খাদিজার পাশে আওয়ামী লীগ নেত্রীদের সেলফি, ফেসবুকে ঝড় 06 Oct, 2016

লিখেছেন লিখেছেন Raya ০৬ অক্টোবর, ২০১৬, ০৬:৩৩:৩৯ সকাল

বিস্তর চিকিৎসা সামগ্রীর মাঝে নাকে-মুখে নল লাগানো অবস্থায় নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শুয়ে আছেন ছাত্রলীগ নেতার অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খাদিজার বোঝার উপায় নেই তাকে কে বা কারা দেখতে আসছে। তাকে নিয়ে কথা হচ্ছে নানান, অনেকে নিচ্ছেন অনেক অবস্থান। আর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আইসিইউ গাউন গায়ে সেলফি তুলছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন নেত্রী।

খাদিজার হামলাকারী বদরুল আলমের বিচারের দাবিতে সারাদেশ যখন সোচ্চার, প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে—এই সময়ে ঠিক এ রকম একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। তাঁর পাশে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলস এবং আরো এক নেত্রী। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পোস্ট করা হয়েছিল ছবিটি।

নৃশংস আঘাতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে থাকা একটি মানুষের কাছে গিয়ে কেউ যদি এমন আচরণ করেন, তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝাড় ওঠা স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। তার ওপরে মানুষটি যখন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, তখন এমন আচরণ প্রশ্ন তোলে আরো বেশি। বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পর সেখানেও মানুষজন তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চলছেন। আইসিইউয়ের মতো স্পর্শকাতর একটি জায়গায় আশঙ্কাজনক একজন রোগীকে দেখতে গিয়ে এহেন সেলফি তোলায় অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ফেসবুকে।

এই সমালোচনার মধ্যেই সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন অবশ্য সেই সেলফিটি নিজের ওয়াল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তুহিনের ফেসবুক ওয়ালে আলোচিত সেই ‘সেলফিটি’ আর দেখা যাচ্ছে না। রাত সাড়ে ১২টার কিছু পর তিনি ১১টি ছবি ‘অ্যাড’ করেছেন যেগুলো বিভিন্ন সময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নারী কর্মীদের সংঘর্ষ কিংবা নির্যাতনের ছবি। ছবিগুলোর জন্য সংসদ সদস্য তুহিন একটি দীর্ঘ ক্যাপশন ব্যবহার করেছেন, যেখানে তিনি সেই ছবিটিকে ‘সেলফি’ হিসেবে অস্বীকার করে তিনি লিখেছেন—

‘যখন বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারের এই ছবিগুলো দেই তখন শেয়ার হয় না ইমরান এইচ সরকারদের কাছে। আমরা আওয়ামী লীগের নারী কোন প্রতিবাদ হয় নাই কখনও। আমরা ভুক্তভোগী তাই নারীর কষ্ট বুঝি, তাই পাশে গিয়েছি। ছবিটি যদিও সেলফি না ছোট ভাই শাহাদাতের তোলা। মনে হচ্ছে, কতগুলো খুন করেছে আর যে খাদিজাকে না বাঁচিয়ে ভিডিও করলো এ ব্যপারে সবাই নিশ্চুপ। বেগম জিয়া সারা বছর গোলাপী লিপিষটিক দেয় এটা চোখে পড়ে না উনি তারপরও খাঁটি মুসলিম। আমরা ভদ্র ড্রেস পরে গেছি তারপরও কত কথা।’

গত সোমবার ডিগ্রি (পাসকোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা। বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম (২৭)। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা তাঁকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এরই মধ্যে আজ সিলেটের আদালতে খাদিজার ওপর হামলার দায় স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বদরুল আলম। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আট বছর ধরে খাদিজাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তিনি। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত শেষ পর্যন্ত তাঁর ওপর হামলা চালান বদরুল।

ঘটনার দিন গুরুতর আহত অবস্থায় খাদিজাকে প্রথমে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন খাদিজা। গতকাল চিকিৎসকরা বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর তাঁর অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে। আজ বুধবারও খাদিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

উৎসঃ এনটিভিnull

বিষয়: বিবিধ

১০৭৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378352
০৬ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৬:৩৪
Raya লিখেছেন :
378355
০৬ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:০২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এটা উনাদের মহানুভতা যে উনারা সেলফি তুলcYB!!!!!!
378365
০৬ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : শ্রদ্ধেয় লিডার বদরুল ভাই, আপনি যেহেতু ৮ বছর যাবত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, আরেকটু ধৈর্য ধরা আপনার উচিত ছিল। আপনি ইচ্ছে করলে অন্য একটা ঠুনকো অজুহাত দিয়ে আপনার প্রেমের ব্যর্থতার প্রতিশোধ শেষ বয়সেও নিতে পারতেন, যেমন আমাদের নেত্রী সাঃকাঃচৌকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রেমের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন!!!
আপনি পড়েন শাবিপ্রবি তে, আর প্রেম করতে গেলেন সিলেট সরকারি কলেজে পড়া একটা মেয়ের সাথে? কেনো ভাই? প্রেমেরও তো মিনিমাম একটা ক্লাশ থাকে, নাকি? শাবিপ্রবি তে কি মেয়ের এতই আকাল যে আপনাকে কলেজে আইসা ঘটনা ঘটাইতে হইলো? আপনি কেন জাফর ষাড়ের কচিকাঁচাদের দিকে নজর দিতে গেলেন!!!
আপনারা না দলীয় লোকদের শান্তি দিলেন, না জাফর ইকবাল স্যারকে। স্যার মাসের মধ্যে আর কতোবার 'ওরা অবুঝ' 'ওরা বুঝে না' 'ওদের সময় দিন' বলে আপনাদের ইমেইজ রক্ষা করে যাবে বলেন দেখি? মানুষের শব্দ ভান্ডারে এই জাতীয় কিউট শব্দগুলোরও তো একটা লিমিট থাকে, তাই না?
কোপাবেন ভালো কথা, সাথে অন্তত একবার 'আল্লাহু আকবার' বলে চিক্কুর দিলেই পারতেন। অথবা পুলিশকে বলতেন, আপনার দূরসম্পর্কের কেউ একজন শিবির করে, তাহলে সব ল্যাঠা জামাত-শিবিরের কান্ধে ট্রান্সফার হইয়া যাইতো। এই ছোটখাটো ভুলগুলা যে কবে আপনারা শুধরাবেন আল্লাহ মালুম...।
দেখাযাক কি হয়, বেশি টেনশন নিয়ে শরীর খারাপ কইরেন না...পাবলিকের সাময়িক চেঁচামেচিতে যদি আপনার কোনো শাস্তি হয়েও যায়...আমাদের মহামতি রাষ্ট্রপতি তো আছেন!!!
378382
০৬ অক্টোবর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:০৯
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File