আন্দোলন হচ্ছে, আন্দোলিত হচ্ছিনা

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নলোকের সিঁড়ি ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৯:৪৬:১৯ রাত

"দেখলাম, পুরো কক্ষটি কুকুরে ভরা। সংখ্যা ঠিক কত কুকুর ছিল তা আমার মনে পড়ছে না। আমি এত সব হিংস্র কুকুর দেখে ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম। আমার সারা শরীর জুড়ে অসংখ্য কুকুরের অসহ্য দংশন চলছিল। মাথা, হাত, ছাতি, পিঠ, পা মোটকথা সর্বত্র কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল আমি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখার জন্যে চোখ খোলা মাত্রই আবার বন্ধ করতে বাধ্য হলাম। অনন্যোপায় অবস্থায় আমি আল্লাহ্‌র নাম-আসমাউল হুসনা জপতে শুরু করলাম। আমি কুকুরের বিষাক্ত দংশনের কথা ভুলে গিয়ে আল্লাহ্‌র জিকিরে মশগুল হয়ে পড়লাম"।

১৯৬৫ সালের ২০ আগস্ট গ্রেফতার হন জয়নব আল গাজালী। ২০ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত তার উপর যে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় তার একটি চিত্র এরকম- তাকে একটি সেলে বন্দী করে রাখা হয়,মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনে তাকে লক্ষ্যচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়। এরকম লোহমর্ষক নির্যাতনের বর্ণণা তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন তার ''কারাগারে রাতদিন" বইয়ে।

প্রখ্যাত ব্রিটিশ সমাজ বিজ্ঞানী এন্টনি গিডেনস বলেছেন, ‘কার্ল মার্কস, দুরখিইম ও ভেবেরের মত বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানীরা তাদের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ক তত্ত্বে মোটামুটি যে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন, তা হচ্ছে, মানব জীবন থেকে ধর্ম আস্তে আস্তে বাদ পড়ে যাচ্ছে এবং সেকুলারিযম বা ধর্মহীনতা ধর্মের যায়গাটি দখল করে নিচ্ছে। কিন্তু আশির দশকে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর আমরা ঐসব চিন্তাবিদের ভবিষ্যদ্বাণীর বিপরীত স্রোতধারা লক্ষ্য করেছি।’

পর্যালোচনাটা এখানেই।বিশ্বাসী কন্ঠগুলোকে যেকোনভাবেই দলিত করে রাখাই তাহলে একমাত্র পন্থা।হ্যা - এটাই তাবৎ স্বৈরাচারের নিয়ম।মিশরের নাসের ছিল কায়েমী স্বার্থবাদী আরবগোষ্ঠী ও সোভিয়েত রাশিয়ার স্বার্থের শিখন্ডী।সে এভাবেই- জয়নবদের দমিত করতে চেয়েছিল।

১৯৬৫- ২০১৭। তাদের উদ্দ্যেশ্য চরিতার্থের উপায় এখনো একই কিন্তু ধরণের কোন পরিবর্তন হয়নি।মিশর থেকে বাংলাদেশ। আবহাওয়াগত আর সাংস্কৃতিক মেজাজের পরিবর্তন হওয়াতে ধরণেও নতুন মাত্রিকতা যোগ হয়েছে শুধু।বাদ নেই বাংলাদেশের বিশ্বাসী নারীরা।কোলের শিশু শিকের বাইরে আর মমতাময়ী মা ভেতরে।সামনের ৮ মার্চে নারী দিবস।অনেকেই এদিনে অনেক কথা বলবেন।কিন্তু নারী দিবসের মেকী মূলভাব এ হৃদয়বিদারক চিত্রকে কিভাবে তার মূল প্রতিপাদ্য দিয়ে মূল্যায়ণ করবে।

ফ্রয়েডের মতে - Collective Unconsciousness হলো মানব মনের আদিম,সহজাত ও উত্তরাধিকারজাত কাঠামো।অবচেতনাঃ স্পষ্ট জ্ঞানের অন্তরালে অস্পষ্ট চেতনা, এক প্রকার অদৃশ্য দেয়াল।চেতন মনকে হয়ত স্টাডি করা যায় কিন্তু জাতীয় অবচেতন মনকে কিভাবে করা যায়?

প্রাকৃতিক পরিবেশে দেখতে দেখতে অনেক কিছুই অবচেতন মনে গেঁথে যায়।বারংবার যা ঘটে।এগুলো মনোজগতে আন্দোলন তৈরি করলেও এ আন্দোলনে আমরা আন্দোলিত হইনা।

https://www.facebook.com/notes/saiful-sujan/%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%A8-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%BE/1265903893472824

বিষয়: বিবিধ

৮৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File