যেই নৈতিকতা পিতা মাতার চাইতে মোটর সাইকেলকে বড় বানায়

লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:০১:০৬ রাত



ছেলের আগুনে বাবার মৃত্যু, মায়ের হাতে শিশুপুত্র খুন, ছেলের বঁটির আঘাতে মা খুন !!

পত্রিকার পাতায় এই নিউজগুলো ইদানিং এত বেশি বেশি দেখা যাচ্ছে যে, ব্যপারগুলো যেনো খুবই সাধারণ হয়ে গেছে!!

অথচ কিছুদিন আগেও এসব নিউজ আমাদেরকে হতবাক করে দিতো, বাকরুদ্ধ করে দিতো।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে ৪৩ শিশু মা-বাবার হাতে হত্যার শিকার হয়। ১০টি পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে অবশ্য ছেলেমেয়ের হাতে কত মা-বাবা খুন হলেন, এ তথ্য নেই। তবে প্রতিদিনের সংবাদপত্র বা টেলিভিশন চ্যানেলের খবর বলছে, এ সংখ্যাটিও নেহাত কম নয়।

পৃথিবীতে সবচেয়ে কষ্টকর জিনিস নাকি বাবার কাঁধে পুত্রের লাশ। যখন দেখি সামান্য পরকীয়ার কারনে বাবা তার শিশু পুত্রকে কুপিয়ে লাশ বানিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখছে। তখন পুত্রের লাশটাকে বাবার কাছে কষ্টের বদলে মনে হয় পরকীয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো এক শত্রুর লাশ!!!

কোন জিনিস পিতার কাছে পুত্রকে শত্রু বানিয়ে দিলো?

কোন জিনিস মমতাময়ী মায়ের কাছে তার আদরের শিশু সন্তানকে শত্রু বানিয়ে দিলো?

কোন জিনিস পুত্রের কাছে তার জন্মদাতা পিতা-মাতাকে শত্রু বানিয়ে দিলো?

কোন জিনিস সন্তানকে সামান্য মোটর সাইক্যালের জন্য তার পিতাকে হত্যাকারী হতে উৎসাহিত করলো?

এই জিনিসের সন্ধানে চলছে গবেষণার পর গবেষণা। সব গবেষণার ফলাফল অপরিবর্তিত ও সবার জানা। প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা। পারিবারিক শিক্ষা। সামাজিক সচেতনতা। এটাই একমাত্র সমাধান।

এই গবেষককুলের নৈতিকতার নমুনা কেমন? তারা আসলে কোন নৈতিকতার বিস্তার চান??

তারা চান পাঠ্যপুস্তক থেকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা সম্বলিত গদ্য পদ্য নির্মুল করে, ধর্মীয় শিক্ষার উপর স্টীমরোলার চালিয়ে, পর্দা-হিজাবের বিরুদ্ধে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে, পর্দানশীল নারীদের মিথ্যা জঙ্গি আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার হয়রানি করে, মিথ্যা জঙ্গিবাদের অভিযোগ চাপিয়ে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার দাওয়াত দানকারী সংগঠন (যেমন- ছাত্রীসংস্থা) নিষিদ্ধ করে আজব এক নৈতিকতার বিস্তার ঘটাতে চান!!!

নৈতিকতার প্রধান উৎপত্তিস্থল যেই ধর্ম, সেই ধর্মকে নির্মুলের মাধ্যমেই তারা তাদের আজব নৈতিকতার বিস্তার ঘটাতে চান!! ‘ধর্মই নৈতিকতার মূল ভিত্তি’ এটা যে সেকুলার গবেষককুল জানেন না তা নয়; তারা নিজেদের অন্ত:সারশুন্য সেকুলার আদর্শকে সমুন্নত রাখতেই কেবল জেনেও এটাকে অস্বীকার করছে!!

ধর্ম ছাড়া নৈতিকতার কোনো ভিত্তি আছে কি?? ধর্মবিহীন নৈতিকতা মানুষকে শিক্ষা দেয় কোনটা ভালো কোনটা খারাপ। কিন্তু এতটুকু শিক্ষাই কি কোন ব্যাক্তিকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে যথেষ্ট?? সে যদি জানতে পারে যে ভালো কাজের জন্য তাকে পুরষ্কৃত করা হবে আর খারাপ কাজের জন্য তাকে শাস্তি দেয়া হবে। তাহলে সে অবশ্যই ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত হবে আর খারাপ কাজকে ঘৃণা করবে।

যে কোনো ধর্ম বিশ্বাস মানুষকে ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করে আর খারাপ কাজের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে। কারন যেকোনো ধর্ম বিশ্বাসী ব্যাক্তি মাত্রই বিশ্বাস করে যে সকল কাজের জবাবদিহীতা তাকে মৃত্যুর পর করতে হবে। ভালো কাজের জন্য তাকে পুরষ্কৃত করা হবে আর খারাপ কাজের জন্য শাস্তি দেয়া হবে। আর এই বিশ্বাসই তাকে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে।

ধর্মকে বাদ দিয়ে এমন আজব নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা আর ফুটো নৌকায় পানি সেচ করা একই কথা।

ধর্মকে বাদ দিয়ে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার এই ব্যর্থ চেষ্টা সেকুলার বুদ্ধিজীবিকুল যতদিন করবে ততদিন পত্রিকার পাতার এসব শিরোনাম বাড়বে বৈ কমবে না।

বিষয়: বিবিধ

২৩৮৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

377815
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৩৫
স্বপ্নচারী মাঝি লিখেছেন : আরও অনেক কিছু দেখার বাকী। সবে তো শুরু হলো পাঞ্জেরী!!
377822
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১২:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যেমন আমাদের শিক্ষা তেমন তার ফলাফল।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File