অর্থনৈতিক উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২০ এপ্রিল, ২০১৭, ০৭:১০:৪৭ সন্ধ্যা

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই শিক্ষার প্রসার মোটামুটি সন্তোষজনক হলেও সাধারণ শিক্ষার মতো এই শিক্ষা ব্যবস্থারও মান নিয়ে দেখা দিতেছে নানা প্রশ্ন। যেহেতু এটা প্রধানত হাতেনাতে শিক্ষার বিষয়, তাই এই ব্যাপারে আপস করা চলে না। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, দেশে ৪৬১টি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। তার মধ্যে ভালো মানের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৩০টি। অবশিষ্ট চার শতাধিক প্রতিষ্ঠানের মান নিয়ে খোদ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারাও সন্দিহান। কারণ, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি ও ওয়ার্কশপ নেই। ল্যাবরেটরি থাকলেও তাতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ। নেই অন্যান্য অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধাও। এইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকটও বিদ্যমান। এটাও মানসম্মত কারিগরি শিক্ষার অন্যতম বড় প্রতিবন্ধক। বর্তমানে আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার হার প্রায় ১৪ শতাংশ। সরকারের লক্ষ্য আগামী ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার ২০% এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০%-এ উন্নীত করা। সরকারের এই লক্ষ্যমাত্রা যথার্থ। কিন্তু যদি এই শিক্ষার মান উন্নত না হয়, তা হলে এইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও একসময় বেকারত্ব তৈরির কারখানায় পরিণত হতে পারে। এই শিক্ষার সিলেবাস নিয়মিত সংস্কার তথা যুগোপযোগী করা অপরিহার্য। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা অনুযায়ী সাবজেক্ট বা বিষয়ের মধ্যেও আনা দরকার বৈচিত্র্য। দেশে বর্তমানে তরুণ তথা কর্মক্ষম জনসংখ্যার আধিক্যে যে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড চলছে, তার সদ্ব্যবহারে কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ন উভয়টাই জরুরী। আমাদের মনে রাখা দরকার, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ও মান বৃদ্ধিতে জোর দেওয়ার কারণেই বাংলাদেশের চেয়ে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপির হার আজ অনেকগুণ বেশি। অথচ ১৯৭০ সালে এই দেশগুলির জিডিপি আমাদের প্রায় সমকক্ষ ছিল। কারিগরি শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা যে হয় না, তা নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যেমন ঠিকমত খরচ করা হয় না, তেমনি অর্জিত হয় না লক্ষ্যমাত্রাও। আমরা এই শিক্ষার উন্নয়নে এইসব প্রতিবন্ধকতা আর দেখতে চাই না। তরুন সমাজ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় সু শিক্ষিত হলে একদিকে যেমন বেকারত্বের হার কমবে তেমনি সমাজে সচ্ছলতার হার বেড়ে যাবে।

বিষয়: বিবিধ

১০৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File