলনা হয়, ভিন্ন দুটি বিষয়ের তুলনা হয়না। বাহন হিসেবে ঘোড়ার সাথে উট বা গাঁধার তুলনা করা যেতে পারে, বাঘ বা সিংহের তুলনা করা যায়না কারণ বাঘ বা সিংহ বাহন না তারা সমগোত্রীয় না বা বৈশিষ্ট এক না। ঠিক তেমনি জীন ও মানুষ দুটিই সমগোত্রীয় কারণ উভয়কেই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য, তাদের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি বা স্বাধীনতা আছে যা ফেরেশতা থেকে উভয়কে পৃথক করে। জীনদের দিয়েছেন শারিরিক শক্তি ও গতি ও একইকাজ করার জন্য মানুষকে দিয়েছেন বুদ্ধি। কাজেই ইবলিস যখন বলল, আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে আর তাকে মাটি থেকে তখন যুক্তিটা স্পষ্ট হয়ে যায়, যেহেতু আদম মানব জাতির আদিপিতা এবং শয়তান তার সাথে নিজের তুলনা করছে এবং সে মাটির সৃষ্টি বলে সেজদা করতে অস্বীকার করছে, তখন এর অর্থ দাড়ায়, সেও জীন জাতির আদিপিতা যাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই যুক্তি ছাড়াও আলেমরা এই বক্তব্যের সমর্থনে কুরানের আরও কিছু আয়াত প্রদর্শন করেন, যেমন: ইবলিসকে অভিশপ্ত হিসেবে ঘোষণা করার পর আল্লাহ শয়তানকে বলেন, বেরিয়ে যাও এবং তুমি ও তোমার বংশধরেরা মানুষের জীবন সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে শরীক হয়ে যাও। এটা নিয়ে কিছুদিন আগে কোরানের আলো ডট কম, এ একটি প্রবন্ধও ছাপা হয়েছে। পরে ইনশাআল্লাহ ভালভাবে রেফারেন্স দিতে পারবো। আমি দীর্ঘদিন জিন, ইবলিস, কালোজাদু, মিউজিক ও জীন, ইলিমুনাতি ও শয়তানের উপাসনা ও দাজ্জাল ইত্যাদির উপর আলেমদের লেখা বেশ কিছু বই পড়েছি ও প্রচুর লেকচার দেখেছি তাই এটাও আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে, মূলত ইবলিসই ছিল জীন জাতির আদিপিতা। (আল্লাহ ভাল জানেন)।
আর আরেকটা ব্যাপার না ধরলেই না। ইন্নি জায়িলুন ফিল আরদি ফলিফাহ- এই আয়াতের উপর প্রাচীন তাফসীর গ্রন্হ, ব্যাখ্যা বা অনুবাদে আমরা কোথাও পাইনি যে, আল্লাহ বলছেন, নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে আমার খলিফা প্রেরণ করতে চাই। অর্থাৎ আমার শব্দটা পরবর্তীতে বিশেষ করে আধুনিক যুগে কিছু মডারেট ইসলামিস্টদের জুড়ে দেয়া শব্দ। ইবনে কাসির, জালালাইন ইত্যাদি গ্রন্হে কোথাও বলা হয়নি মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সকাল ০৯:৫৪
315692
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : প্রথমেই আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার লেখাটিতে সমালোচনামূলক মন্তব্য করার জন্য। আমি এজন্য আপনার প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।Good Luck
আমি আলাদা আলাদা করে কয়েকটি প্রতি জবাব দেব।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সকাল ০৯:৫৮
315693
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : প্রথমেই বলতে চাই আমার লেখাটি একটি গল্প। এটি শরীয়তের মাপকাটিতে গ্রহণযোগ্য কোন দলিল নয়। (এটি যদি কোনদিন গ্রন্থকারেও আসে তাহলে ভূমিকাতে উক্ত কথাটি লেখা থাকবা।)
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সকাল ১০:০৪
315694
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : ২/ লেখাটি লিখতে গিয়ে আমি আল্লামা জালালুদ্দিন সূয়্যুতী (রহঃ) এর জ্বিন সংক্রান্ত একটি বইর(জ্বিন জাতির রহস্য) বাংলা অনুবাদ পড়েছি।
আপনি এবিষয়ে অনেক অধ্যয়ন করেছেন। যদি এ সংক্রান্ত কোন বাংলা সংস্করণে বই থাকে রেফারেন্স দিলে খুশী হব।
381845
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০২:১৫
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনি ইসরাঈলদের উপর রাজত্ব করতেন নবীগণ। তাদের মধ্যকার একজন নবী মৃত্যুবরণ করলে অপর একজন নবী তাঁর স্হলাভিষিক্ত হতেন। আমার পরে আর কোন নবী নেই বরং খলীফাগণ স্হলাভিষিক্ত হবেন এবং তারা সংখ্যায় প্রচুর হবেন। তখন সাহাবীগণ বললেনঃ তাহলে আপনি (এ ব্যাপারে) আমাদেরকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ যার হাতে প্রথম বায়ঁআত বা আনুগত্যের শপথ করবে, তারই আনুগত্য করবে এবং তাদেরকে তাঁদের হক প্রদান করবে, তিনি তাদেরকে সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।( বুখারী: অধ্যায় ৫০: আম্বিয়া কিরাম, হাদিস নং: ৪৬২১)
স্হলাভিষিক্তকরণ ব্যাপারটি প্রতিনিধির সাথে জড়িত। যেমন কুরআনে বলা হয়েছে, যখন আল্লাহ আদ জাতিকে ধ্বংস করলেন তখন সামুদকে আদ জাতির জায়গায় স্হলাভিষিক্ত করলেন। অর্থাৎ সামুদ জাতি আদ জাতির প্রতিনিধি বা খলিফা কারণ রাজত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ইত্যাদি ধ্বংসের পর সামুদকে সেই জিনিসগুলো প্রদান করা হয়েছে।
মিরাজের ঘটনাবলির মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল রাসুল (সাঃ) এর বাইতুল মুকাদ্দিস ভ্রমণ যা একসময় ইহুদিদের ও পরবর্তীতে খৃষ্টানদের উত্তরাধিকারে ছিল যার উত্তরাধিকার এবার রাসূল (সাঃ) কে করা হয়। কুরানের ভাষায়,
তিনিই তোমাদেরকে (পবিত্র) ভূমির (বাইতুল মাকদিস বর্তমান ফিলিস্তিন) উত্তরাধিকারী করেছেন, এবং একে অন্যের উপর মর্যাদায় সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদেরকে এই বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। তোমার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তিদাতা, এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু (সূরা আনআম: ৬:১৬৫)
বনী ইজরাঈল পবিত্রভূমি থেকে বহিষ্কার হওয়ার ৬০০ বছর পর হযরত উমার (রাঃ) এর খেলাফতকালে মুসলিমগণ জেরুজালেম অধিকার করেন এবং খৃষ্টানরা তাকে আমন্ত্রণ জানায় এই ভূমির মালিকানা বুঝে নেয়ার জন্য। আলোচ্য আয়াতের ভবিষ্যৎ প্রতিশ্রুতি সত্য হয়।
অঅর্থাৎ আমি আপনাকে মূল জায়গায় নিয়ে যেতে চাইছি তা হল: মানুষজাতি পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হতে পারেনা কারণ আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা কখনো পৃথিবীতে বসবাস করতেন না। কুরানে আল্লাহ বলেছেন, তিনি পৃথিবীকে সৃষ্ট জীবের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এখানে পূর্বে জীনজাতির বসবাস ছিল, তারাই ছিল এর উত্তরাধিকারী কারণ অন্য কোন সৃষ্টি যার নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি বা স্বাধীনতা আছে, তখনও আল্লাহ এমন কোন সৃষ্টি পৃথিবীতে আনেননি। কিন্তু যখন তাদের বাড়াবাড়ির জন্য তাদের ধ্বংস করা হয়, তখন তাদের জায়গায় পৃথিবীতে বসবাসের জন্য নতুন আরেক সৃষ্টি নিয়ে আসা হয় অর্থাৎ মানুষ। মানুষ জাতি পৃথিবীতে জিনেদের জায়গায় স্হলাভিষিক্ত হয়। অর্থাৎ মানুষ জাতি জীন জাতির প্রতিনিধি। মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি না। আল্লাহ সেটাই ফেরেশতাদের বলছিলেন, যেহেতু পৃথিবীতে জীন জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে তাই আমি পৃথিবীতে জিনেদের জায়গায় তাদের দায়িত্বে তাদের মত সমগোত্রীয় প্রাণী হিসেবে মানুষকে স্হলাভিষিক্তরূপে পাঠাতে চাই। তখন ফেরেশতারা জবাব দিল, কেন আপনি জিনেদেরই মত আরেকটি জাতিকে জিনেদের জায়গায় পৃথিবীর উত্তরাধিকার করতে চান, প্রতিনিধি করতে চান যখন তারা আবারো জিনেদের মতই হানাহানি রক্তারক্তি করবে?? বরং আমরাই তো উত্তম কারণ আপনার ইবাদতে আমাদের কোন নিজস্ব মতামত নেই। তখন আল্লাহ বললেন, আমি যা জানি, তোমরা তা জানোনা।
আল্লাহ যদি তার প্রতিনিধি বানাতে চান তবে কেন মানুষ বানাবেন যারা এত দূর্বল, আসমান ও জমিনের উপর যার কোন কতৃত্ব নেই? আশা করি ব্যাপারটা বুঝেছেন।
আর আরও একটা বিষয় আমি স্কিপ করেছিলাম ভুলে। জীনেদের বাহন আছে। সুরা জীন নাজিলের সময়কার ঘটনা হল, হটাৎই সেদিন সন্ধায় রাসূল (সাঃ) কে তার তাবুতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সাহাবীরা সারা রাত খোঁজাখুজির পরও তাকে না পেয়ে বিশ্বাস করে ফেলেছিলেন যে, তাকে শত্রুরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে অথবা হত্যা করেছে। কিন্তু ভোর হতেই রাসূল (সাঃ) ফীরে এলেন এবং সাহাবীদের উৎকন্ঠার অবস্হা জানলেন এরপর তিনি বললেন, জীনের এক আহবানকারী তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি আশ শামের নুসাইবিন নামক জীন নগরীর জীনদের সাথে সাক্ষাতে গিয়েছিলেন যারা মুসলিম হয়েছেন তিনি সাহাবীদেরকে মিলিত হবার স্হানে নিয়ে যান এবং জীনদের আগুন জালানোর চিহ্নাদি ও তাদের ও তাদের বাহন পশুদের চিহ্নাদি দেখালেন এবং বললেন, তোমরা হাড় ও গোবর দিয়ে পেশাব পায়খানা পরিষ্কার করবেনা কেননা, হাড় হল তোমাদের জীন ভাইদের খাদ্য এবং তোমাদের গবাদিপশুর গোবর তাদের পশুদের খাদ্য। এছাড়াও কুরানেও বলা হয়েছে ইবলিসের বাহনের কথা। তাই জীন ছাড়া অন্য সৃষ্টি ছিলনা ব্যাপারটা এমন না। জাঝাক আল্লাহ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File