সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত- 29

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫৩:০৩ বিকাল

শিক্ষা ব্যবস্থাঃ

একটা জাতীর উন্নতি অবনতি নির্ভর করে তার শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। অথচ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই আমাদের ধ্বংসের মুল বীজ নিহিত রয়েছে। বৃটিশ শাসনে ইংরেজরা নিজেদের শাসনের সহায়ক দাস ও কেরানি তৈরির লক্ষ্যে উপমহাদেশে বস্তুবাদি আধুনিক শিক্ষার প্রবর্তন করে। লর্ড ম্যাকলের রিপোর্ট থেকে তাদের প্রবর্তিত শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যায়। যেমন 1835 mv‡ji 2 †deªqvix weªwUk cvj©v‡g‡›U cÖ`Ë g¨vK‡ji ভাষণ-

I have travelled across the length and breadth of India and I have not seen one person who is a beggar, who is a thief. Such wealth I have seen in this country, such high moral values. People of auch caliber,that I do not think we would ever conquer this country, unless we break the very backbone of this nation, which is her spiritual and cultural heritage, and therfor, I propos that we replace her old and ancient education system, her culture, for if the Indians think that all that is foreign and English is good and greater than their own, they will become what we want them, a truly dominated nation.

অনুবাদঃ আমি ভারতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়েছি কিন্তু একটি ভিক্ষুকও চোখে পড়েনি, একটি চোরও আমি দেখতে পাইনি। এ দেশে সম্পদের এত প্রাচুর্য এবং এ দেশের মানুষগুলি এতটাই যোগ্যতাসম্পন্ন ও উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী যে এদেশকে আমরা কখনোই পদানত করতে পারবো না- যদি না তাদের মেরুদন্ডটি ভেঙ্গে ফেলতে পারি। এদেশে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যই হচ্ছে সেই মেরুদণ্ড। এ কারণে আমার প্রস্তাব হচ্ছে, আমরা সেখানকার প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা ও সংস্কৃতিকে এমন একটি শিক্ষা ও সংস্কৃতি দিয়ে প্রতিস্থাপন করব- যাতে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক ভাবতে শেখে যে, যা কিছু বিদেশি এবং ইংরেজদের তৈরি তা-ই ভাল এবং নিজেদের দেশের থেকে উৎকৃষ্টতর। এভাবে নিজেদের উপরে শ্রদ্ধা হারাবে, তাদের দেশজ সংস্কৃতি হারাবে এবং এমন একটি দাসজাতিতে পরিণত হবে ঠিক যেমনটি আমরা চাই।”

আলিয়া মাদ্রাসাঃ

আবার ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথেই এদেশে তাদের মানব রচিত আইন প্রয়োগ করা সম্ভব ছিল না। তাই বিচার বিভাগে পুর্ব থেকে চলে আশা ইসলামী আইনের অনুসরণ ব্যতীত প্রথমাবস্থায় তাদের জন্য গত্যন্তর ছিল না। আর ইসলামী আইন গ্রন্থগুলি ছিল আরবি ফারসি ভাষায় রচিত। কাজেই তাদের এমন কিছু মোল্লা মৌলভীর প্রয়োজন দেখা দিল যারা ইসলামী আইনগুলি আরবি ফারসি থেকে অনুবাদ করে বিচারকদের এর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বুঝিয়ে দিবে। আর এই অনুবাদক শ্রেণী পয়দা করার জন্যই লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮০ সালে কলিকাতায় প্রথম আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে। এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুত্ত হয় ডঃ এ এইচ স্প্রিঙ্গার। এরপর ক্রমান্বয়ে ১৭৮০ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত ১৪৬ বছর ২৭ জন খৃষ্টান উক্ত মাদরাসায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে। এভাবেই এ বিষবৃক্ষের জন্ম। অনুবাদক তৈরির জন্য যতটুকু সিলেবাস দরকার উক্ত মাদরাসায় ততটুকুই রাখা হয়েছিল। ইসলামি অর্থনিতি রাষ্ট্রনীতি জ্ঞান বিজ্ঞান ইত্যাদি সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

আবার ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পর উপমহাদেশের মুসলমানদের উপর নেমে আসে রোজ কিয়ামতের বিভীষিকা। বিশেষত আলেম সমাজ যেহেতু এই আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন বিধায় তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার অভিযান চলল। এই অভিযানে ৫১ হাজার ৫০০ জন আলেম শাহাদাত বরন করেন। মুসলিম জাতীর ভাগ্যাকাশ অমাবশ্যার কালো আধারে ছেয়ে যায়। তখন অবশিষ্ট আলেমরা ইংরেজের সাথে সম্মুখ সমরের আশা বাদ দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। তারা ১৮৬৬ সালে দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করলেন। উদ্দেশ্য ছিল, মুসলমানদের ঈমান আক্বিদা সংরক্ষন এবং ইসলামি শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে ইংরেজ বিরোধি সৈনিক তৈরি করা। তারপর সময় ও সুযোগ মত ইংরেজ তাড়িয়ে মুসলিম সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

এভাবেই উপমহাদেশে ত্রিমুখি শিক্ষা ধারার প্রবর্তন হয়। এ ত্রিমুখি শিক্ষায় জাতি গাধা ঘোড়া ও খচ্চর হচ্ছে, বিভক্ত হচ্ছে কিন্তু মুসলমান হচ্ছে না। অতীব দুঃখের বিষয় এখানেই যে, ইংরেজ চলে যাবার পর এমন কোন চিন্তাবিদ, এমন কোন নেতা, এমন কোন ত্রানকর্তার আবির্ভাব হয়নি- যিনি ত্রিমুখি শিক্ষা ধারাকে পুর্বের ন্যায় একত্রিত করে একমুখি করে দিবেন, ধর্মশিক্ষা ও জাগতিক শিক্ষা একত্র করবেন। ফলে পরিনতি এই হল যে, জাতীর জীবনাদর্শ ও চিন্তা চেতনা ত্রিমুখি ও সাংঘর্ষিক হয়ে গেল। যেমন এক বাবার তিন ছেলে, একজনকে কওমিতে, একজনকে আলিয়ায়, একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠালেন। ব্যস, এই সংসারে আর কোন মিল থাকবে না, ত্রিমুখি হয়ে যাবে। যে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করল, সে সুদ ঘুষ হাতিয়ে বিশাল বড় লোক হল, হেরেম প্রাসাদ নির্মাণ করল কিন্তু কোরান পড়তে জানে না। অর্থাৎ সে ইহকালের ঘোড়া পরকালের গাধা হল।

আর যে কওমি মাদরাসায় পড়ল সে কোরান হাদীস ফেকাহ ইত্যাদির পণ্ডিত হল বটে কিন্তু তার ঘরে চাউল নেই, ঘরের ছাউনি নেই। সে মসজিদ মাদরাসায় খেদমত করে বটে কিন্তু তার জীবন চলে অন্যের দান দক্ষিনা ও সদকা ফেৎরার টাকায়। অর্থাৎ সে ইহকালের গাধা পরকালের ঘোড়া হল। আর যারা আলিয়া মাদরাসায় পড়ে তারা না ইসলামী শিক্ষা ভাল জানে আর না আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান। কাজেই তারা নহে গাধা নহে ঘোড়া শুধুই খচ্চর। অর্থাৎ আধুনিক জ্ঞান ভাল জানলে তারা ইহকালের ঘোড়া হতে পারত, আবার ইসলামী জ্ঞান ভাল জানলে পরকালের ঘোড়া হতে পারত। কিন্তু যেহেতু তারা কোনটাই ভাল জানে না শুধু থোড়া থোড়া, এজন্যই তারা খচ্চর- নহে গাধা নহে ঘোড়া। আর যে জাতী গাধা, ঘোড়া ও খচ্চর- এই শ্রেণীর পশুতে বিভক্ত হয়ে থাকে তাদের ধ্বংস কেউ রুখতে পারবে না। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, খিলাফতের প্রধান দায়িত্ব, উম্মাহর প্রথম কর্তব্য হচ্ছে ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংসের মুল কারণ- এ ত্রিমুখি শিক্ষাধারা বিলুপ্ত করে একমুখী করা। শিক্ষার এ তিনটি ধারাই ইসলাম ও উম্মাহর জন্য ক্ষতিকারক। কেন- তা সংক্ষেপে পেশ করছি।

বস্তুবাদি শিক্ষাঃ এ শিক্ষার মুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, এর কুফল নিম্নরূপ।

মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলা হয় গীর্জা শাসিত ইউরোপের তের শতক থেকে নিয়ে সতের শতক পর্যন্ত সময় কালকে। তখন ইউরোপের শিক্ষা বলতে ছিল গির্জা প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা। পাদ্রীরা তৎকালীন জ্ঞান বিজ্ঞানের যতটুকু আবিস্কার হয়েছিল এবং লোক সমাজের প্রচলিত ধারনা ইত্যাদির সমন্বয়ে বাইবেলের টিকা টিপ্পনি লিখে খৃশ্চিয়ান টপোলজি নাম দিয়ে তা পাঠ্যভুক্ত করেছিল। গীর্জা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে অন্য কোন শিক্ষা গ্রহণ, মুক্ত চিন্তা, জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোচনা গবেষণা ইত্যাদির সুযোগ ছিল না। তখন ছিল ইউরোপের অন্ধকার যুগ। কিন্তু স্পেন ও ক্রুসেড যুদ্ধের মাধ্যমে ইউরোপ মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হয়। তারাও মুক্ত চিন্তা ও বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা শুরু করে। তাদের গবেষণা অনেক ক্ষেত্রে বাইবেলের ব্যাখ্যার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। তখনি গীর্জা দার্শনিক ও বিজ্ঞানিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে যায়। তারা ইনকুইজিশন কোর্ট নামে গীর্জা নিয়ন্ত্রিত এক প্রকার আদালত গঠন করে। তারপর ঐসব বিজ্ঞানীদের কাফের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে বিচার শুরু করে। এভাবে তারা দুই লক্ষাধিক মানুষকে হত্যা করে, বত্রিশ হাজার মানুষকে আগুনে পোড়িয়ে মারে, এর মধ্যে বিজ্ঞানি ব্রুনো ও গ্যালিলিউও ছিলেন।

এর পরিনতি হল ভয়ানক। সমগ্র ইউরোপ গীর্জার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল, খৃষ্ট ধর্মকে গীর্জার চার দেয়ালের মধ্যে বন্ধি করে নাস্তিকে পরিণত হল। তারা নিজেদের জীবন, সমাজ, রাষ্ট্র, শিক্ষা সবকিছুই বস্তুবাদের চাঁদে ঢেলে সাজাল। এভাবেই বস্তুবাদি শিক্ষা ব্যবস্থার জন্ম হল। আর এ শিক্ষারই উত্তরসুরি হচ্ছে আমাদের আধুনিক শিক্ষা তথা স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থা। আর বস্তুবাদের লক্ষ্যই হচ্ছে মানব জীবনকে উপভোগ করার কলা কৌশল শিখে নেয়া। জাতিকে ব্রড মাইন্ডেড করা, মানবিক উৎকর্ষ সাধন, মানব সেবা, স্রষ্টার আনুগত্য ইত্যাদি এ শিক্ষার উদ্দেশ্য নয়। এর একমাত্র উদ্দেশ্য ভোগের দুনিয়ায় দৌড় লাগাও, কে তোমার দেহের ধাক্কায় ছিটকে পড়ল, কে পদতলে পিষ্ট হল, কার মানবাধিকার লঙ্ঘন হল- তা তোমার দেখার দরকার নাই। তোমাকে দুনিয়ার ঐশ্বর্য্য অর্জন করতে হবে, ভোগের দরিয়ায় নিজেকে ভাসিয়ে দিতে হবে। জীবন একটাই মরে গেলে সব শেষ, কাজেই যতক্ষণ বেঁচে আছ খাও দাও স্ফুর্তি কর, আগামি কালের চিন্তা করার দরকার নাই। এ দর্শনের অনিবার্য পরিণতি আমরা বাস্তবে দেখতে পাই। দেশ দুর্নীতিতে চিরস্থায়ী চ্যাম্পিয়ানশিপ অর্জন করেছে।

এখন প্রশ্ন হল, এই দুর্নীতি কারা করে। বস্তুবাদি শিক্ষিতরা নাকি মাদরাসা শিক্ষিত হুজুররা? উত্তর সকলেরই জানা। আজ যদি প্রশ্ন করা হয়, সুদ, ঘুষ, আত্মসাধ, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মারামারি, খুনাখুনি, দলবাজি, মাগিবাজি, যিনা, পরকিয়া, ইভটিজিং, ধর্ষণ, সংখ্যালঘু অত্যাচার, সম্পদ দখল, ছিনতাই, প্রতারনা, দেশের সম্পদ লুটে বিদেশে পাচার ইত্যাদি অভিধানের যতসব নেতিবাচক কর্মকান্ড কারা করে, কলেজ ভার্সিটির আধুনিক শিক্ষিতরা নাকি মাদরাসা শিক্ষিত হুজুররা? এক বাক্যে সবাই উত্তর দিবে এসব কাজ আধুনিক শিক্ষিতরা করে, মাদরাসা শিক্ষিত হুজুররা এসবের ধারে কাছেও যায় না। তারা তো সদা সত্য বলে, সৎকাজ করে, মুনকার বা খারাপ কাজ থেকে নিজে বিরত থাকে ও অন্যদেরকে বিরত রাখার মধ্যেই তারা নিজের জীবন ব্যয় করে। এক কথায় অভিধানের যত ভাল কাজ সব তারাই করে। আর বস্তুবাদি শিক্ষার উৎস স্কুল কলেজ ও ভার্সিটিগুলি ঘরে ঘরে ঐশী সোহেল রানার মত খুনি, লোটেরা, ব্যভিচারী, নেশাখোর, চরিত্রহীন আত্মপুজারি তৈরি করছে। এতে তারা নিজেরাও সুখে নাই, জাহান্নামের দহনে দাহ্য হচ্ছে।

ইসলামী চিন্তাবিদগণ বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তক ইহুদি খৃষ্টানকেই দাজ্জাল বলে চিহ্নিত করেছেন। হাদীসে আছে দাজ্জালের জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে, যারা দাজ্জালকে প্রভু হিসাবে মেনে নিয়ে তার জান্নাতে থাকবে, এরা জাহান্নামের যন্ত্রনা ভোগ করবে। আর যারা দাজ্জালকে প্রত্যাখ্যান করে তার জাহান্নামে থাকবে এরা জান্নাতের শান্তি লাভ করবে। এর বাস্তবতা হল, আধুনিক শিক্ষিতরা পাশ্চাত্যের দাজ্জালকে প্রভু হিসাবে মেনে নিয়ে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে তারা দাজ্জালের বেহেশতে আছে। কিন্তু বস্তুত এদের মধ্যে যারা তাবলীগ, জামাত, পীর- তরিকত ইত্যাদি কোন ধর্মীয় সংগঠনের সাথে জড়িত ধার্মিক শ্রেণী- এই অংশটা ব্যতীত বাকীরা জাহান্নামের যন্ত্রনায় কালাতিপাত করে। এদের স্বামী কার সাথে, স্ত্রী কার সাথে, ছেলে মেয়ে কার সাথে শুইল কোন খুঁজ খবর থাকে না। এদের ছেলে মেয়েরা সমকামি, ব্যভিচারি, টাকার গরমে হরদম অসামাজিক কাজ করে যাচ্ছে। এদের ঘরে ঘরে জাহান্নামের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে।

পক্ষান্তরে আলেমরা দাজ্জালকে প্রভু মানে না, রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা পায় না, উপার্জন সীমিত, দারিদ্রতম জীবন যাপন করে। আর্থিক ভাবে এরা দাজ্জালের জাহান্নামে আছে কিন্তু তাদের ঘরে ঘরে স্বর্গ সুখ। তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধন খুব দৃঢ়। আলেমদের মধ্যে পরকিয়া, তালাক, স্ত্রী হত্যা ইত্যাদি হাস্যকর। তাদের ছেলে মেয়েরা প্রেম করেছে, ভেগে গেছে, নেশাখোর, চাদাখোর, যেনাখোর হয়েছে এমনটা প্রায় নাই বললেই চলে। কাজেই যে শিক্ষা ব্যবস্থা মুহাম্মদ (সাঃ)এর উম্মতকে দাজ্জালের উম্মত বানায়, মুসলমানকে ইহকালেই জাহান্নামের আগুনে দাহ্য করে পরকাল তো আছেই- এমন শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ও পরিবর্তন আজ ফরযে আইন হয়ে গেছে। আর আমরা তা করতে বদ্ধ পরিকর।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা- দেশের প্রধান শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দেয়ার অথরিটি কোথায় পাওয়া গেল? এর উত্তর হচ্ছে, যে শিক্ষা ব্যবস্থা আল্লাহ্‌র বান্দাকে শয়তানের বান্দা বানায়, রাসূল (সাঃ) এর উম্মতকে দাজ্জালের উম্মত বানায়, জাতীর সন্তানকে লোটেরা পশু বানায়, দেশের সম্পদ বাইরে পাচার করে জাতীর দুষমন বানায়, মুসলমানের সন্তানকে ইহকাল থেকেই জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ করতে থাকে, সে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনারাই বলুন, এর পরিবর্তন দরকার কিনা, সবাই উত্তর দিন। সবাই সমস্বরে চেঁচাল ‘হাঁ হাঁ অবশ্যি দরকার। মোজাহিদ আবার বলল, আল্লাহ্‌র বিধান মতে প্রতিটা মুসলিম সন্তান ইসলামের সম্পদ, জাতীর আমানত আমাদের আমানত। আর এই আমানত রক্ষা করা আমাদের জন্য ফরয। আল্লাহর বান্দাকে দাজ্জাল নিয়ে যাবে, তার মতাদর্শী করে উম্মত বানাবে আর আমরা বসে থাকব- তা তো হতে পারে না। বিনে যুজে নাহি দেব সুচাগ্র মেদেনি- কোন মুসলিম সন্তানকে দাজ্জাল নিতে চাইলে আমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবেই নিতে হবে। কাজেই বস্তুবাদি শিক্ষার সংস্কার করবেন কিনা, সবাই উত্তর দিন। সকলেই সমস্বরে বলল, অবশ্যি করব, অবশ্যি করব। মোজাহিদ বলল, আমরা তাতে বদ্ধপরিকর, ইংশাআল্লাহ।

আলিয়া মাদরাসাঃ এর কুফল আলোচনা করা হল।

ইংরেজের আদালতে অনুবাদক ও কেরানী তৈরির জন্য ১৭৮০ সালে আলিয়া মাদরাসার জন্ম হয়। এমন কুৎসিত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্ভবত পৃথিবীর কোথাও কোন দিন ছিল না। জন্মের পর থেকে এই বিষবৃক্ষ শুধু বিষ ফলই উৎপাদন করে যাচ্ছে, সুমিষ্ট আঙ্গুর কখনো উৎপাদন করতে পারেনি। বেশি আলোচনার দরকার নাই, আমি কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। তবে আমার আলোচনা থেকে চট্টগ্রাম, নোয়াখালি ও বরিশালের আঙ্গুলে গুনা কয়েকটা মাদ্রাসা বাদ যাবে। কারণ এ মাদরাসাগুলি সরকারি সিলেবাস অনুসরণ করে না, কওমি মাদরাসার পদ্ধতি অনুসরণ করে। তারা আরবি গ্রামারের অতিরিক্ত কিতাব পড়ায়, বুখারী মুসলিম খতম করে, ইলম ও আমলে এরা কওমি মাদারসার মতই। আর বাকি সব আলিয়া মাদরাসার অবস্থা যাচাইয়ের জন্য সকলের সামনে তুলে ধরছি।

১। মক্তব নাদিয়া নুরানী এগুলি কওমি মাদরাসার প্রবর্তিত কোরান শিক্ষা পদ্ধতি। যেসব ছাত্র নাদিয়া নূরানি পড়ে নাই শুধু আলিয়া মাদরাসায় লেখা পড়া করে কামিল পাশ করেছে- তাদের কোরান তেলাওয়াত শুদ্ধু নয়, তারা সুরা ফাতেহা এমনকি বিসমিল্লাহর অর্থ বলতে পারে না।

২। যারা কলেজে মাস্টার্স করেছে তারা নিজেদের পঠিত যে কোন ইংরেজির অর্থ না বলতে পারলেও অন্তত রিডিং পড়তে পাড়ে। কিন্তু বিস্ময় এখানে যে, কামিল শ্রেনিতে সিহাহ সিত্তাহ পাঠ্য রয়েছে অথচ কামিল পাশ কোন ছাত্র এর একটা লাইনও রিডিং পড়তে পাড়ে না অর্থ বলা তো দূরের কথা। এটা হাদিসের প্রতি একটা নিকৃষ্ট উপহাস।

৩। এরা সাধারণত আরবি কিছুই জানে না, কারণ তারা আরবি গ্রামার পড়ে না। আর এরাই পরবর্তিতে শিক্ষক হয়। কাজেই যেখানে শিক্ষকই জানে না সেখানে ছাত্র জানবে কোত্থেকে। এজন্যই এরা নকল নির্ভর হয়, কোরান হাদীস নকল করে।

৪। পৃথিবীর একমাত্র ভাষা আরবি যা গ্রামার ব্যতীত পড়া সম্ভব নয়। অথচ আলিয়া মাদরাসার গ্রামারে ত্রুটি রয়েছে। বর্তমানে যারা সিলেবাস প্রণয়ন করছে এরা নিজেরাই কিছু জানে না।

৫। এটা কোন শিক্ষা ব্যবস্থাই নয়। এটা ইসলাম শিক্ষার নামে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর সাথে প্রতারনা। এরা শুধুই শুধুই শিক্ষার নামে সরকার থেকে বেতন খাচ্ছে আর জাতীকে ধোকা দিচ্ছে । এজন্যই এখানকার শিক্ষকরা নিজেদের সন্তানদের আলিয়াতে পড়ায় না।

৬। এখন প্রশ্ন হতে পারে, আলিয়ার কিছু কিছু ছাত্র মেডিকেল ও ভার্সিটিতে চান্স পাচ্ছে, কেউ কেউ ভাল ইসলামী পণ্ডিত হচ্ছে কেমনে? এর উত্তর হল এরা প্রতিভা, এরা আলিয়াতে না গেলেও জঙ্গল থেকে উঠে আসতে পারত। এসব আলিয়ার অবদান নয়, মেধার সাফল্য। এর প্রমাণ হল, এসব ছাত্রের শিক্ষকদের যাচাই করে দেখেন ওরা কতটুকু জানে। আবার এইসব মেধাবী ছাত্ররা আধুনিক জ্ঞান ভাল জানলেও আরবি ও কোরান হাদিস কিছুই জানে না। কারণ আলিয়াতে এসব জানার সুযোগ নাই।

৭। কামিল শ্রেণীর ছাত্রদের পরিক্ষার পর ভাইবা বা মৌখিক পরীক্ষা হয়। যারা জানতে চান আলিয়ার ছাত্ররা কি শিখছে, কতটুকু শিখছে তারা ভাইবা বোর্ডে হাজির থাকলেই বুঝতে পারবেন।

তখন একজন দাঁড়িয়ে বলল, উস্তাদজি আমি একটা আলিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করি। আমি আমার নিজের মাদরাসার কিছুটা চিত্র চিন্তাশিল মানুষের বিবেচনায় তুলে ধরতে চাই- যাতে জাতী সিদ্ধান্ত নিতে পারে এই শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন কিনা। বহু পুরানো একটা কামিল মাদরাসা। এ মাদরাসায় আলিম ফাযিল স্তরের পাঁচজন প্রভাষক, ছাত্ররা এদের নাম দিয়েছে পঞ্চ পাণ্ডব, এরা সংখ্যায় পঞ্জ পাণ্ডব হলেও কৃতকর্মে কৌরব।এদের মধ্যে আছে দুর্যুধন, দুঃশ্বাসন, দুঃশীলা ও শঙ্খ মামা। এই নাম করণের কারণ হল, এরা পাঁচজনে একটা সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এই সিন্ডিকেটের কাজ হল প্রতিষ্ঠানটাকে যিম্মি করে, এক অক্ষর না পড়িয়ে বহুমুখী ধারায় অর্থ উপার্জন করা। এরা একেবারে মুর্খ, কিছুই জানে না, সুরা ফাতেহার অর্থ পর্যন্ত জানে না। কাজেই ছাত্রদের এরা কোন দিন পড়ায়ও না পড়াতে পারেও না। এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোন প্রিন্সিপালই মিয়াদ পুর্তি করে বিদায় নিতে পারেনি, সবাইকে তাড়ানো হয়েছে। কারণ কোন প্রিন্সিপ্যাল যখনই এই সিন্ডিকেটের অবৈধ অর্থোপার্জন রুখতে চেয়েছে এবং তাদেরকে পড়ানোর জন্য বাধ্য করতে চেয়েছে তখনই তারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, এভাবে সবাইকে তাড়ানো হয়েছে। তাদের কিছু অপকির্তির নমুনা পেশ করছি।

১।এ কৌরবদের কাজ পুর্ব থেকে স্কুলে কয়েকবার ফেল করা ছাত্রদের মোটা অঙ্কের চুক্তিতে পাশের নিশ্চয়তাসহ পরিক্ষা দেয়ানো।

2| e`jx cix¶v †`qv‡bv| 3|Kv‡iv Amy¯’Zv ev Ab¨ †Kvb Kvi‡b cix¶v †K‡›`ª Avm‡Z bv cvi‡j Ab¨‡K w`‡q cix¶v †`qv‡bv| 4| digwdjv‡ci mgq Qv·`i KvQ †_‡K †gvUv A‡¼i UvKv wb‡q ïay gvÎ †evW© / wek¦we`¨vjq dx UzKz Rgv w`‡q evKx UvKv c‡K‡U †Zvjv| 5| cix¶vi g~j LvZv I jyP LvZv wewµ Kiv Ges evwni †_‡K wjwL‡q G‡b †K‡›`ª Rgv †`qv| 6| Qv·`i‡K bv cwo‡q cix¶v cv‡ki Avk¦vm †`qv| Zvici cÖ‡Z¨K cix¶vw_©i wbKU †_‡K wbav©wiZ UvKv wb‡q bKj mieivn Kiv|

7|cÖvB‡fU wUDkwb bv co‡j cix¶vq †`‡L †bqvi ûgKx w`‡q Qv·`i eva¨ Kiv| Zvici Avjvc ও Mí-¸R‡e mgq KvUv‡bv| Zv‡`i‡K bv cwo‡q bK‡ji wbðqZv w`‡q nv‡Zi ‡jLv wVK Kivi civgk© †`qv Ges gvm †k‡l †eZb Av`vq Kiv|

৮| QvÎiv co‡Z PvB‡j Zviv Qv·`i‡K e‡j GZ cov †jLvi Kx `iKvi ? mvwU©wd‡KU wb‡Z G‡mwQm mvU©wUwd‡KU w`‡q †`e A_v©r cix¶vq bK‡ji e¨e¯’v K‡i †`qv|

৯| cÖ‡Z¨KwU †K›`ªxq cix¶vi mgq Zviv AsK, Bs‡iRx, Aviex mvwn‡Z¨i bKj mieiv‡ni Rb¨ mKj Qv‡Îi KvQ †_‡K wbw`©ó cwigvb UvKv DVvq| Avevi cÖ¨vKwU‡K‡ji Rb¨ Avjv`v UvKv, Avevi LvZvi Rb¨ Avjv`v UvKv| Avevi cÖ¨vKwUK¨vj LvZvi b¤^i †`qvi mgq mivmwi A_ev †gvevBj K‡i weKv‡ki gva¨‡g cÖ‡Z¨K LvZvi Rb¨ Avjv`v Avjv`v UvKv Av`vq| Gfv‡e cÖwZwU †K›`ªxq cix¶vq mKj Qv‡Îi KvQ †_‡K K‡qKevi K‡i UvKv Av`vq Kiv nq| Zvici gv`ivmvi †gwk‡b d‡UvKwc K‡i bKj mvd¬vB Kiv nq|

1০| দুয়েকজন wk¶K me©`v bKj mieiv‡ni KvR K‡i| cix¶vi c~‡e© wewfbœ gv`ivmvi QvÎiv Zvi mv‡_ †`Lv K‡i ev †gvevB‡j K_v e‡j ZLb †m Qv·`i KvQ †_‡K bM` ev weKv‡ki gva¨‡g †gvUv UvKv Av`vq K‡i cix¶vq bKj mvd¬vB K‡i|

১১। Rv‡njx hy‡Mi b¨vq ZvivI `~b©xwZi cÖwZ‡hvwMZv K‡i| †hgb GK wk¶K Av‡iKRb‡K e‡j-Avcwb Avi KZ eo bKjevR, Avwg g¨vwR‡óª‡Ui Dcw¯’wZ‡Z (Pzw³e×) Qv·K bKj w`‡qwQ- Zv cvi‡eb ? Ae‡k‡l AgyK g¨vwR‡óªU civRq †g‡b ej‡Z eva¨ n‡q‡Q ÒAvwg Nywi Wv‡j Wv‡j wKš‘ Avcwb †Nv‡ib cvZvq cvZvq|

12| gv`ivmvi mKj Avq-e¨‡qi wnmve †KŠie‡`I Kv‡Q| Zviv wb‡R‡`i †Lqvj-Lywk Abyhvwq wKQz e¨q K‡i evKx UvKv AvZ¥mvr K‡i|

13| cÖvBgvwi wb‡qvM cix¶v, wbeÜb cix¶v BZ¨vw` cÖwZ‡hvwMZvg~jK cix¶v¸wj‡Z cÖkœ AvDU K‡i j¶ j¶ UvKv evwYR¨ nq|

14| G †KŠie‡`i `vc‡U Ab¨vb¨ wk¶Kiv memgq AebZ _vK‡Z eva¨ nq, †KD cÖwZev` Ki‡j Zv‡K wec‡` co‡Z nq| G Qvov cov‡Z nqbv e‡j ZvivI †KŠie‡`i cÖwZ K…ZÁ _v‡K|

Áv‡bi evnvit

G †KŠieivB AÎ gv`ivmvi wmwbqi Aviex wk¶K| Zviv KL‡bv fvj QvÎ wQj bv, co–qv QvÎ wQj bv, bKj K‡i †Kvb iKg mvU©wUwd‡KU wb‡q‡Q| Zvici D³ cÖwZôvbwU †h‡nZz †Mvov †_‡KB `ybx©wZMÖ¯’ wQj weavq UvKv w`‡q PvKwi RywU‡q‡Q| এরা শুদ্ধ রুপে সুরা ফাতেহাটাও পড়তে পারে না, এর অর্থ পর্যন্ত জানে না।

2| G wk¶Kiv †h‡nZz wKQzB Rv‡b bv weavq Zviv mvavibZ K¬v‡m hvq bv wgjbvqZ‡b e‡m e‡m Mí-¸Re K‡i mgq KvUvq| wKš‘ QvÎiv evisevi WvKvi ci AMZ¨v K¬v‡m †M‡jI Qv·`i mv‡_ Mí K‡i ev ûgKx-agKx w`‡q K‡qK wgwbU KvwU‡q P‡j Av‡m| AMZ¨v QvÎiv eB Ly‡j ai‡j nqZ Zviv `y‡qK jvBb c‡o bx‡Pi Abyev`Uv e‡j P‡j Av‡m| †h‡nZz Zviv wKQzB Rv‡b bv-weavq Zviv cov‡ZI gRv cvq bv Avi QvÎivI gRv cvq bv| Gfv‡eB †Mv‡jgv‡j gv‡mi ci gvm eQ‡ii ci eQi P‡j hvq| GRb¨B AÎ gv`ivmvq PvKwi K‡i hviv Aem‡i †M‡Q Avi hviv eZ©gv‡b Av‡Q Zviv †KD GK_v ej‡Z cvi‡ebv †h, †m †Kvb w`b †Kvb cvV¨ eB `y‡qK cvZv cwo‡q‡Q। Gi cÖgvY n‡”Q G wk¶K ¸wj‡K hw` co‡Z ejv nq Zvn‡j Zviv Aviex wiwWs UzKzI co‡Z cvi‡e bv| Avi G Kvi‡YB †cŠ‡b GK kZvwã e¨vwcqv G gv`ivmvi †Kvb QvÎ fvwm©wU‡Z PvÝ †c‡q‡Q ev fvj PvKwi †c‡q‡Q ev fvj Av‡jg n‡q‡Q, Cgvg n‡q‡Q GgbwK †KvivbUv ï×iy‡c co‡Z m¶g Ggb GKwU QvÎI Lyu‡R cvIqv hvq bv|

3| QvÎiv eQ‡ii ïiy‡Z K¬vm Ki‡Z G‡m evievi WvKvWvwK K‡iI hLb wk¶K‡K K¬v‡m wb‡Z cv‡i bv-K¬vm nq bv ZLb Zviv K‡qKw`b †Nvivwdiv K‡i P‡j hvq, Avi Av‡m bv| ZLb wk¶Kiv ARynvZ †`Lvq QvÎ bvB cove Kv‡K? Gfv‡eB eQ‡ii ci eQi hy‡Mi ci hyM P‡j hvq| G gv`ivmvq GgbI wk¶K Av‡Q hvi PvKwi `yB hyM cywZ© n‡q †M‡Q A_P †m A`¨vewa GKwU A¶iI covqwb| GgbwK Zvi iywUb K…Z eB‡qi cÖ_g jvBbwUi Abyev` †m ej‡Z cvi‡e bv|

4| e¯‘Z Gme wk¶K †h‡nZz wKQzB Rv‡b bv weavq †jLvcov Kiv‡bvi gZ wPšZv-†PZbv ,gb-gvbwmKZv Zv‡`i †bB| Aó cÖni Zv‡`i †PZbvq GKwU welqB ïay fv®‹i n‡q _v‡K| Zv n‡jv †h †Kvb Dcv‡q A‡_v©cvR©b| Avi GRb¨ Zviv cov‡bvi wPšZv ev` w`‡q KiwbK‡`i Awdwmqvwj Kv‡Ri Rb¨ cÖwZ‡hvwMZvq wjß _v‡K| KviY Awdwmqvwj Kv‡R XyK‡Z cvi‡jB A‰ea DcvR©‡bi c_ †ei K‡i †bqv hvq|

4| bv cov‡bvi †cQ‡b Zv‡`i hyw³ n‡jv Kvwgj wUK‡j ZvivI wUK‡e| A_v©r D”PZi K¬vm¸wj‡Z QvÎiv fwZ© n‡q mvavibZ K¬vm Kg K‡i ,A‡b‡K wewfbœ K‡g© Xy‡K hvq| Zv †`‡L bx‡Pi K¬v‡mi wk¶Kiv K¬vm Kivq bv| KviY Dc‡ii †eZb eÜ bv n‡j bx‡Pi †eZb eÜ n‡e bv|

5| wk¶Kiv wgjbvqZ‡b e‡m Mí ¸Ri Ki‡Q, GK K¬v‡m QvÎiv gvivgvwi †j‡M †Mj| Aa¨¶ G‡m wR‡Ám Ki‡jb K¬vm UvB‡g †Zviv gvivgvwi KiwQm, GLb Kvi K¬vm ? QvÎiv ejj Agy‡Ki| ZLb wcÖwÝcvj †mB wk¶K‡K `yÕPvi K_v ejvi Kvi‡Y †m K¬v‡m G‡m Zvi bvg ejvi Aciv‡a Qv·`i Miyi gZ wcUvj| GK QvÎ K¬v‡m †Kvivb co‡Q, ZLb wk¶K e‡j DVj Ò‡nB †Pvw`i fvB Kx Km fvjv KBi¨v KÓ|

6| AwaKvsk mgq wk¶Kiv K¬vm bv wb‡q Qv·`i e‡j-P‡j hv, evwo‡Z P‡j hv| G c‡_ hv Zvn‡j †KD †`L‡e bv|

7| Giv †h‡nZz K¬vm Kivq bv, Mí-¸R‡e KvUvq, G‡`i Mí-¸Re ej‡Z Pig Akw&jj evK¨ wewbgq hv †ek¨v‡`iI nvi gvbvq| Giv wk¶K n‡jI e¯‘Z †h‡nZz g~L© ZvB G‡`i gyL ‡_‡K অশ্লিল K_vB AwaK †ei nq|

‰bwZK PwiÎt-

G‡`i AkwjjZvi welq wKQzUv GLv‡b Av›`vR Kiv hv‡e †h, G gv`ivmvi GKRb mv‡eK Aa¨‡¶i GKRb wkw¶Kvi mv‡_ ˆ`wnK m¤úK© wQj| D³ Aa¨¶ hLb †mB gwnjvi evmvq †hZ ZLb G cÖwZôv‡bi GKRb wk¶K evB‡i †_‡K cvnviv w`Z| GKw`b wcKwb‡Ki Rb¨ †mB gwnjv gv`ivmvq ivbœv KiwQj, †m nvUz Lvov K‡i wcwo‡Z e‡m wQj| ZLb Aa¨¶ mv‡ne mK‡ji mvg‡b gwnjvi wbwl× ¯’v‡b nvZ gvij| ZvB †`‡L mKj wk¶K nvm‡Z nvm‡Z G‡K A‡b¨i Dci jy‡UvcywU †L‡q coj , Avb›` Kij, ùzwZ© Kij, welqUv Zviv iMi‡M †hŠbZvq Dc‡fvM Kij| কিন্ত কেউ কোন প্রতিবাদ করল না বরং সবাই তা উপভোগ করল। সুতরাং হাজার হাজার ঘটনার মধ্যে এ ঘটনাটি উক্ত মাদরাসার শিক্ষকদের নৈতিক মানদণ্ড চিহ্নিত করে।

১।এখানকার বর্তমান উপাধ্যক্ষ প্রেম করে বহুদিন শ্রীঘরের অতিথি ছিলেন। কাজের মেয়ের পেট উচু করে টাকা দিয়ে খালাস পেয়েছেন।

৩। আবার বর্তমান অধ্যক্ষ অন্যের স্ত্রী ভাগিয়ে এনে তালাক ইদ্দত ব্যতিত বিয়ে করেছেন, সন্তান উৎপাদন করছেন ইত্যাদি আরো অসংখ্য ঘটনা আছে।

৪। এখন কথা হচ্ছে এ ধরনের শিক্ষকরা মিলনায়তনে বসে শিক্ষিকাদের সাথে কি ধরনের আলাপ করতে পারে যেখানে দুয়েকজন শিক্ষিকা রয়েছে বেশ্যার চেয়েও অধম। কারণ অশ্লিল কথা ব্যাতিত তাদের আলাপ জমে না, মজা পায়না। যেমন -

২। একজন শিক্ষক বলল অমুক আপা দুধ দিবা না? তখন আপাটি বলল- দুঃ ছাত্রদের সামনে কি যে বল না? সে বলল, আরে রাখ ছাত্র, ওরা কি বউয়ের দুধ খাবে না?

৩। ঐ আপা একদিন মিলনায়তনে বসে বলতেছে সহবাসের যে কি মজা তা জীবনেও পাইনি একদিন পেয়েছিলাম বাচ্চাটা হয়েছিল। অর্থাৎ তার স্বামী নপুংসক।

৪। একদিন এক বেদে এসে একটা গাছের শিকড় দিয়ে বলল এটি সাথে থাকলে কখনো সাপে দংশন করবে না, বাড়িতেও সাপ আসবে না। তবে শর্ত হচ্ছে যার গায়ে তিল আছে তার কোন ফায়দা হবে না। তখন শিক্ষকরা আলাপে মত্ত হল। এমন সময় সেই আপাটি বাইরে থেকে ‘কি ব্যাপার কি ব্যাপার’ বলতে বলতে এগিয়ে এল। একজন শিক্ষক ইংরেজি ব্রেস্ট এর আঞ্চলিক যে নামটা তা উল্লেখ করে বলল ‘যার বাম---তে তিল আছে তার বাম -- এর দুধ লাগবে এ ওষুধটা ব্যাবহার করতে। তখন উক্ত আপাটি বলল ‘আমার বাম---- তিল আছে। ব্যাস সবাই উচ্চসিত আনন্দে মুখর হয়ে উঠলো। এইরূপ নিত্যদিনের হাজার হাজার ঘটনা রয়েছে, এমন ঘটনা আছে যা বলা যায়না, বলা সম্ভব নয়----

তখন মুসান্না দাঁড়িয়ে বললেন, অশ্লীল কথা বাদ দেন অন্য কিছু বলার থাকলে বলেন। লোকটা বলল, আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না শুধু এইটুকু বলব যে, এই কয়েকটা লোক একটা প্রতিষ্ঠানকে যিম্মি করে রেখেছে অর্থোপার্জন করছে, তারা নিজেরাও পড়ায় না, পড়াতে পারে না এবং অন্যদেরকেও পড়াতে দেয় না। কারণ তাহলে অন্যের প্রভাব বেড়ে যাবে, তাদেরকেও পড়াতে হবে, তখন তাদের কর্তৃত্ব কমে যাবে। এভাবে যুগ যুগ ধরে চলেছে। এখানে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ছাত্র শিখতে এসে বঞ্চিত হচ্ছে। তারপর নকল করে পরিক্ষা বৈতরনি পেরিয়ে সার্টিফিকেট নামের অভিশাপের বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। এখন প্রশ্ন হল, এই যে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ছাত্রের জীবন নষ্ট হচ্ছে এর দায় কে বহন করবে? তাদের অভিশপ্ত জীবনের অভিশাপ কার উপর বর্তিবে?

সরকার ও সরকারের নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা অত্র প্রতিষ্ঠান দেখবালের দায়িত্বে আছে তাদের কি কোণ জবাবদিহিতা নাই, দায়বদ্ধতা নাই? যাই হউক আমি সরকার, দেশের বিবেকমান মানুষ ও জনগণের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলাম এ জাতীয় বেকার ও মুর্খ তৈরির এ কারখানা চলবে নাকি বন্ধ করা হবে, আবার এ শিক্ষা ব্যবস্থা চলবে নাকি সংস্কার করা হবে’ বলে সে বসে পড়ল। মোজাহিদ বলল, জাতি ধ্বংসের এসব কারখানা কখনোই চলতে দেয়া যায় না। যেসব চতুর্থ শ্রেণীর লোক শিক্ষকতার মত মহান পেশায় অবতীর্ণ হয়ে এমন ভয়ঙ্কর জুচ্চোরি করছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। কারণ অভিবাভকরা সন্তানদের মাদরাসায় পাঠায় দ্বীন শিখার জন্য, অথচ তারা কিছুই শিখতে পারে না। যেসব অভিশপ্ত শিক্ষক জনগনের টাকা খাচ্ছে কিন্তু ছাত্রদের কিছুই শিখাচ্ছে না তাদের বিচার অনিবার্য। আর এ জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন ঘটানো ফরয হয়ে গেছে।

দেওবন্দি ধারাঃ এর পরিণতি।

এটা ইসলামের সুচনা কাল থেকে চলে আসা উম্মাহর মুল শিক্ষা ধারা। এ শিক্ষাধারাটি দিল্লির ফিরিঙ্গি মহলের অধিবাসী নিযামুদ্দিন প্রনিত সিলেবাস অনুযায়ি, অথবা দরসে নিযামি বা নিযামিয়া সিলেবাসের অনুসরনে চলছে। উযির নিজামুল মূলক ১০৫০ খৃস্টাব্দে ইমাম গাযযালির তত্ত্বাবধানে যে সিলেবাস প্রণয়ন করেছিলেন- তাকেই দরসে নিযামি বলা হয়। তখনকার সিলেবাসে ধর্মীয় বিষয়াদি এবং তৎকালীন জ্ঞান বিজ্ঞান, চিকিৎসা, জোতির্বিদ্যা, ভুগোল ইত্যাদি সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত ছিল। উল্লেখ্য যে মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতি ও আবিষ্কার সপ্তম শতাব্দি থেকে এগার বা বার শতাব্দি পর্যন্ত জারি ছিল। তারপর মুসলিম বিশ্বে বন্ধাত্ব দেখা দেয়, আর ইউরোপে তখন চলছে গির্জা শাসনের মধ্যযুগীয় ববর্তার যুগ। কাজেই দরসে নিজামির জ্ঞান বিজ্ঞান ছিল সেই প্রাচিন মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞান। এভাবেই শতাব্দীর পর শতাব্দি অতিক্রম করে বর্তমান পর্যন্ত এসেছে।

কিন্তু ইংরেজ সরকার ভারত বর্ষের মাদরাসাগুলি বন্ধ করে দেয়ার পর আলেমগণ দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে দরসে নেজামি পুনপ্রবর্তন করেন। যেহেতু তাদের লক্ষ্য ছিল ইংরেজ শাসনাধীন মুসলিম জাতির ঈমান আক্বিদা রক্ষা করা এবং ইংরেজ বিরোধি সৈনিক তৈরি করা- এজন্যই এর সিলেবাসে ধর্মীয় বিষয় গুলি প্রাধান্য দেয়া হয়। তদুপরি সরকারি পৃষ্ট পোষকতা না থাকার দরুন জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনেক বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেয়া হয়। এভাবে ইলমুত তিব্ব, ইলমে কিমিয়া, ইলমে হিন্দাসা ইত্যাদি অনেক বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ পড়ে যায়। তারপরেও হাজার বছর আগের বিজ্ঞান সংক্রান্ত যেসব বিষয় পাঠ্য ছিল সেগুলি পরিবর্তন-পরিমার্জন না করার কারণে যুগের অনুপযোগি ও নিস্প্রয়োজনীয় হয়ে যায় এবং ক্রমে ক্রমে বাদ দেয়া হয়। এমনকি হেদায়াতুল হিকমত নামের একটি প্রাচীন বিজ্ঞান গ্রন্থ কিছুদিন পুর্ব পর্যন্ত মাদরাসায় পাঠ্য ছিল। তাছাড়া আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে বিজাতীয় দর্শন মনে করে পাঠ্যভুক্ত না করার কারণে মাদরাসা শিক্ষা হয়ে উঠেছে শুধুমাত্র পরকাল মুখী। ফলে মাদরাসা শিক্ষিতরা পারলৌকিক কিছু মাসলা-মাসায়েল ব্যতীত আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন ধারনাই রাখে না। এভাবে মাদরাসা শিক্ষাকে শুধু পরকাল মুখী করে দেয়া হয়েছে যা কোরআন হাদিসের নির্দেশের খেলাফ এবং ইসলাম ধ্বংসের রাজপথ তৈরি করার নামান্তর। কারণ ইরশাদ হচ্ছে-

وَإِذْ عَلَّمْتُكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَالتَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ - এবং যখন আমি তোমাকে গ্রন্থ, হিকমত, তওরাত ও ইঞ্জিল শিক্ষা দিয়েছি। (৫: ১১০)

وَأَنزَلَ اللَّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُن تَعْلَمُ ﴿النساء: ١١٣﴾ - আল্লাহ আপনার প্রতি ঐশী গ্রন্থ ও হিকমত অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। (৪: ১১৩

يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ ﴿آل‌عمران: ١٦٤﴾ - তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। (৩: ১৬৪)

এরুপ অসংখ্য আয়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে মুসলমানরা কিতাব তথা ধর্মিয় জ্ঞান এবং হিকমা তথা সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান শিখবে ও শিখাবে। আবার রাসুল (সাঃ) বলেন -

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَلِمَةُ الْحِكْمَةِ ضَالَّةُ الْمُؤْمِنِ فَحَيْثُ وَجَدَهَا فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا»

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন, হিকমতের কথা (বিজ্ঞানের কথা) মুমিনের হারানো সম্পদ, যেখানেই তা পাওয়া যাবে মুসলমান তার শ্রেষ্ঠ হকদার। এখানে রাসুল (সাঃ) বিজ্ঞান শিক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন।

সুতরাং বুঝা যাচ্ছে মাদরাসার সিলেবাসে ইসলামের অর্ধেক বাদ দিয়ে বাকী অর্ধেক গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ জ্ঞান-বিজ্ঞান বাদ দিয়ে শুধু ধর্মীয় বিষয় গ্রহণ করা হয়েছে, ইহকাল বাদ দিয়ে শুধু পরকাল গ্রহণ করা হয়েছে, অর্থাৎ খিলাফত বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা দাজ্জালের হাতে তুলে দিয়ে আলেমরা শুধু মাসলা- মাসায়েল ও বিবি তালাকের ফতোয়া নিয়েই পড়ে আছেন। কাজেই তারা ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন, সেই ভুল নিয়েই চলছেন এবং এটাকেই সঠিক মনে করছেন।

সুতরাং বর্তমান ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ছোড়ে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন ঘটাতে হবে। প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্রীয় খেলাফতের অধিনেই হউক বা আঞ্চলিক মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সহয়তায় হউক- আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখা যেমন সায়েন্স, আর্টস, কমার্স, চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি সকল শাস্ত্রের সকল সাবজেক্ট ইসলামে আত্বিকরন করে আরবি ভাষায় রূপান্তর করে উপমহাদেশের সকল কওমি ও আলিয়া মাদরাসায় পাঠ্য করে দেয়া হবে। তখন একজন দাঁড়িয়ে বলল, সকল সাবজেক্ট আরবি ভাষায় রুপান্তর করার মত দুঃসাধ্য কাজ করার তো দরকার নাই, আরব বিশ্বের সিলেবাসটা সরাসরি পাঠ্য করে দিলেই তো কাজটা পানির মত সহজ হয়ে যায়। আর তাতে কয়েকটা কল্যাণও সাধিত হবে। ১) শিক্ষা ব্যবস্থা এক থাকার দরুন এতদাঞ্চলের লোকেরা আরব দেশগুলিতে তাদের নাগরিকদের ন্যায় বৈষম্যহীন ভাবে অবাধ চাকরির সুবিধা পাবে। তাছাড়া আমাদের ছাত্ররাও তথাকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে। ২) ভাষাগত সমস্যা মিটে গেলে মুসলমানদের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে, ভ্রাতৃত্ব দৃঢ় হবে, খিলাফত প্রতিষ্ঠার কাজ অর্ধেক এগিয়ে থাকবে। আরো অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যাবে। তখন মোজাহিদ বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন, এ পদ্ধতিই হবে উত্তম।

আবার হুট করেই আধুনিক শিক্ষা আমুল পরিবর্তন করা সম্ভব না, এটা মহাপরিকল্পনার আওতায় থাকবে। প্রাথমিক অবস্থায় সিলেবাসে কিছু পরিবর্তন আনা হবে, নীতি নৈতিকতা ও ইসলাম শিক্ষা সম্পর্কে কিছু পাঠ্য করা হবে। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা হবে মক্তব ভিত্তিক। সেখানে শিশুরা কোরান শিখবে আর বাংলা ইংরেজি ইত্যাদির রিডিং শিখবে। বাবা আদমকে যেমন সর্ব প্রথম বস্তু নিচয়ের নাম শিক্ষা দেয়া হয়েছিল তদ্রুপ শিশুদেরকেও বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতী- প্রাণী ইত্যাদির নাম শিক্ষা দেয়া হবে। আট- দশ বছর পর্যন্ত শিশুরা প্রকৃতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে, বর্তমানের শিশুদের মত তাদের উপর পড়ার কোন চাপ দেয়া হবে না। তারপর কেন্দ্রীয় খেলাফতের সিলেবাস অনুযায়ী স্কুল কলেজের সিলেবাসে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা হবে। তা ক্রমান্বয়ে পঞ্চাশ বা একশত বছরে সম্পন্ন করা হবে- যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। ইংরেজি ভাষা উঠিয়ে দেয়া হবে। ইংরেজির স্থলে আরবি হবে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় ভাষা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম হবে আরবি। তবে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে দীর্ঘ কাল পর্যন্ত আরবি ও ইংরেজি পাশাপাশি চলতে থাকবে।

আর্থিক উৎসঃ

একজন প্রশ্ন করল, খিলাফত প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে সকল ছিন্নমূল, বাস্তুহারা, পতিতা, পথকলি ইত্যাদিদের পুনর্বাসন করতে এবং সকল মুস্তাদআফের ভাতা চালু করতে প্রথমেই যে বিশাল পরিমানের অর্থ প্রয়োজন-তার উৎস কী হবে? মোজাহিদ বলল, এ বিষয়টি ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত প্রত্যেকেরই জানা যে, ইসলামী রাষ্ট্রে সকল অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফিরিয়ে আনা হয়, ইসলামী রাষ্ট্রের এটা একটা প্রধান মূলনীতি। যেমন হজরত উমর ও দ্বিতীয় উমর এর উজ্জল দৃষ্টান্ত। কাজেই স্বাধীনতা উত্তর থেকে দেশের যে পরিমান সম্পদ বিদেশে পাচার হয়েছে, দেশের সম্পদ নিয়ে যারা বিদেশের মাটিতে ব্যবসা বানিজ্য, শিল্প-কারখানা, বাসা-বাড়ি বা অন্য কোন সম্পদের মালিক হয়েছে সেই সকল সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে- একটি টেরা পয়সাও ছাড় দেয়া হবে না। আবার দেশে যারা আয় বহির্ভুত সম্পদ জমিয়েছে, তাদের সম্পদের পাই পাই করে হিসাব হবে, যৌক্তিক আয় বহির্ভুত একটি টাকা পাওয়া গেলেও তা ফিরিয়ে আনা হবে। যদি কেউ লুকোচুরি করে বা বাধার সৃষ্টি করে তাহলে অবৈধ উপার্জনের জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

অনন্তর দেশে ও বিদেশে যে পরিমান অবৈধ সম্পদ আছে তা ফিরিয়ে আনলে এ দেশ সুইজারল্যান্ড হয়ে যাবে ইংশাআল্লাহ। কারণ দেশ বিদেশের অবৈধ সম্পদ এনে ষোল কোটি মানুষের মাঝে বন্টন করলে মাথা পিছু আনুমানিক দশ লক্ষ টাকা করে পড়বে। কিন্তু এই টাকা বন্টন না করে আমরা বাস্তুহারার পুনর্বাসন, মুস্তাদআফের ভাতা প্রদান, কৃষি খাতে ভর্তুকি প্রদানসহ দেশের উন্নয়ন মূলক খাতে ব্যয় করব। কাজেই আমাদের অর্থের কোন সমস্যা নাই, সমস্যা হল ইচ্ছার।

উল্লেখ্য যে, যারা অবৈধ সম্পদের অধিকারী- তারাও মুসলমান। আর কোন মুসলমানের সাথে দ্বন্ধ-কলহে জড়িয়ে যাওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। সুতরাং অবৈধ সম্পদশালীদের সুযোগ দেয়া হবে। তারা মোট অবৈধ সম্পদের এক তৃতীয়াংশ বা এক চতুর্থাংশ প্রথমেই পরিশোধ করবে। তারপর কেন্দ্রিয় খিলাফতের অধিনে বা রাষ্ট্রীয় ভাবে যেসব শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে সেগুলোতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদেরকে অংশিদারিত্বের সুযোগ দেয়া হবে। তখন তারা শিল্প কারখানায় বিনিয়োগ করে লভ্যাংশ থেকে আস্তে আস্তে কিস্তির মাধ্যমে অবৈধ টাকার পরিমানটুকু পরিশোধ করে দেবে। যেমন কারো কাছে বিশ লক্ষ অবৈধ টাকা থাকলে পাঁচ লক্ষ প্রথমে পরিশোধ করবে, তারপর ব্যবসা- বানিজ্য করে কিস্তিতে বাকী পনের লক্ষ টাকা পরিশোধ করবে। এভাবে মুসতাদআফের প্রাথমিক পুনর্বাসন ও ভাতা প্রদানের কাজ চলে যাবে। তারপর কেন্দ্রিয় খেলাফতের অধিনে ও রাষ্ট্রীয় ভাবে বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে, মুসলিম বিশ্বের প্রয়োজনীয় সামগ্রি নিজেরাই উৎপাদন করবে, বাহিরেও রপ্তানি করবে। ধনি দরিদ্র দেশ গুলোর বৈষম্য কমে আসবে, মরক্কো থেকে ইন্দোনিশিয়া পর্যন্ত এক দেশে পরিণত হবে, দেশের শ্রমিকরা উপযুক্ত মুজুরিতে অন্যান্য দেশে কাজ করবে- প্রচুর রেমিটেন্স পাঠাবে, বিত্তশালিদের সম্পদ থেকে খুমুস (পঞ্চমাংশ) গ্রহন করা হবে। কাজেই তখন অর্থের কোন অভাব পড়বে না, স্বচ্ছন্ধেই মুস্তাদআফ শ্রেণির প্রতিপালন করা সম্ভব হবে।

আবার বিত্তবান শ্রেণি স্বপ্রনোদিত হয়েই খুমুস প্রদান করবে। কারন মুস্তাদআফ শ্রেনি তাদের পিতা মাতা বা সন্তানের মত গন্য হবে। নিজেদের পিতা মাতা ও সন্তানকে যে ভাবে তারা প্রতিপালন করে, একই ভাবে তাদের টাকায় মুস্তাদআফ শ্রেণীও প্রতিপালিত হবে। এভাবে উভয় শ্রেণীর মধ্যে একটা আধ্যাত্নিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে। তাদের মৃত্যুতে পিতা মাতা ভাই বোন ও সন্তানরা যেভাবে কাঁদে একইভাবে মুস্তাদআফ শ্রেনিও কাঁদবে, দোয়া করবে, স্বরণ রাখবে, কৃতজ্ঞ থাকবে। কারণ তাদের টাকায় এরা প্রতিপালিত হয়েছে।

কাজেই বিত্তবান শ্রেণী ইহকালে পাবে প্রশংসা ও সুনাম আর পরকালে পাবে আল্লাহ্‌র পুরুস্কার, এটাই হবে তাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আর এটাই হবে সম্পদের সঠিক ব্যবহার। তদুপরি মুস্তাদআফ খাতে যারা সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেবে রাষ্ট্রীয় বড় বড় পদের জন্য তারা হকদার গন্য হবে, তাদের পরামর্শে রাষ্ট্র চলবে। কাজেই মুস্তাদআফ শ্রেণীর প্রতিপালন সমস্যা নয়, সমস্যা হলো ইচ্ছার ও সর্বগ্রাসি পুঁজিবাদী মনমানসিকতার বা প্রচলিত পাশ্চাত্য ধারার সমাজ ব্যবস্থার। কিন্তু যারা অবৈধ সম্পদ ফেরত দেবে না, পাহাড় পরিমান সম্পদের খুমুস দেবে না, মুস্তাদআফের জন্য বরাদ্দ দেবে না, তারা মানবতার শত্রু বলে গন্য হবে। তারা বিচারের মুখোমুখি হবে।

শ্রেণী সংগ্রাম নয় শ্রেণী স্বার্থঃ

একজন আলেম দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, এই কঠিন কাজ কে করবে? দুইশত বছরে ইংরেজ প্রবর্তিত সম্পূর্ণ আইন পাল্টে দেয়া, অবৈধ সম্পদ ফিরিয়ে আনা, বিত্তবানদের কাছ থেকে যাকাত উশর খুমুস উসুল করা, সকল ছিন্নমূল সর্বহারার পুনর্বাসন করা, মুস্তাদআফের ভাতা জারি করা, বিচার বিভাগে কিসাস দিয়ত প্রবর্তন করা, কৃষক শ্রমিক ও নারী অধিকার বাস্তবায়ন করা, ত্রিমুখি শিক্ষা ধারার আমুল পরিবর্তন ঘটানো- বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। অর্থাৎ সম্পূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাটাই পাল্টাতে হবে। আর এটা তো চাট্টিখানি কথা নয়, এই অসম্ভবকে কে সম্ভবে পরিণত করবে? আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এ কাজে এগিয়ে আসবে না, আওয়ামী লীগ ও বি এন পি- কে যদি বলি আপনাদেরকে আমরা ভোট দিব আপনারা এই খিলাফত ইশতিহারটা বাস্তবায়ন করবেন, তাহলে তারা সম্মত হবে বলে মনে হয় না। তাহলে এ অসাধ্যের সাধন কে করবে?

হাসান মুসান্না দাঁড়িয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, কেউ যদি এগিয়ে না আসে তাহলে অগত্যা আমাকেই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ আমাদের এই ইশতেহার বাস্তবায়নে কেউ এগিয়ে না আসার অর্থ হল, ইসলাম ও উম্মাহর মুক্তির কোন পথ নেই, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কোন উপায় নেই। আর তখন আমাকেই দায়িত্ব গ্রহণ করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। আপনারা সবাই যদি আমাকে ভোট দিয়ে সরকারে পাঠান তাহলে আমি আল্লাহ্‌র নামে শপথ করছি ইসলাম ও উম্মাহর মুক্তির জন্য এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করনীয় সবই আমি করব। তখন একজন কলেজ ছাত্র দাঁড়িয়ে বিস্ময় প্রকাশ করল, উস্তাদজি আপনি? আরো কয়েকজন দাঁড়িয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতে লাগল। হাসান মুসান্না হাসলেন, তারপর বললেন, তোমাদের এই বিস্ময় প্রকাশের কারণটা আমি বুঝলাম না, তোমরা কি আমাকে অযোগ্য মনে কর, নাকি রাজনীতির মত নোংরা কাজে লিপ্ত হওয়াটা আমার জন্য অসমীচীন মনে কর? যদি আমাকে অযোগ্য মনে কর তাহলে আমার আবেদন হচ্ছে, কাউকে যাচাই না করেই ব্যর্থ শনাক্ত করা বা পরীক্ষা না নিয়েই ফেল করিয়ে দেয়া অন্যায়। কাজেই তোমরা আমাকে ভোট দিয়ে সরকারে পাঠাও তারপর আমার যোগ্যতা যাচাই কর। তখনই তোমরা দেখতে পারবে রাষ্ট্র চালনায় আমি কি অন্যদের চেয়ে অযোগ্য নাকি সুযোগ্য। তবে এটুকু বলতে পারি, আমি তৃণমূল পর্যন্ত দলীয়করন করে পেশি শক্তির রাজনীতি করব না, আমি মানুষকে নিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করব।

তোমাদের তো একজন উমর বিন আব্দুল আজিজ দরকার। আমিই হব এক বিংশতির উমর বিন আব্দুল আযিয। আমিই হব প্লেটোর সেই সংজ্ঞায়িত দার্শনিক রাজা। এখন বল তোমাদের বিস্ময়ের কারণ কি? সবাই বলল, আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না যে, আপনি এ কাজে এগিয়ে আসবেন। তিনি বললেন, কেউ এগিয়ে না আসলে আর তোমরা চাইলে অবশ্যি আমি আসব। তখন সবাই না’রা তুলল, আনন্দে নাচতে লাগল, ভীষণ হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। মুসান্নার মায়া হল, আহ হা রে, এরা মুক্তি চায় কিন্তু কেউ মুক্তির দুত হিসাবে আবির্ভুত হয় না, সবাই ক্ষমতায় গিয়ে লোটেরা স্বৈরাচারী হয়ে যায়। সে হাত বাড়িয়ে তাদেরকে থামিয়ে বলল, আমরা খেলাফত ইশতেহার ঘোষণা করেছি, এখন কোন রাজনৈতিক দল যদি তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে তাহলে আমরা তাদেরকে ভোট দিয়ে মসনদে পাঠাব। কিন্তু কেউ এগিয়ে না আসলে আমি স্বয়ং প্রার্থি। আর তোমরা হলে আমার কর্মি। তোমরা জনগণের মাঝে আমাদের ইশতিহার প্রচার করবে।

আমাকে ক্ষমতায় পাঠালে আমি আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে আমার ইশতিহার ঘোষণা করছি- ১। আমি সকল ছিন্নমূলের পুনর্বাসন করব, পতিতাদের পুনর্বাসন করব, সকল মুস্তাদআফের জন্য রাষ্ট্রীয় ভাতা নিশ্চিত করব। ২) বিচার বিভাগে ইসলামী দিয়ত বা ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করব। তখন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি, পরিবার ও নারীদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে না। ৩) নারী শিশু শ্রমিক ও কৃষক অধিকার গুলি প্রতিষ্ঠা করব। ৪) চিকিৎসা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা প্রবিধান করা হবে। নারী শিশু ও বৃদ্ধের জন্য আলাদা হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। ৫) আধুনিক শিক্ষা সংস্কার করা হবে, আলিয়া ও কওমি মাদরাসায় জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখা পাঠ্যভুক্ত করা হবে। প্রথমাবস্থায় আরব বিশ্বের সিলেবাসটাই প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর পাঠ্যভুক্ত করা হবে। উজবেকিস্থান থেকে আরাকান পর্যন্ত একটা আঞ্চলিক জোন গঠন করে এ অঞ্চলে তা পাঠ্য করা হবে। এতে আরব বিশ্বের সাথে একটা ভাষাগত সমতা অর্জিত হয়ে যাবে। তখন এ অঞ্চলের লোকেরা আরব জগতে সমঅধিকার নিয়ে সমতার ভিত্তিতে চাকরি সুবিধা পাবে। এভাবে শিক্ষার মাধ্যমেই অর্ধেক খেলাফত প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। তারপর মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে কেন্দ্রীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা হবে ইংশাআল্লাহ।

আর আমাদের এই খিলাফত ব্যবস্থায় কোণ শ্রেণী সংগ্রাম নাই বরং একে অন্যের সহযোগী। এখানে বিত্তবানদের টাকায় মুস্তাদয়াফ শ্রেণী প্রতিপালিত হবে। কাজেই বিত্তবানরা রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারনি পর্যায়ে নেতৃত্বে থাকবে, তারাই হবে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। ফলে তারা স্বতঃস্ফুর্তভাবেই এগিয়ে আসবে। যারা ক্ষমতা ও অর্থের জন্য ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনিতি করে তারা বিশ্ব বাণিজ্য ও বিশ্ব কর্তৃত্বের দিকে এগিয়ে যাবে। কাজেই আমাদের মধ্যে কোন শ্রেণী সংগ্রাম নাই, সবাই নিজ নিজ স্বার্থেই খিলাফত প্রতিষ্ঠা করব। আবার ইসলাম ও উম্মাহর মুক্তির জন্য এবং আরাকান, কাশ্মির, ফিলিস্তিন, জিংজিয়াং ইত্যাদি অঞ্চলের মজলুম মুসলমানদের মুক্তির জন্য কেন্দ্রীয় খেলাফত বা মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমিই হব উম্মাহর জন্য এক বিংশতির উমর বিন আব্দুল আযিয। এই হল আমার অঙ্গিকার। এখন আপনাদের মতামত প্রকাশ করুন।

তখন সবাই চিৎকার করতে লাগল, হাঁ হাঁ আমরা আপনাকে ভোট দিব, খিলাফত প্রতিষ্ঠা করব, এছাড়া আমাদের গত্যন্তর নেই, ইসলাম ও উম্মাহর মুক্তির দ্বিতীয় কোন পথ নেই। কেন্দ্রীয় খেলাফত ছাড়া মুসলমানরা তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মুসান্না বললেন ‘ইসলামী সরকার ও খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে বিভিন্ন ইসলামী দল ও ফেরকার মাঝে ঐক্য স্থাপন করতে হবে। কাজেই আপনাদের দুটি দায়িত্ব। ১) প্রত্যেকেই ঐক্যের শপথ করবেন, তারপর স্ব স্ব ফেরকাকে ইসলাম ও উম্মাহর স্বার্থে, খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যের উপর বাধ্য করবেন, যারা আসতে চাইবে না শরীয়া আদালত গঠন করে তাদের বিচার করতে হবে। ২) আমাদের খিলাফত ইশতিহারে যে মানবাধিকারের কথা বলা হয়েছে সেগুলি জনগণের মাঝে ব্যপক প্রচার প্রসার করতে হবে। তাহলে জনগনই স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে।

এখন সবাই শপথ গ্রহন করুন’ বলে তিনি তেপায়া থেকে নিচে নামলেন। তারপর এক জনের হাত ধরলেন, সে আরেকজনের হাত ধরল, সে আরেকজনের, এভাবে সবাই একে অন্যের হাত ধরে দাঁড়াল। তখন মুসান্না শপৎ বাক্য পাঠ করালেন, ‘আমরা আল্লাহ্‌র নামে শপৎ গ্রহণ করতেছি যে, সকল ফিরকা বিভক্তি মিটিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হব, যারা ঐক্যে আসবে না তাদেরকে ধ্বংস করব। কারণ ফিরকাবাজি হারাম ও কুফুরি, এই ফিরকা বিভক্ত ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংস করে দিচ্ছে বিধায় ফিরকাবাজদের ধ্বংস অনিবার্য। ইসলাম ও উম্মাহর মুক্তির লক্ষ্যে আমরা কেন্দ্রীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করব। আমরা মরক্বো থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এক দেশ এক জাতিতে পরিণত হব। আল্লাহ তুমি আমাদেরকে কবুল কর, দাজ্জালের কবল থেকে আমাদের মুক্তি দাও, আল্লাহুম্মা আমিন। তারপর তিনি বললেন, ‘এবার আপনারা কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ুন, আল্লাহ সহায়।

বিষয়: রাজনীতি

৭৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File