'সকলের' নেতৃত্ব দিতে চান? তবে 'সকলের' থেকে বড় হোন_সব দিক থেকে, অথবা নেতৃত্বের আকাংখ্যা ত্যাগ করুন।

লিখেছেন লিখেছেন শিআনে আলী আলাইহিস সালাম ১৯ জুলাই, ২০১৪, ০৭:৩২:২০ সন্ধ্যা

বর্তমান কালের সকল আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থের মুসলিমঃ

অন্যের দ্বারা শোষিত না হয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব দিতে চান? অবশ্যই সেটা করতে পারবেন। শুধু অল্প কিছু পরিবর্তন আনতে হবে নিজেদের মধ্যেঃ

1) "জ্ঞ্যানার্জন প্রতিটি মুসলিম নরনারীর জন্য ফরয" এটা অন্তর দিয়ে উপলব্দি করুন।

2) 'নারী দের বেশী লেখাপড়ার দরকার নেই, ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়ে স্বামীর টাকা পয়সার হিসেব নিকেশ রাখতে পারলেই হবে" এই ফতোয়া যে দেবে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।

3) "মাদ্রাসায় কুরআন হাদীস ছাড়া অন্য দুনিয়াবী লেখাপড়া হারাম" এই ফতোয়া যারা দেবে তাদের কে সামাজিকভাবে বয়কট করুন।

4) প্রতিটি মাদ্রাসা কে সরকারী বোর্ড এর আওতায় নিয়ে আসুন। কুরআন, হাদীস, ফেকাহ, আক্বায়েদ, উসুল, এগুলো কে শুধুমাত্র 'ইসলামীক স্কলার' হতে আগ্রহী দের জন্য রেখে, ইন জেনারেল, বিজ্ঞান, ব্যাবসায় শিক্ষা, রাস্ট্রবিজ্ঞান, সহ দুনিয়াবী উন্নত হতে হলে যা যা বিষয়ে শিক্ষিত হওয়া দরকার; সব বিষয় মাদ্রাসায় অন্তর্ভূক্ত করুন।

5) জেনারালাইজড করা গ্রুপ এ যারা লেখাপড়া করবে তাদের উপর অযথা উসুল, ফেকাহ হাদীস শাস্ত্র ইত্যাদির বারতি চাপ না দিয়ে, বরং স্বল্প পরিসরে ধর্মীয় অনুশাষন যথাঃ নইতিকতা, মানবিকতা, অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা, শালীনতা;এগুলো শিক্ষা দিন।

6) যারা এবসলিউট ধর্ম শিক্ষা সহ একিসাথে জেনারালাইজড শিক্ষা ও গ্রহন করতে ইচ্ছুক এবং উভয়ের লোড নেয়ার মতো নলেজ রয়েছে, তাদের জন্য সম্পূর্ন আলাদা পরিসরে কম্বাইন্ড এডুকেশন ডিপার্টমেণ্ট করে ক্লাশ এর ব্যাবস্থা রাখুন।

7) একক এবং কম্বাইন্ড উভয় ধর্মীয় ডিপার্টমেণ্ট এর শিক্ষার্থী দের অপর মাজহাবের প্রতি সর্বউচ্চ শ্রদ্ধা এবং সহনশীলতা সহ (হত্যার ফতোয়া তো দুরে থাক) ভূলক্রমেও কখনো ভিন্য মাজহাবের প্রতি তাকফির না করার কঠোর শিক্ষা দিন।

8) যতদিন ভিন্য কোনো ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে অফিশিয়াল ভাষা হিসেবে প্রতিশঠা না হচ্ছে, ততদিন, ইংরেজী ভাষার উপর সর্বউচ্চ গুরুত্ব দিন।

9) ধর্মীয় অনুশঠানাদি তে দাওয়াত দেয়ার সময় "প্রীয় মুসলিম তউহিদী জনতা" বাক্যটি না বলে, "ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকল ভাই, বোন, বন্ধু দের" বাক্যটি ব্যবহার করুন এবং অনুশঠানাদি তে ভিন্য ধর্মের সমালোচনা না করে, নিজ ধর্মের মহত্ম, মানবতা, নইতিকতা, অপর ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক, সহিস্নুতা ইত্যাদী আলোচনা করুন।

10) ভিন্য ধর্মের মানুষ দের কাফির ইত্যাদি বলা থেকে বিরত থাকুন এবং সবাই কে 'মানুষ' হিসেবে ট্রীট করুন

11) নিজ এবং অপর সকল ধর্মের মানুষ দের 'ভালো' এবং 'খারাপ' কর্মের ভিত্তিতে মুল্যায়ন করুন।

12) মুসলিম সংখ্যাঘরিস্ট দেশে সংখ্যালঘুদের জীবনযাপনে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি এলাকা ভিত্তিক ভাবে মুসলিম দের নিজের দায়ীত্ব ও ফরয দায়বদ্ধতা হিসেবে সাংগঠনিক ভাবে হাতে তুলে নিন।

13) সংখ্যালঘুদের উপর অন্যায়কারীর সর্বউচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে, মসজিদ কমিটি নিজে ক্ষতিগ্রস্থ এর পক্ষে থানায় মামলা করুন। এবং তাদের উপর বড় ধরনের কোন হামলা, ইত্যাদি ঘটলে ইসলামী দল গুলো নিজেরা তাদের পক্ষে হরতাল এর ডাক দিন।

14) শুধু ধর্ম অবমান ই নয়, বরং যেকোনো রকমের বিচারবহীর্ভূত হত্যাকান্ড, দুর্নীতি, ধর্ষন, ডাকাতি, গুম ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামী দলগুলো সোচ্চার থাকুন।

15) কথায় কথায় বাস্তবতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ফতোয়াবাজি না করে, বাস্তবতাকে কিভাবে ধর্মীয় অনুশাষনের আওতায় রেখে চালিয়ে নেয়া যায় তা ইজতিহাদ(রিজনিং) এর মাধ্যমে চালিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিন। (উদাহরনঃ একসময় ফতোয়া ছিলো, ইংরেজী শিক্ষা হারাম, ছবি তোলা হারাম, টিভি হারাম। কিন্তু বর্তমানে এগুলো হাস্যকর ব্যপার)

16) ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রী তে মাদ্রাসার কম্বাইন্ড ডিপার্টমেণ্ট থেকে বের হওয়া শিক্ষিত লোক দের ধর্মীয় অনুশাষনের আওতায় ছবি পরিচালনায় এগিয়ে আসুন। কারন, মিডিয়ায় অনুপস্থিতি মানে, দুনিয়া থেকেই এবসেণ্ট থাকা। আপনী পিছিয়ে পড়বেন।

17) মাদ্রাসার উপরে বর্নীত জেনারালাইজড এবং কম্বাইন্ড পড়ুয়া থেকেই প্রতি বছর অন্তত ২০% ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট, প্রভাষক, রাজনীতিবিদ, পুলিশ অফিসার, মিলিটারির/স্পেশিয়াল ফোর্স এর বিভিন্য শাখার অফিসার, ইণ্টালিজেন্স অফিসার, ব্যাংকার, ব্যাবসায়ী ইত্যাদিতে অংশ গ্রহন নিশ্চিত করুন।

18) দুনিয়ার যেকোনো জায়গায়, যে কারো দ্বারা, যেকোনো ধর্মের মানুষের প্রতি কমিউনাল জুলুম এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন।

19) ইসলাম এর মহত্ব, উদারতা, মানবিকতা ইত্যাদি বোঝানর জন্য অন্য ধর্মের সমালোচনা আর অতীতের কেচ্চা কাহিনী নির্ভর নয়, বরং তা' নিজেদের কে ই উদার, মানবিক, শান্তিবাদিতা, নীতিবান, উন্নত, সকল সেক্টরে শিক্ষিত করার মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিন।

20) আপনাদের কথা, কর্ম, আচার, ব্যাবহার সবকিছুর উত্তম বাস্তবিক প্রয়োগ এর মাধ্যমে সকল ধর্মের মানুষ এর মনের মধ্যে এই নিশ্চয়তা প্রদান করুন যে, আপনারা দেশ এর, দুনিয়ার দুনিয়ার ক্ষমতায় আসলে অন্যদের উপর জুলুম হবেনা, স্বেচ্ছাচারিতার বলি হবেনা কেউ, বরং সকলে মিলে মিশে উন্নত হবে সকল ক্ষেত্রে, জ্বী সকল ক্ষেত্রে, এবং সবাই শান্তিতে থাকবে।

>>> যে কোনো দেশে ম্যাক্সিমাম ২০০ বছর উপরের পয়েণ্ট গুলো কে সর্বউচ্চ গুরুত্বের সাথে কর্মে পরিনত করুন, সে দেশ এর লিডারশিপ আপনাদের হাতেই থাকবে।

বিষয়: বিবিধ

১১১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File