প্রসংগঃ সাইয়েদ আবুল আলা মউদুদী(রঃ) এর অজানা কিছু তথ্য

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ রেজাউর রহমান ওয়াকিল ০৫ আগস্ট, ২০১৫, ০৬:৪১:৩৫ সকাল

আমি আমার এই জিবনে অনেক আলেম এর লেখা পড়েছি, লেকচার শুনেছি, জীবনির ডকুমেন্টারি দেখেছি আলহামদুলিল্লাহ্‌। এখন ব্যাপারটা হল এদের মধ্যে একজন বা দুইজন প্রিয় হওয়াটা খুব সাভাবিক। সবারই একটা বিশেষ পছন্দ থাকে। আমার ও আছে। মরহুম আছেন এবং জীবিতও আছেন।

প্রথমে আসি যিনি এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তার বেপারে। তিনি হলেন বিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত মুজাদ্দিদ আল্লামা আবুল আলা মউদুদী (র)। কেন?

কারন একটাই, ইসলামকে তিনি যে ভাবে চিনেছেন। তিনি ইসলামকে আমারদের গতানুগতিক ধারা তে চেনেন নাই। তিনি ইসলামকে ছোট মন দিয়ে ধারন করেন নাই। আপনাদের বুঝার জন্য একটু বলি, আমরা জানি ইসলাম একটা ধর্ম, অন্যান্য ধর্মের মত, যেখানে শান্তি আর শান্তি, ভালো আর ভালো, মানে পুরাপুরি অন্যান্য ধর্মের মতই। কিন্তু মউদুদি (র) বললেন এইটা একটা পরিপূর্ণ জিবনব্যবস্থা। ইসলাম শুধু আমাকে মদ খাওয়া নিষেধ করে বসে থাকেনি, কি করলে আমি মদ ছাড়তে পারব সেটা শিখিয়েছে। ইসলাম আমাদের মুসলিমদের একটা আলাদা জাতি হিসেবে পরিচিত করিয়েছে।

মউদুদি(র) কে অনেকে ভুল বুঝেছেন বা এখনো বুঝেন, কিন্তু কোণ সময় তার লেখা পড়ার সাহস করেন না। ভাই আমাদের দেশে অনেকেই দেখতে পারে না মউদুদি(র) কে। অথচ পাকিস্তানি রা তাকে বলে আরবী লেভেল এর আলেম মানে হল অনেক উচু মানের আলেম। সউদিরা তাকে বলে শায়েখ, ইন্দোনেশিয়া তে তাকে উস্তাদ ছাড়া ডাকা হয় না, আপনারা যারা মাদানি তারা হয়তবা জানেন না যে মউদুদি(র) ছিলেন মদীনা ইউনিভারসিটির একজন প্রতিষ্ঠাতা। বেশির ভাগ প্রস্তাবনা ছিল তার।উনি ছিলেন Muslim World League (রাবিতা আল আলাম আল ইসলামি) এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। উনি ইসলামিক ইউনিভারসিটি অব মদীনার শরীয়া ডিপার্টমেন্ট এর দায়িত্তেও ছিলেন। উনার নামাযে জানাযা পড়িয়েছিলে এখনকার সময়ের মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে নন্দিত আলেম ইউসুফ আল কারজাবি। বাদশাহ নাজ্জাশির পর কাবার চত্তরে উনার নামাযে জানাযা হয়েছে। উনি মনে হয় এই দুনিয়ার একমাত্র আলেম যিনি সাহস করে নিজের কুরানের তাফসির একটি মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশ করেছেন। এইটা কিন্তু খুব সাহসী কাজ। উনি তাবলীগ জামাতের প্রশংসা করতেন উনার লিখাতে। উনার প্রেরনাতেই মাওলানা আবুল হাসান আলি নদভী (র) তাবলীগ এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস (র) সাথে দেখা করেন এবং খুব উৎসাহ প্রদান করেন। উনার বই বিভিন্ন ৪০টি ভাষাতে অনুদিত হয়েছে। তিনি একটা দল প্রতিষ্ঠা করেছেন যেটা মনে হয় একমাত্র দল যাদের কোনো দায়িত্তশীলদের মুখ থেকে অন্য কোনো ইসলামি দলের বিরুদ্ধে কথা বলার কোন প্রমান নাই। পাকিস্তানে জামায়াত ইসলামি কে তাদের আর্মির পর সবচেয়ে শৃং্খলাবদ্ধ দল বলা হয়। মউদুদি(র) ছিলেন কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি প্রথম তাদের বিরুদ্ধে লিখেছেন। তার লেখনি পাকিস্তান ভাগকে করেছিল তরান্নিত। তিনি আজীবন ইসলামি হুকুমত কায়েমের চেষ্টা করেছেন। গিয়েছেন ফাসির প্রকষ্টে। তবুও হার মানেন নাই। উনিই মনে হয় দক্ষিন এশিয়ার প্রথম রাজনিতিবীদ যিনি দলের প্রধানের পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। উনি ছিলেন দলের লোকদের জন্য নিবেদিত। মঞ্চে গুলি চলার সময় বলেছিলেন " আমি বসে পরলে দাড়িয়ে থাকবে কে?"। উনি ছিলেন রাসুল (স) এর বংশধর। খাজা মইনুদ্দিন চিশতির(র) নাতি। তিনি ইসলামি অর্থনীতি সম্পরকে দিয়েছেন খুব পরিষ্কার ধারনা। তিনি মনে হয় একমাত্র লোক যিনি তার দল কে শিখাতে পেরেছিলেন যে মুসলমানদের আদর্শ শুধু মাত্র রাসুল(সাঃ) যেকারনে জামায়াতে ইসলামির প্রতিষ্ঠাতা হওয়া সত্তেও তার কোন জন্ম বা মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয় না।

আমি আল্লাহতালার কাছে দুয়া করি আল্লাহ যেন তার এই বান্দা কে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন এবং উনার মাধ্যমে শুরু হওয়া জামায়াত কে ইসলাম কায়েম করার সৌভাগ্য দান করেন। আমিন।

বিষয়: রাজনীতি

১৭৪৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

333947
০৫ আগস্ট ২০১৫ রাত ০৯:৫৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মাওলানা মওদুদির অপরাধ একটাই। তিনি ইসলাম কে মসজিদ,মাদ্রাসা আর খানকাহ থেকে বের করে মানুষের কর্ম ময়দানে নিয়ে এসেছিলেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File