আসন্ন সিটি কর্পোরেশন ইলেকশন কোন পথে জামায়াত?

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ রেজাউর রহমান ওয়াকিল ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৩:৩১:৩৭ রাত

কিছুদিন আগে ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশন ইলেকশনের তফসিল ঘোষনার আগে থেকেই সারা দেশে এইবারের বড় দলগুলোর প্রার্থী নিয়ে যখন জল্পনা কল্পনা চলছিল তখন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী সংঘটন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেলিমুদ্দিন সাহেবকে প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে সর্বমহলে সফলভাবে এক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেক দিন ধরে ঘরোয়াভাবে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও এই আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এরকম ঘোষনা ঝিমিয়ে যাওয়া জামায়াত সমর্থকদের ব্যাপকভাবে আন্দোলিত করে তুলে। এখানে বলে রাখা উচিত জামায়াতের একটি বড় সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে যারা মূল দলের সাথে সম্পৃক্ত না হলেও তারা বিভিন্ন কারণে জামায়াতকে সমর্থন করে। এরা কর্মী বা রোকন না। কারণ কর্মী আর রোকনেরা কোন সময়ই ঝিমিয়ে যান নি। এই সমর্থকরা স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতের এই সিদ্ধান্তকে। সবাই এবার বলেছে জামায়াতের উচিত তার বাহুবল দেখানো সবাইকে, বিশেষ করে তাদের জোটের বি এন পিকে। যারা অনেকদিন ধরে সিদ্ধান্তহীনতা আর হীনমন্যতার জন্য সাধারন মানুষের কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়ছিল। তারা জামায়াতের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে খুব কম কর্মসূচীতে যা জামায়াত কর্মী, সমর্থকদের অনেক দিনের আক্ষেপ। এই আক্ষেপটা এতটাই তীব্র আকার ধারন করেছিল যে, অনেক নেতা কর্মী দাবী করছিল যে জোট থেকে বের হয়ে আসার জন্য। এই সময় এসে জামায়াত দূর্দান্ত একটি রাজনৈতিক চাল খেলেছে। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘোষনা দিয়েছে প্রার্থীর। এতে করে যেমন অনেক দিন ধরে মিডিয়াতে পরিকল্পিতভাবে অবাঞ্চিত জামায়াত পেয়েছে হেডলাইন আর জোট সংগী বি এন পি হয়েছে বিব্রত। এক ঢিলে তারা অনেকগুলো পাখি মেরেছে। হঠাৎ সরকারো অনেকদিন পর চ্যালেঞ্জিং একটা রাজনৈতিক প্যাচে পড়েছে। কারণ, যে সময়ই জামায়াত আলোচনায় আসে, রাম, বাম, নাস্তিক, সেকুলার সবাই জামায়াত নিষিদ্ধের দাবী তুলে, আর সরকার পড়ে চাপে। শুধু তাই না, জামায়াতের কারনেই সরকার তাদের সাজানো খেলার ছক আবার নতুন করে কষে। এই অবস্থায় যখন মিটিংয়ে বসলেন বেগম খালেদা জিয়া জোট নেতাদের সাথে তখন অখ্যাত দলেরা সেখানে হাস্যকরভাবে জামায়াত প্রতিনিধিকে পুরানো ক্যাসেটের মত সরকারের সাথে সমঝোতার ভুয়া অভিযোগ করে বিব্রত করার চেষ্টা করলেন। খুব সুন্দরভাবে তাদেরকে রাজনৈতিক জবাব দিয়ে প্রিয় হালিম সাহেব এক রকম বিজয়ীর বেশ নিয়ে ফিরে আসলেন। এখানে লক্ষ্যনীয় যে বি এন পি প্রথমে বিনা আলোচনায় তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষনা করতে চেয়েছিল, কিন্তু জামায়াতের এই স্মার্ট পলিটিক্সে পড়ে ডিফেন্সে গিয়ে আরো পরে তাদের প্রার্থী ঘোষনা করে। কিন্তু এর মধ্যেই আদালতের স্থগিতাদেশের কারনে নির্বাচন হলো ভন্ডুল।

এখন উপরের এত আলোচনা ও ধারাবিবরনী থেকে আমরা কয়েকটা ব্যাপারে উপসংহারে আসতে পারি।

*জামায়াত আগামী অন্য সিটি ইলেকশনে সর্বনিম্ন একটিতে নিশ্চিত মনোনয়ন পাচ্ছে।

*বি এন পি আবারো জামায়াতকে মুল্যায়ন করা শুরু করবে।

* বিশ দলের অন্যান্য ভূইফোড় সংঘটনরা বুঝতে পেরেছে যে দিনের শেষে বি এন পি আর জামায়াতই বিশ দলের মূল চালিকা শক্তি।

*সরকারকে আবার জামায়াতের এই নতুন চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্বকে মোকাবেলার ব্যাবস্থার দুঃচিন্তা করতে হবে।

*মিডিয়া এখন থেকে জামায়াতের ভোটের রাজনীতিতে ফেরার প্রতিটি খবর অবচেতন মনে বিরোধিতার নামে প্রচার করে জামায়াতের একটি প্রচারনা চালিয়ে দিবে।

* জামায়াতের দুর্দান্ত প্রার্থীগুলোকে আগামীদিনের নেতা হিসেবে মানুষ চিনে নিবে।

*জামায়াত যে এখনো শক্তিশালী একটি দল তা আবারো মানুষ দেখবে।

এগুলো হচ্ছে জামায়াতের অর্জন এইবারে রাজনৈতিক চালে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা যে শয়তান তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ক্ষতিসাধনের জন্য। তাই জামায়াতকে খুব সাবধান থাকতে হবে অনেক বিষয়ে। সেগুলো পরবর্তী লিখায় আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। আজ এ পর্যন্তই। মাআসসালামা।

বিষয়: রাজনীতি

৬৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File