জাতীয় উন্নয়নে রূপালী ব্যাংক

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৯ আগস্ট, ২০১৭, ০৬:০৯:৩৮ সন্ধ্যা



উপবৃত্তি পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মায়েদের মধ্য থেকে ১০ লাখ মাকে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিয়ে ব্যাংকটি এই সেবা সম্পর্কে গ্রামে-গঞ্জে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। এখন চিন্তা করা হচ্ছে, এই এক কোটি মায়ের মধ্য থেকে ১০ লাখ মাকে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে। যেসব মায়ের পক্ষে ঘরে বসে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বা যেকোনো ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ আছে সে ধরনের উদ্যোগে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হবে। ঋণের টাকাও তাদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিস্তিও পরিশোধ করবে তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। ব্যাংকে আসতে হবে না। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ অনেক দূর এগিয়েছে। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ইতিবাচক সাড়া পেলেই বাকি কার্যক্রম শুরু করা হবে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের ফলে মায়েরা ঘরে বসে তাদের সন্তানদের উপবৃত্তির টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। এটা তাঁদের আর্থিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। আগে এই টাকা পেতে মায়েদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। বর্তমানে দেশব্যাপী ষাট হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা তাদের মায়েদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে পাঠিয়ে দিচ্ছে সরকার। এ উপবৃত্তি তুলতে কোনো সার্ভিস চার্জ নেই অর্থাৎ মায়েরা নির্ধারিত পুরো টাকাই পাচ্ছেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বড় পেমেন্ট ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, রূপালী ব্যাংক এবং শিওরক্যাশ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি মা একটি করে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খুলতে পারছেন, যা উপবৃত্তির টাকা পাওয়া ছাড়াও টাকা পাঠানো, জমানো, গ্রহণ, মোবাইল রিচার্জ ও বিল দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১ মার্চ ‘মায়ের হাসি’ নামক এ প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় বলেছিলেন, ‘আমরা এখন ১ ক্লিকে সারা দেশে ১ কোটি মায়ের ফোনে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছি। গ্রামের মায়েরাও এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পাচ্ছেন। ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণে উপবৃত্তি বিতরণ এখন অনেক সহজ হয়েছে। তা ছাড়া বৃত্তি বিতরণের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে। শিওরক্যাশ পেমেন্ট সিস্টেমে ব্যবহৃত সব সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশে প্রস্তুত করা। এই দেশের তরুণ-তরুণীরা তৈরি করেছে বিশ্বমানের এই সফটওয়্যার। প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্প বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো, উপস্থিতি ধরে রাখা এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সারা দেশে প্রায় ৬০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত। কোনো কোনো পরিবারের একাধিক ছেলেমেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে, যে কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩২ লাখ হলেও মায়েদের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে প্রায় এক কোটিতে। এই উপবৃত্তি সাধারণত তিন মাস পর পর ছাত্র-ছাত্রীর মায়েদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। আগে যেখানে ১৫০০০ কেন্দ্র ব্যবহার করে নির্দিষ্ট দিনে উপবৃত্তি দেওয়া হতো, এখন সেখানে লক্ষাধিক এজেন্ট থেকে যেকোনো সময়ে এ টাকা তোলা যাচ্ছে। এভাবে জাতীয় উন্নয়নে কার্যকর ভুমিকা রাখছে রাষ্টীয় মালিকানাধীন এই ব্যাংক।

বিষয়: বিবিধ

৫৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File