এমন এক চক্রান্ত চলছে যা কেউ ধরতে পারছেন না। এই চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।

লিখেছেন লিখেছেন আয়নাশাহ ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:৪৯:৩৭ দুপুর

বিষয়টা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারেন। আল্লহর ওয়াস্তে নিরব না থেকে এ নিয়ে কথা বলুন।

বেসিক কিছু বিষয় জানা না থাকলে যে কেউ নিজেকে মুসলমান মনে করতে পারেন, কিন্তু আসলে তিনি যে তাঁর ঈমানকে হারিয়ে ফেলেছেন তা তিনি মোটেই জানতে বা বুঝতে পারছেন না। এমন লোকও আছেন যারা দেশে, সমাজে, রাজনীতিতে ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত। ধর্মীয় কাজও মাঝে মধ্যে করেন। মিলাদে যান, জানাজায় যান। পরিবেশ যদি এলাও না করে তবে নামাজ পড়েন না ঠিক, আবার পরিবেশের কারণে নামাজ পড়েনও। শুক্রবারে জুমাও পড়েন। রোজার মাসে তারাওয়ী মিস করেন না, রোজাও রাখেন। ঈদ এবং কুরবানিও করেন। মাওলানা ডেকে মিলাদ শিরনি ইত্যাদিও করান। এর পরও তিনি যে ঈমান হারা হয়ে বসে আছেন সেটা তিনি নিজে যেমন টের পান না, তেমনি সমাজ এবং দেশের কেউ জানেনা। আমাদের দেশের মুসলমানদের মোটামুটি অবস্থা এরকমই।

গত কিছুদিন ধরে শফিক রেহমান ধারাবাহিক ভাবে মৃত্যু দন্ডের বিরুদ্ধে লিখে চলেছেন। তিনি তাঁর লেখনির মাধ্যমে এতোমধ্যে কিছু মানুষকে ভালভাবে প্রভাবিত (আসলে বিভ্রান্ত) করতে সক্ষম হয়েছেন এবং অনেকেই এখন মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে দড়িয়ে গেছেন। যারা মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে থাকাকে সঠিক মনে করছেন তারা আবার নিজেদেরকে মুসলমানও মনে করেই চলেছেন। তারা একটুও ভাবছেন না যে, কুরআন যে দণ্ড আরোপ করেছে তাকে না মানা, রাসুল (স) যে দণ্ড দান করেছেন তাকে অস্বীকার করা মানে কুরআনকে এবং রিসালতকে অস্বীকার করা। কুরআনের একটি আয়াত কেনো একটা নোক্তাকে কেউ যদি অস্বীকার করে তবে তাঁর ঈমান থাকবে না। আর বিরুধিতে করলে তো সে মুরতাদ। একই ভাবে রাসুল (সঃ) দেয়া ফায়সালাকে কেউ না মানলে সে ঈমান হারা হয়ে যায়। (আমার কথা ভুল হলে দয়া করে সঠিক কথাটা বলে দেবেন)। এমন লোক আর লতিফ সিদ্দিকি'র মাঝে কোনও পার্থক্য নাই।

এই শফিক রেহেমান আমাদের দেশে ভালবাসা দিবস সহ অনেক বাজে এবং আপসাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আমদানি করেছেন যাতে জাতির তরুণ প্রজন্ম উচ্ছন্নে যেতে বসেছে। সন্দেহ নাই তিনি ভাল লিখেন এবং তাঁর অনেক ভক্ত পাঠক আছেন। আমিও তাঁর লেখার ভক্ত ছিলাম। তখন এতো বেশী বুঝতে না পারলেও এখন কিছুটা বুঝতে পারি। তিনি নতুন প্রজন্মকে একেবারে স্লো পয়জনিং করে করে শেষ করে দিতে চান। তাঁর সাফল্য, তিনি এমন ভাবে কাজ করে চলেছেন যাতে জাতি মোটেই টের পাচ্ছেনা কিন্তু ভেতরে ভেতরে একেবারে ঘুন পোকার মতো ফোকলা করে দিচ্ছেন। তিনি নিজেকে কখনো মুসলমান বলে প্রচার করেছেন বলে আমার মনে পড়েনা বরং সংশয় বাদি বা নাস্তিক্য বাদি বলেই পরিচিত হতে পচন্দ করেন কিন্তু তাঁর পরিচিতি জনসমক্ষে প্রকাশ হয়ে পড়া থেকে খুব সাবধানে আড়াল করেন। মৃত্যু দন্ডের বিপক্ষে অনেক গবেষণা করে, ভিনদেশি রসালো গল্পের ফাঁদে ফেলে আমাদের ঈমান্দার কিন্তু সহজ সরল এবং অজ্ঞান লোকদেরকে কুরআন নির্দেশিত এবং রাসুল (স) কর্তৃক বাস্তবায়ন কৃত দণ্ডের বিপক্ষে নিয়ে যাচ্ছেন যাতে কোনো দিন তাদের সামনে ইসলামের কথা বলা হলেই এই শ্রেনী তৎক্ষণাৎ মুখের উপরে বলে দেবে ইসলামের মৃত্যুদণ্ড একটা 'অমানবিক' শাস্তি। অতি শুক্ষণ এবং চতুরতার সাথে তিনি কাজ করে চলেছেন যা আমাদের আলিম ওলামাও টেরই পাচ্ছেন না অথচ মুসলমানদের একটা বিরাট অংশ আল্লাহর দেয়া বিধানের বিরোধী হয়ে যাচ্ছে যার অর্থ হল ঈমান হারা হওয়া এবং ইরতাদ। দীর্ঘ দিন ধরে কাফের মুশরিক এবং এই ধরণের নামে মুসলমানদের এমনি শুক্ষণ প্রচারনার কারণে আজ দুনিয়া জুড়ে ব্যভিচারের শাস্তি নিয়ে অনেক মুসলমান নিজেদেরকে বিব্রত মনে করেন। শফিক রেহমান্দের এই চাল অব্যাহত থাকলে এক সময় মৃত্যু দণ্ড নিয়েও আমাদের লোকেরা নিজেদেরকে বিব্রত মনে করতে থাকবে এবং ইসলামকে একটা বর্বর ধর্ম হিসেবে মেনে নিতেও কুন্ঠিত হবে না।

তিনি খুব বেশী চালাক লোক। বিএনপি নামক একটা জগা খিচুড়ী দলের সাথে এখন কাজ করছেন যে দলটির সমর্থকের ৯৯% মুসলমান এবং এদের বেশীর ভাগই হলেন এমন যে ইসলামের বেসিক জ্ঞানও তাদের নাই। কি কাজ করলে, কি বিশ্বাস করলে একজন মানুষ ঈমান হারা হয়ে যেতে পারে সেটা তারা জানেন না। এদেরকে টার্গেট করেই তিনি তাঁর মিশন অর্থাৎ মুসলমানদেরকে ঈমান হারা করার মিশনে দিন রাত কাজ করে চলেছেন। সাপ্তহিক যায়যায় দিন পত্রিকার মাধ্যমে তিনি এমন কিছু তরুণ তরুণীকে তাঁর শিস্যে পরিণত করেন যারা তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বললেই ক্ষেপে যান। ঐসময় তাঁর পত্রিকায় উদিয়মান তরুণ তরুণীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে লেখা দিতে আহ্বান করতেন এবং তাদের অনৈতিক গল্প কথা নামে এবং বেনামে ছাপাতেন। এই একই কাজ এখন করে চলেছেন রোকেয়া প্রাচী এবং সারা জাকের। এই ৮০ বছর বয়সেও তিনি অবিরাম লিখে চলেছেন, টিভিতে বিজাতীয় সংস্কৃতি নিয়ে উপস্থাপনা করছেন, নিজেকে একজন তরুণ বলে প্রচার করছেন। তিনি জেনে বুঝে বাম ঘরানার সাথে একটা ঐচ্ছিক ফারাক রেখে চলেছেন যাতে মুসলমান নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা যায় । দেখুন, এজন্য কোনও বাম এবং নাস্তিক্য বাদি কেউ তাকে বিরক্ত করেনা কারণ ওরা যা করতে চায় শফিক রেহেমান অত্যন্ত চুপিসারে চতুরতার সাথে তা করে দিচ্ছেন।

কম্যুনিস্টরা সেই সাঁটের দশক থেকেই বিভিন্ন দলে তাদের এজেন্ট ঢুকাতে শুরু করে। তাদের এই এজেন্টরা মুল দলকে প্রভাবিত করে করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। আজকের আওয়ামীলীগকে দেখুন। গোঁটা আওয়ামীলীগ এখন আর গণতান্ত্রিক দল না, পুরোদমে কম্যুনিস্ট পার্টিতে পরিণত হয়ে গেছে শুধু নামটা বাদে। অন্যদিকে বিএনপি'র অবস্থাও তথৈবচ। এখন এই দলটিতে যারা সামনের সারিতে আছেন, বেগম জিয়াকে যারা পরামর্শ দিছেন তাদের ৯০% হলেন বাম ঘরানার লোক, তারা নিজেদেরকে সেক্যুলার বলেন। আর দলের নেতাদের মাঝে যারা ডান পন্থি তারা হয় জেলের ভাত খাচ্ছেন না হয় সাইডলাইনে আছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মিঃ ফখরুলকে কেন স্থায়ী ভাবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা এ নিয়ে গত বছর খানেক আগে এই শফিক রেহেমানই শক্ত ভাবে প্রকাশ্যে লিখেছেন। তিনি এখন বেগম জিয়ার ভাষণ লিখে দেন। ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে তিনি কোথায় পৌঁছে গেছেন খেয়াল করেছেন? দল এবং নেত্রীকে এরকম ভাবে যদি বামরা ঘিরে থাকে তবে এই দল দিয়ে আন্দোলন হবে?

তা আন্দোলন হোক বা না হোক, আমি সেকথায় যাচ্ছিনা। দেশের ইসলাম সম্মন্ধে না জানা বা কম জানা লোক, যাদের অধিকাংশই নতুন প্রজন্ম, তাদেরকে নিজেদের বিশ্বাস, ধর্ম, সংস্কৃতি থেকে বের করে আনার যে কৌশল শফিক রেহমান করে চলেছেন সেটা দেশের অনেক বুদ্ধিমান লোকও ধরতে পারছেন না। একথা বলার কারন হল, নয়া দিগন্ত এবং আমার দেশের মতো পত্রিকা তাঁর লেখা ছাপিয়ে গর্ব বোধ করে, নিজেদেরকে ধন্য মনে করছে। আর এমন একটা রাজনৈতিক দলের সাথে নিজেকে আটকে রেখেছেন যাতে দেশের অধিকাংশ মুসলমানদের সমর্থন আছে যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলছেন না বা বলতে পারছেন না। তিনি এই সুযোগ নিয়ে একেবারে ক্যান্সারের মতো ভেতর থেকে মানুষের ঈমানকে আঘাত করে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিচ্ছেন আর আমরা তাকে এবং তাঁর লেখাকে প্রচার করছি। কেউ আসল বিষয়টা ধরতে পারছি না।

এই দুরভিসন্ধি ধরার মতো লোক আমাদের দেশে এমনকি সারা দুনিয়ায় খুব কম আছেন। আজ যদি মাওলানা মওদুদী (রাহ) বেঁচে থাকতেন তবে এর সমুচিত জবাব দিতেন যেভাবে হাদিস অস্বীকার কারী, পরিবার পরিকল্পনার নামে মানব সভ্যতা ধ্বংসকারী, নারী অধিকারের নামে সমাজ বিধ্বংসী এবং সমাতন্ত্রের নামে নাস্তিক্যবাদি মতবাদ গুলোর উপযুক্ত, কড়া, যৌক্তিক এবং বৈজ্ঞানিক জবাব দিয়ে চক্রান্ত কারীদের হাত থেকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে রক্ষা করেছেন।

শফিক রেহেমানদের মতো হাইওয়ানদের উপযুক্ত জবাব দিতে কেউ কি আছেন?

বিষয়: বিবিধ

১৬৭৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

294179
১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শফিক রেহমান তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ি লিখছেন। এটাকে মানতে হবেই কোন কথা নাই কিন্তু তার লিখায় শিক্ষাও চিন্তার উপকরন যথেষ্ট আছে।
১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:০৫
237714
আয়নাশাহ লিখেছেন : যারা চিন্তা করতে পারেন তাদের নিয়ে তো সমস্যা নাই। আপনার মতো কাউকে পথভ্রষ্ট করা তাঁর পক্ষে সম্ভব না সেটা তিনিও জানেন। এজন্য তাঁর টার্গেট ইসলাম সম্মন্ধে না জানা তরুণ প্রজন্ম। এক ভালবাসা দিবস আমদানি করে দেশের তরুণ প্রজন্মের কই বারোটা বাজিয়েছেন সেটা খেয়াল করেছেন?
294192
১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৩৬

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : ইসলাম ওয়ালের বিশ্বাস এত ঠুনকো কেন? সামান্য পোড়া আলুর লোভ অন্যের পিছে ছুটে!!
294194
১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৬
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণী লেখা। বাংলাদেশে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ নামক অপসংস্কৃতির বিকাশ ঘটান শফিক রেহমান তাঁর যাযাদির মাধ্যমে। নারী পুরুষের বিয়ে বহির্ভূত মাখামাখি ও যৌনতাকে তিনি এমনভাবে উপস্থাপন করেন তার অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক যাযাদির মাধ্যমে যেন তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিষয়টি আর অপরাধ বা লজ্জার বলে বিবেচিত না হয়ে স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়। হালফ্যাশনের অশ্লীলতা, নোংরামিগুলি তার সেইসব স্নো পয়জনিং এর ই চূড়ান্ত রূপ। তার সম্পর্কে আমার অবজার্ভেশন হচ্ছে-‘অন্যান্য নষ্ট বামদের মত চরমপন্থী বা উগ্র মেজাজের নয়।’ এটি হচ্ছে তার স্বভাবের মন্দের ভাল দিক। তবে শফিক রেহমান এর চেয়েও অনেক নষ্ট বাম বিএনপি কে গ্রাস করে আছে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ঝুঁকি কেউ নিবে না। কারণ তাহলে, প্রতিবাদী ব্যক্তিটাকেই শত্রু ভাবা হবে দলের মাঝে।
294257
১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১১
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : আমাদের মোল্লারা দোয়াল্লিন-যোয়াল্লিনের পেছনে লাগিয়ে রেখেছেন সাধারণ মুসলমানদেরকে। সে সুযোগই নিচ্ছেন ইসলাম বিরোধীরা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File