সংগ্রামী জীবন প্রবাসীদের।

লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ১৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:৫০:১৫ দুপুর



দেশে বেকারত্বের কারনে ৭৮ লাখের ও বেশী বাংলাদেশী আজ প্রবাসে কাজ করছে। তাদের বেশীর ভাগ অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আছে। তাদেরকে অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আমরা প্রবাস জীবন সংগ্রামে কঠিন পরিণতির শিকার হয়ে জীবিকার প্রয়োজনে একটুকরো সোনালী স্বপ্নের প্রত্যাশায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মাতৃভূমি সোনার বাংলা থেকে প্রবাসে পাড়ি জমায়,আত্ম-প্রত্যয়ের দৃঢ়তায় সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ার সোনালী স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। এভাবেই সোনালী স্বপ্নের ঘোড়ায় সোয়ার হয়ে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী আজ মা, বাবা, ভাই, বোন স্ত্রী, কন্যা, পুত্র, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সকলকে ছেড়ে প্রবাসী জীবন বেছে নিয়েছে। বহির্বিশ্বের যে যে এলাকায় বাংলাদেশীরা পাড়ি জমাচ্ছে, তন্মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কবে কখন বাংলাদেশীরা লুহিত সাগর ডিঙ্গিয়ে এ ধুসর মরুদ্যানে পাড়ি দিয়েছিল তার সঠিক তথ্য যদিও আমার নিকট নেই, তবু এতটুকু বলা চলে যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশীদের যাতায়াত বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের ভীড় দিন দিন কমতে শুরু করছে।

প্রবাসীরাই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, শরিরের রক্ত পানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে অবদান রাখছে। কিন্তু এ অবদান রাখার বিনিময়ে প্রবাসীরা না পরিবার পরিজন থেকে আস্থা অর্জন করতে পারছে, না সরকার থেকে উল্লেখ করার মত কোন সহযোহিতা-সহানুভূতি পাচ্ছে, না প্রবাসে ইজ্জত মান সম্ভ্রম নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার অর্জন করতে পেরেছে। এসব কিছুর বিনিময়ে খুজে আনতে চায় শান্তি ও স্বচ্ছলতা নামক সোনার হরিণকে। বছরের পর বছর অনায়াসে কাটিয়ে দেন প্রবাসী হিসেবে।



বাংলাদেশিরা অপরাদ করার কারন হচ্ছে। অধিক রিক্রোটমেন্ট চার্জকে আমি অন্যতম কারন বলে মনে করি...যেখানে ভারত থেকে একজন শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্য আসতে মাত্র ৩৫,০০০ থেকে সবোর্চ্চ ৫৫,০০০ রুপি লাগে সেখানে বাংলাদেশ থেকে একজন শ্রমিক আসতে বর্তমান প্রায় ৫-৭ লক্ষ টাকা লাগতেছে...এখন একজন শ্রমিক ধার দেনা করে কিংবা ভিটা-মাটি বিক্রি করে এখানে এসে যখন কাঙ্খিত মাত্রায় উপার্জন করতে না পারে তখন অপরাধ করতে অনুপ্রানিত হয় । যেটা নিন্দনীয় মনে হচ্ছে।অনেকেই এরকম আছেন যারা মনে করে – এত টাকা খরচ করে বিদেশে এসেছি, টাকা রোজগার করার জন্য। সুতরাং যে কোন উপায়ে টাকা নিজের পকেটে আসলেই হলো। তা কার টাকা, কিভাবে কোথ্থেকে আসল, বৈধ না অবৈধ, এটার জন্য কোন জবাদিহি করা লাগবে কি না – এসব যেন কোন দেখার’ই বিষয় না। অবশ্য এটা আমাদের একটি প্রধানতম জাতীয় ব্যাধিও বটে, যা সংক্রমনের মাধ্যমে কম বেশী সবার মধ্যেই দিন দিন বেড়ে চলেছে। যার নাম দুর্নীতি। দেশে জাতীয় পর্যায়ে যেমন লুটেপুটে খাওয়ার একটা মহোৎসব চলে আসছে, প্রবাসে এসেও তাদের বংশবদরা যেন সেই এক’ই ধারা বজায় রাখার মহড়ায় নেমেছে। এধরণের দুর্নীতি থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তবে প্রত্যেক বাংলাদেশী যে যেখানেই থাকুক না কেন, তাদেরকে সে দেশের নিয়ম নীতি, আইন শৃঙ্খলা এবং আদব কায়দা সম্পর্কে প্রথমে ভাল ভাবে জেনে নিতে হবে এবং অতি গুরুত্বের সহিত সব বিষয়গুলি পালন করতে হবে। হযরত আলী (রাঃ) নিজ পুত্র হুসাইন (রাঃ) কে নসীহত করতে গিয়ে বলেছেনঃ " হুসাইন! যদি তুমি কোন অপরিচিত শহরে যাও, তাহলে সেই শহরবাসীর আদব কায়দা সম্পর্কে সতর্ক থাকবে।" এভাবেই যদি সবাই চলে তাহলে প্রবাসীদের দ্বারা দেশের মান ক্ষুন্ন হওয়ার কোন কারন থাকবেনা।



সরকারকে বলব

আমাদের সব প্রবাসী শ্রমজীবি ভাইদের কষ্ট জড়ানো ঘামের মূল্যায়ন যাতে কষ্টের আড়ালে হারিয়ে না যায় সেজন্য সময় থাকতেই সবাইকে সচেতন হতে হবে। পদক্ষেপ নিতে হবে দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের ভূমিকা সঠিক ভাবে তুলে ধরতে হবে। না হয় বর্তমান অবস্থা বজায় থাকলে তা আগামীর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক মারাত্নক প্রভাব ফেলবে।

বিশেষ দ্রঃ-এস বির লেখাটি- আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

বিষয়: বিবিধ

৫৮২১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

163876
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০১
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : ধন্যবাদ মিয়াজী ভাই প্রবাসীদের কথাগুলো সুন্দরভাবে উপস্হাপন করার জন্য ।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪৮
118169
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের হার এখন বাড়েনা বরং কমেছে।
ধন্যবাদ শাহাদাত হুসাইন নবীনগর। ভাইজান লেখটি পড়ার জন্য।
163885
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৯
রাইয়ান লিখেছেন : যাদের রক্ত পানি করা টাকায় দেশের অর্থনীতি ওঠে নামে , তারাই আবার শিকার হন নানামুখী বঞ্চনার ....
ভালো লেগেছে লেখাটি , অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৫৩
118178
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : প্রবাসীরা এত নানামুখী বঞ্চনার পরে কিবা পায় !!
রাইয়ান ভাই। আপনাকে আমার ব্লগ বাড়ীতে পেয়ে আমি পুলকিত। ধন্যবাদ ভাই আবার আসবেন।
163912
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪০
আলোর আভা লিখেছেন : প্রবাসীদের কথাগুলো সুন্দরভাবে উপস্হাপন করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইজান ।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৬
118190
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : প্রশ্ন হচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যারা এই রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি সচল রাখছেন, সেই প্রবাসীদের জন্য কি করছে রাষ্ট্র? প্রয়োজনে তারা কি যথাযথ সহায়তা পান সরকারের কাছ থেকে? এই কথা গুলো প্রবাসীদের প্রশ্ন।
------আলোর আভা ভাই ----আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।--------
164171
১৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৫৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ভাই শেষের ছবিটা দেখেতো আমার প্যারিসে বসেই বুক ধড়পড় করতেছে।
১৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৩
118439
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : কেনো ভাইজান । আপনি উপরে উটতে পারেননা। ভয়ের কি আছে।
;Winking
164947
২০ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৮
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার লেখাটির জন্য ধন্যবাদ Rose
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৪
119311
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : আপনাকে আমার ব্লগ বাড়ীতে পেয়ে আমি পুলকিত।
164952
২০ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩১
আফরোজা হাসান লিখেছেন : সুন্দর লেখাটির জন্য জাযাকাল্লাহ।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৮
119314
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : লেখাটির প্রতি আপনার দৃষ্টি দেয়ার জন্য আপনাকেও জাযাকাল্লাহ।Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
168728
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : বিয়ের গল্প কোথায় ?
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:০৭
123092
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : ভাইজানCrying এমন একখান কঠিন কাজ আমাকে দিয়ে হবেনা মনে হয়।Crying Crying
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:২৭
123094
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আগামি কালই একটি গল্প চাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File