Rose Roseভ্রমন করলাম, কাতার আল-ওয়াকরা গার্ডেনRose Rose

লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ০৩ জুন, ২০১৩, ০৫:০৩:৩২ বিকাল



আল-ওয়াকরা গার্ডেন।



গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১২ শুক্রবার । ভ্রমন করলাম আল-ওয়াকরা গার্ডেন।

কি সুন্দর এই পৃথিবী! চোখ জুড়ানো বিস্তীর্ণ শ্যামল শস্য ক্ষেত। গাছের ডালে ডালে রঙ-বেরঙের ফল ফুল, তারই মাঝে রঙ-বেরঙের পাখ-পাখালি প্রজাপতির মনভোলানো খেলা। মন জুড়িয়ে যায় বিরাট আকাশটার দিকে তাকিয়ে থেকে। মেঘের কোলে ভেসে বেড়াচ্ছে স্বাধীন ডানা মেলা পাখিরা, রোদ হাসছে ঝিকমিক। কি সুন্দর! কি সুন্দর এই সৃষ্টি! কি বিরাট বিষ্ময়কর এই সৃষ্টি! সৃষ্টির এই সৌন্দর্য উপভোগ করে শেষ করা যায় না। এর সীমা-সংখ্যা গুণে শেষ করা যায় না। বিশ্বের প্রতিটি অণু-পরমাণু মেনে চলছে আল্লাহর আইন। এই শৃংখলার কোন ব্যতিক্রম নেই।



অনুস্টান শুরু ঘোষোনা করছেন আনোয়ার ভাই।

দিনটি ছিল শুক্রবার। হঠাৎ কামরুল ইসলাম ভাইয়ের ফোন। আমি সালাম দিলাম সে হাসতে হাসতে বল্ল আমরা আগামি জুম্মাদিন ভ্রমনে বেরহব। আমি একথায় হাঁ যানালাম। অনুমানিক এক ঘন্টা পরে ব্লগার মাহমুদ ভাইকে ফোন দিলাম।

সে ও হাসার জন্য কিছুই বলতে পারছেন। আমি বল্লাম কামরুল ভাই কিছুক্ষন আগে ফোন দিয়েছিল।

প্রথমেই অন্ধের হাড়ি ভাংগা









এ যেন এক প্রতিযোগিতার ফালা। যেনো ভালবাসার বন্দন, কে কার আগে আমাকে জানাবে। আমাদের প্রিয় ব্লগার জানাব নজরুল ইসলাম ভাই (আধা শিক্ষিত মানুষ ) ও জানিয়ে দিলেন শুক্রবারে পিকনিক। বুধবার রেজিস্টেশনের শেষ সময়। এক কথায় শিক্ষার জন্যই আমাদের সফর।



কিশোরদের মেধা যাচাই



ভ্রমণ কার না ভাল লাগে! নিশ্চয় ভালো লাগে সবার। এক্ষেত্রে নেতিবাচক জবাব দেয়ার মতো কেউ থাকার কথা না। কারণ ভ্রমণের মজাটাই আলাদা। বন্ধুদের সঙ্গে ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ানোর মাঝে কী যে মজা, যে কোন দিন ঘুরে বেড়ায়নি তার পক্ষে বুঝে ওঠা কখনই সম্ভব না । যে চোখ তা কোন দিন পর্যবেক্ষণ করেনি তার পক্ষে শান্তনা-প্রশান্তির নীড় খুঁজে পাওয়া কোনভাবেই সম্ভব না। এ যেন এক হারানো মানিক খুঁজে পাওয়া। আমরা যারা প্রবাসি তাদের জীবনে এ ভ্রমণের গুরুত্ব আরো অনেকগুন বেশি। আমাদের এ সফরটা আসলে শিক্ষা সফর। শিক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। একই সাথে এটি সারা জীবনের জন্য একটি স্মৃতির স্মারকও বটে। ভ্রমণের প্রতি উৎসাহ প্রদান করে আলকুরআন বলছে :‘বল,তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর। অতঃপর দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল’। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক। (সূরা : আর-রূম, আয়াত- ৪২)‘বল, তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর তারপর দেখ, অস্বীকারকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছে।’ (সূরা : আল্আনআম, আয়াত-১১)



কৌতুকাভিনয়



ভ্রমণে আল্লাহর অসংখ্য সৃষ্টি ও অপরূম মহিমার সোনালি চিত্র ফুটে ওঠে চোখের সামনে। শুনা যায় প্রবাল, পাথর, ঝিনুক-শামুকের মুখে এক আল্লাহর জিকিরের ধ্বনি। চোখের সামনে ভেসে ওঠে যুগে যুগে যালিম, মুশরিকদের পরিণতির বাস্তব চিত্রও। আল্লাহর এ অপরূপ সৃষ্টি দেখার পরেও যারা প্রভুর সামনে নিজেদের শীর নত করতে পারেনি তাদের মত হতভাগা আর কে থাকতে পারে!



বড় দের বস্তা দৌড়



ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে ভ্রমণের স্থান হিসেবে কাতারের ওয়াকরা গার্ডেন টা ও গুরুত্ব সম্পূর্ই। তবে একাকি ভ্রমণের চেয়ে গ্রুপ ভিত্তিক ভ্রমণের মজাটা অনেক বেশি। অনেকের কাছে আবার ভ্রমণ মজাদার নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে নানান কারণও রয়েছে। ভ্রমণ মজাদার হওয়ার জন্য সময় ও স্থান নির্বাচন করাটা একটা বড় বিষয়। সময় উপযোগী যথার্থ স্থান নির্বাচন করতে পারলে ভ্রমণ ভাল লাগারই কথা। ভ্রমণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও মজাদার স্থানের মধ্যে কাতারের আল খোর গর্ডেন,আল ওয়াকরা গার্ডেন। পছন্দনীয় এ স্থানগুলো নির্বাচন করতে মোটেও ভুল করেনি আমাদের ভ্রমণের দাইত্তসিল গন।



আগে থেকেই এখানে জায়গা নির্ধারণ করে নিতে হল। আমাদের প্রায় সবারই এটাই প্রথম আল ওয়াকরা গার্ডেনে ভ্রমণ। আল ওয়াকরা গার্ডেন ভ্রমণ যে এত্ত মজার তা নিজে না করলে বলে বোঝানো যাবে না। এখানে সব ব্যবস্থাই আছে। যেন একটা বাড়ি।এক দিন আগের থেকেই আমাদের শিহাব ভাইয়ের নেত্রিত্তে মুহিলাদে আলাদা পুরুষদের আলাদা ফেনডেল রেডি করেপেলে। আমাদেরকে রিসিভ করতে আগে থেকেই এখানে এসে উপস্থিত বন্দুরা। তাদের আন্তরিকতায় মনে হলো এ যেন জান্নাতি পরিবেশ।



সকালে নাস্তার অপেখখায় দাড়ান।

৮টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কর্মব্যস্ত লোকগুলো সকল কাজ আনজাম দিয়ে যথাস্থানে যোগদান করে একটু আনন্দ উপভোগ করার জন্য। শিশু, কিশোর যুবক, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের পুরুষ/মহিলা যোগদান করে ভ্রমনে। যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুস্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মুহাম্মদ রশীদ চৌধুরী। সাথে ছিলেন জুবের আহমদ চৌধুরী । আর পরিচালনা করেন হাফেজ আনোয়ারুল ইসলাম। বিভিন্ন্য খেলা দুলার দায়িত্ব পালন করেন টু ডে ব্লগের বিশিষ্ট লেখক

( আধা শিক্ষিত মানুষ ) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম ভাই, গোলাম হোসেন ভাইসহ আরো কয়েকজন।

এবার শুরু হলো মাইকে ঘোশনা ৯টায় আপনাদের নাস্তা। ড্যলিগেটটা উপস্তিতি ১১৫৬ জন । নাস্তা সেড়ে খেলা শুর হল। প্রথমেই অন্ধের হাড়ি ভাংগা, কিশোরদের মেধা যাচাই.শিশুদের বিস্কুট,কৌতুকাভিনয় , সর্বশেষে পুরস্কার বিতরণী ,খেলার পাকে পাকে সবাই কখন কোথায় ঘুরব তার পরিকল্পনা ও।

শেষে সিদ্ধান্ত হলো গার্ডেনটা ঘুরে ঘুরে দেখার। মাঝখানে জুম্মার বিরুতি। নামাজ শেষে খাবার পালা । ওখানে একটা দেখার মতো অনুভোব হলো,ছোট বরো কমবেতনের লোক বেষি বেতনের লোকদের সাথে সবাই লাইন লাগিয়ে খাণা নিচ্ছে। সবাই আনন্দ উপভোগ করছে। এত দীর্ঘ পথ যার বিবরণ দেয়া সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয় তবে এতটুকু বলা যায় যে ভহু সময় পার হতে হলো, যা আমাদের জন্য বেদনার হলেও প্রতীক্ষমাণ সেই গার্ডেন পৌঁছার পর সব ভুলে গেলাম। আরো শুভাস চড়াতে থাকে!ফুলে ফুলে!





সর্বশেষে পুরস্কার বিতরণী ,

পরিশেষে: অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, এত সুন্দর, অপরূপ সৃষ্টির মাঝখান থেকে বিদায় নেয়াটা একটু কঠিনই বটে। তারপর ও সব মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে চলে এলাম ।প্রবাসে কর্ম ব্যস্ততার মাঝে এইভাবে একটু ঘুরাঘুরি করে শত কষ্ট ক্লান্তি আর স্বজনদের ছেড়ে দুরে থাকার বেদনা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে রাখে এবং আনন্দ সাগরে অবগান করাতে সক্ষম হয়।

বিষয়: Contest_mother

৩৬৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File