পিতা-মাতার হক্ব ১৪টি

লিখেছেন লিখেছেন মীর ফরিদ ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৮:৪৪:২২ সকাল

আসসালামু আ’লাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। ঈদ মোবারক। আশা করি ভাল আছেন সবাই। আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সবার সাথে শেয়ার করতে চাই। তা হলো, আমরা সবাই আমাদের আব্বা আম্মকে ভালবাসি। আবার অনেকেই আছেন যারা তাদের আব্বা আম্মাকে কতটা ভালবাসেন তা বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে তুলে ধরে প্রকাশ করে থাকেন। কিন্তু আমদের উপর আমাদের আব্বা আম্মার হক কতটা এবং কি কি তা কি আমরা সবাই জানি বা জানলেও তা কি আমরা মানি? আসুন দেখে নি আমরা আমোদের দায়ীত্ব ও কর্তব্য কতটুকু পালন করে যাচ্ছি।

পিতা মাতা মরে গেলে তাদের হক্ব শেষ হয়ে যায় না। বরং সন্তান মরে যাওয়ার পর পিতা মাতার হক্ব শেষ হয়।

মোহাক্কেক ওলামায়ে কিরাম কোরআন হাদীস রোমন্থন করে পিতা মাতার হক্ব নির্দিষ্ট করেছেন ১৪টি। তাদের জীবিত অবস্থায় ৭টি এবং তারা মারা যাওয়ায় পর ৭টি।

পিতা মাতার জীবদ্দশায় যে ৭টি হক্ব পালনীয় তা হলোঃ-

১। আব্বা আম্মাকে মনে প্রাণে মোহাব্বত করা (ভালবাসা)।

২। আব্বা আম্মাকে শ্রদ্ধা করা।

৩। আব্বা আম্মার আদেশ পালন করা (শরীয়ত বিরোধী হুকুম ব্যতীত)।

৪। আব্বা আম্মার অনুকরণ করা (শরীয়ত সম্মত সকল বিষয়)।

৫। আব্বা আম্মার ভরণ পোষণ করা সহ খেদমত করা (সেবা করা)।

৬। শুধু ভরণ পোষণ ও খেদমত করলেই হবে না, তাদের সুখ স্বাচ্ছন্দের ব্যবস্থা করা।

৭। নিয়মিত ভাবে আব্বা আম্মার সাথে দেখা করা।

পিতা মাতার মৃত্যুর পর যে ৭টি হক্ব পালনীয় তা হলোঃ-

১। আব্বা আম্মার ঋণ পরিশোধ করা।

২। আব্বা আম্মার অছিয়ত পূরণ করা।

৩। আব্বা আম্মার রূহে নেকী পৌঁছানো (ইছালে সাওয়াব)।

৪। আল্লাহর কাছে আব্বা আম্মার গুনাহ মাফ চাওয়া (তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করা)।

৫। আব্বা আম্মার বন্ধু বান্ধব ও আব্বা আম্মার শুভাকাংখী আত্মীয় স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

৬। আব্বা আম্মার শুভাকাংখী আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের সাধ্যমত সাহায্য সহযোগীতা করা।

৭। মাঝে মাঝে আব্বা আম্মার কবর জিয়ারত করা।

Please visit and see:

https://www.youtube.com/watch?v=KD7l39tzP18

বিষয়: বিবিধ

৮৫৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383910
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকাল ০৯:১৬
হতভাগা লিখেছেন : একজন স্বামী এসব পালন করতে গেলে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম হতে পারবে না ।

এটা
'' তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম'' এই হাদিসের বরখেলাফও।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০১:৫২
316775
মীর ফরিদ লিখেছেন : যে স্ত্রী তার স্বামীকে কোরআন হাদীস মতে চলার কারণে অধম মনে করবে সে স্ত্রী মুমীনা হতে পারে না। আর একজন মুমীন কখনো স্ত্রীকে খুশী করার জন্য কোরআন হাদীসের আদেশ পালনে বিরত হয় না বা সেই স্ত্রীর কাছে উত্তম হওয়ার ধার ধারে না। আপনি দয়া করে ভিডিও টি দেখুন।

"চরিত্রহীন (তাক্বওয়াহীন) সুন্দরী স্ত্রীর চেয়ে চরিত্রবান (মুত্তাক্বী) কালো কুৎসীৎ দাসী বান্দিও তোমাদের জন্য উত্তম"... এটাও হাদীস।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সকাল ০৯:৪৫
316777
হতভাগা লিখেছেন : যতই তাক্বওয়াধারী মহিলা বলেন না কেন শাশুড়ীর প্রতি স্বামীর (মায়ের প্রতি ছেলের ) দ্বায়িত্ব পালন করাকে উত্তম বলে মানে না - এটা ধ্রুব সত্য।

এক হাদিসে আছে '' মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত''

আরেক হাদিসে বলা আছে ''তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম''

আসলে যত প্যারা সব পুরুষ মানুষদের - যে দিকেই যায় সেই দিকেই কাটে ।

শাশুড়ী-বউয়ের কনফ্লিক্ট যে কত বড় প্যারা সেটা বোঝা যায় - আল্লাহ তায়ালা যেসব নবী ও রাসূলদের বর্ণনা পবিত্র ক্বুরআনে করেছেন সেটা হতে বোঝা যায় যে নবী রাসূলদের সাথে তাদের স্ত্রী ও মা এট এ টাইম এক সাথে থাকেনি ।

আল্লাহ তায়ালাই সবচেয়ে ভাল জানেন যে এই কম্বিনেশন কতটা বিঘ্ন ঘটাতে পারে তার বানী প্রচারের জন্য তার মনোনীত বান্দার উপর । নবী রাসূলেরা হচ্ছেন আল্লাহর স্পেশাল বান্দা ।

আমরা সাধারণ মানুষেরা নবী রাসূলদের মত স্পেশাল নই , ফলে এ মহা প্যারা আমাদেরকে ফেস করতেই হয়।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০৮:০৩
316790
মীর ফরিদ লিখেছেন : ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি আল্লাহ তায়া'লা জন্নাত হারাম করেছেন। (১) সর্বদা মদ পানকারী, (২) পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান, (৩) পরিবারে বেপর্দার সুযোগ দানকারী (দায়ূছ)। [নাসাঈ, মিশকাত, হাদীস নং-৩৬৫৫]

কোন স্ত্রী তার স্বামীকে উত্তম বলে প্রত্যয়ণ না করলে সে স্বামী জান্নাতে যাবে না বা জান্নাত হারাম হবে- এমন কোন হাদীস বা কোরআনের আয়াত আমি আজ পর্যন্ত পাইনি। আপনার জানা থাকলে এবং আমাকে জানালে আমি কৃতজ্ঞ হব। ধন্যবাদ।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ০৯:০৪
316791
হতভাগা লিখেছেন : স্ত্রী উত্তম সার্টিফিকেট না দিলে যে জান্নাতে যেতে পারবে না এমনটা আমিও শুনিনি। কিন্তু উক্ত হাদিসটা তো আর মিথ্যে না ।

আমার কথা হচ্ছে - কোন পুরুষ মায়ের সেবা করতে গেলে স্ত্রী কাছে সে আর উত্তম থাকে না । এটা চিরন্তন সত্যগুলোর অন্যতম। হোক তা শরিয়তের পরিপন্থি। সংসার কি শরিয়ত মোতাবেক চালায়/চালাতে দেয় স্ত্রীরা কিংবা চালাতে পারে পুরুষেরা? নেভার ।

তাই সংসারে যাতে অশান্তির আগুন না বাড়ে সেজন্য বাধ্য হয়ে পুরুষ মানুষ ব্যালান্সের কাজ করে । দুনিয়ার জীবনে শান্তি না পেলে আখেরাতের পূঁজি সংগ্রহ করতে অনেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

আর ছেলের শান্তির জন্য এবং সে যেন বউয়ের কাছে উত্তম বিবেচিত হয় সেজন্য মাও ছেলেকে ছাড় দেয় । হাজার হোক মা তো ! সন্তানকে তো সে আর নিজের পায়ের তলা থেকে সরাতে পারে না যতই তার প্রতি অবহেলা দেখাক না কেন।

এরকম সূবর্ণ সুযোগ কি কোন স্ত্রী হারাতে চায় ? ওদের তো ''গাছেরও খায় আবার তলারও কুড়ায় '' এরকম অবস্থা হয় স্বামীর সংসারে।
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাত ১০:১৪
316801
মীর ফরিদ লিখেছেন : একদিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জুমার খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে উঠছিলেন। তিনি মিম্বারের প্রথম ধাপে পা রাখার পর বলে উঠলেন ‍
আমীন
, দ্বিতীয় ধাপে পা রাখার পর বলে উঠলেন
আমীন
এবং তৃতীয় ধাপে পা রাখার পরও বলে উঠলেন
আমীন
। জুমার নামাজ শেষে সাহাবীরা (রাঃ) বিনয়ের সাথে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আজ আপনি মিম্বারে উঠার সময় তিন তিনবার আমীন বলেছেন। আমাদেরকে এর রহস্য জানাবেন কি?
তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, যখন আমি মিম্বারে উঠছিলাম তখন জিবরাঈল (আঃ) আমার সামনে এসে বলল, আল্লাহ পাক বলেছেন, যে
মুহাম্মাদ
নাম উচ্চারণ বা শ্রবণ করার পর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
পাঠ করল না, তার জীবন ধ্বংস হউক। তখন আমি বললাম আমীন। তারপর ২য় ধাপে উঠার সময় জিবরাঈল (আঃ) বলল, যে ব্যক্তি তার পিতা মাতা উভয়কে অথবা তাদের যে কোন একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েও জান্নাত অর্জন করতে পারলনা তার জীবন ধ্বংস হউক। তখন আমি বললাম আমীন। তারপর ২য় ধাপে উঠার সময় জিবরাঈল (আঃ) বলল, যে রমজান মাসের রোজা পেয়েও তার জীবনের গুনাহ মাফ করাতে পারল না, তার জীবন ধ্বংস হউক। তখন আমি বললাম আমীন।

ওমর খৈয়ামের লেখনী থেকে বেরিয়ে এসেছিলঃ-

নগদ যা পাও হাত পেতে নাও
বাকীর খাতা শূণ্য থাক
কি লাভ শুনে দূরের বাদ্য
মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক


সূতরাং যে ব্যক্তি জান্নাত অর্জনকে দূরের বাদ্য বলে মনে করে তার কথা আলাদা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File