সেকুলার প্রগতিশীলরা এবং আধুনিক শিক্ষিতরা।

লিখেছেন লিখেছেন Ruman ২৯ আগস্ট, ২০১৭, ০৮:৫৩:৫৫ রাত

আলেমসমাজের সামাজিক উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন একটা খোঁজখবর রাখি না বললেই চলে। অথচ আলেমরা নিরবে-নিভৃতে ব্যাপকভাবে সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। তারা অতো ঢাকঢোল পেটান না। জাহিরও করেন না। ফলে তাদের সম্পর্কে আমাদের জানাশোনার পরিধি আর প্রশস্ত হয়না। তাছাড়া সেকুলার মিডিয়া তো সচেতনভাবেই আলেমদের ভালো ও ইতিবাচক ভূমিকাকে তুলে ধরতে ইচ্ছুক নয়, বরং সুযোগ পেলে নেতিবাচক প্রপাগান্ডা চালায়। তিলকে তাল করে।

এছাড়াও আমাদের মধ্যে কিছু কিছু মানুষ আছেন, যারা মনে করেন আলেমরা শুধু খায়-দায়, আর কিছু করেনা। সমাজের বোঝা। অথচ এটা ঢালাও সত্য নয়। শুধু খায়-দায় আর কিছু করে না এমন পাবলিক তো আধুনিক শিক্ষিতদের মধ্যেই বেশি দেখি। তাদের মধ্যেই বেকারত্বের হার বেশি। টো-টো কোম্পানির ম্যানাজার তাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। সুতরাং, আমাদের নিজেদের পশ্চাদ্দেশেই আগে তাকানো উচিত। আলেমরা এটা করেনা, সেটা করেনা, আমাদের কত অভিযোগ! আরে মিঁয়া, আমরা আধুনিক শিক্ষিতরাই বা করছিটা কী? দেশের প্রশাসন, মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, আইন-আদালত সবই তো আমাদের দখলে। তো আমরা এখন এই সমাজ ও দেশকে কই নিয়ে যাচ্ছি? এত অপার সুযোগ আমাদের হাতে, তাসত্ত্বেও কীইবা করতে পারলাম আমরা দেশ ও দশের জন্য? কলমের খোঁচায় ঘুষ-দুর্নীতি, আত্মসাৎ, লুটপাটগুলো তো আমরাই করছি। অন্যের দোষ ধরার আগে আয়নায় আমাদের নিজেদের চেহারা দেখা উচিত।

যাই হোক, সম্প্রতি 'হাফেজ্জী হুজুর রহ. সেবা' নামে একটি সংস্থা সম্পর্কে জানতে পারলাম। এই সংস্থাটি প্রতি বছরের মতো এবারের কুরবানি উপলক্ষে ঈদের তৃতীয় দিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ প্রায় ১২টি জেলায় গরিব-দুস্থ, অসহায় ও বন্যার্তদের মাঝে ১৫টি গরু ও ৩০টি খাসি কুরবানি করে মাংস বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের উদ্যোগের লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে প্রায় পূর্ণ। শুধু ঈদের তৃতীয় দিন একযোগে আয়োজনের অপেক্ষায়। এছাড়া সংস্থাটি তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডসমূহ বছরজুড়েই অব্যাহত রাখে। অসহায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলোতে নলকূপ স্থাপন, বাথরুম নির্মাণ, মসজিদ নির্মাণসহ প্রচুর কাজ তারা করে যাচ্ছেন। এই সংস্থার ফেসবুক আইডিতে (tagged) গেলে তাদের কাজগুলোর আপডেট দেখতে পাবেন। আমি সত্যিই অভিভূত ও আনন্দিত এ কারণে যে, আলেমরা নিরবে-নিভৃতে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। আপনারা কেউ আগ্রহী হলে সংস্থাটিতে অবদানও রাখতে পারেন।

এছাড়া কয়েকদিন আগে হেফাজতে ইসলাম-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা Azizul Hoque Islamabadi–এর নেতৃত্বে ভারতীয় পানির আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রাম জেলায় ৩২০ পরিবারকে নগদ অর্থ, আসবাবপত্র, বাড়ি নির্মাণ সামগ্রী, চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, ঔষধ ইত্যাদি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

আলেমসমাজের এমন আরো বহু সামাজিক কর্মকাণ্ডের উদাহরণ আছে, যা কখনোই আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়নি। যদি আলেমসমাজের আরো এমন কাজগুলো সম্পর্কে জানা থাকে কারো, তাহলে পোস্টের কমেন্টবক্সে উল্লেখ করতে পারেন। প্রচারেই প্রসার, কিন্তু আলেমরা অতো ঢাকঢোল পেটান না। সর্বোপরি, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের এখনই সময়।

পরিশেষে বলবো:

আলেমসমাজ জাগলে, জেগে ওঠে বাংলাদেশ

মাদ্রাসা-পড়ুয়ারা এগোলে, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ

ইনশাল্লাহ

বিষয়: বিবিধ

৬০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File