স্বতন্ত্র দাবী করে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই।

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১১ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৩৩:৩৮ দুপুর

স্বতন্ত্র শব্দের আভিধানিক অর্থ নিরপেক্ষ, স্বাধীন, নিজের অধীন ইত্যাদি। অধিকাংশ মানুষ শেষ শব্দটিকে একটু বেশি আপন করে নেয় অর্থাৎ 'নিজের অধীন' মানে হলো কারো অধীনে নয় এমন। এই শব্দকে আপন করার অনেক লাভ।

স্বতন্ত্র শব্দটি আগে জাতীয় নির্বাচন আসলে বেশি ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয় বলে এখন সব সমই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু স্বতন্ত্র। রাজনীতির বাহিরে আজকাল ধর্মতেও অনেক লোক স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ কিংবা স্বাধীন বলে পরিচয় দিতে শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন থেকে অনেকে দূরে থেকে সেখানেও নিজেকে স্বতন্ত্র হিসেবে তুলে ধরছেন।

তবে আমার আজকের এই পোস্ট নির্বাচন কিংবা রাজনীতি কেন্দ্রিক নয়। মূলত যারা স্বতন্ত্র দাবি করে অন্যের সমালোচনা করতে পছন্দ করেন তাদের উদ্দেশ্য করে লিখা।

আমার একান্ত অভিমত মানুষের স্বতন্ত্র হওয়ার কোন সুযোগ নেই। অবশ্যই কোন না কোন ধর্ম, রাজনৈতিক /সামাজিক দলের সাথে থাকতেই হচ্ছে। সরাসরি না থাকলে পছন্দ থাকবেই। ধর্মীয় ভাবনায় হয়তো মসজিদ যাবে নয়তো মন্দির, রাজনৈতিক ভাবনায় ভোট দেবে হয়তো আম পাতা, কলা পাতা, কাঠাল পাতা নয়তো জাম্বুরা পাতায়। সামাজিক উন্নয়ন কিংবা সমাজ সংস্কারের জন্য কোন না কোন সংগঠন বা সমিতির সাথে জড়িত হতে হচ্ছে, সরাসরি জড়িত না হলেও মানসিক সমর্থন থাকছেই।

এবার আসি মূল কথায়, শুরুতেই বলেছিলাম স্বতন্ত্র শব্দের আভিধানিক একটি অর্থ 'নিজের অধীন' আর তা আপন করে নিলে লাভবান হওয়া যায়। প্রথম লাভ হচ্ছে মুখের জোর। নিজের অধীন ব্যক্তিটি বলবে আমি কারো অধীনস্থ নয়, আমি মুক্ত, আমাকে কেউ খবরদারি করতে পারেনা, আমি কারো কর্মী নয় ইত্যাদি। আরেকটা লাভ হচ্ছে এই ব্যক্তিটি অন্যের সমালোচনা সহজেই করতে পারে। কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক দলের কর্মপদ্ধতি কিংবা কর্মীর কাজ নিয়ে সমালোচনা সহজেই করা যাবে। সে নিজেকে বলবে আমিতো কোন দলের না, আমিতো কোন সমিতির না।

আমার একান্ত মতামত হচ্ছে স্বতন্ত্র দাবিদার ব্যক্তিটি সবাইকে ঠকাচ্ছে। সে নিজেকে স্বতন্ত্র দাবি করে নিজের দায়বদ্ধতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। এক্ষেত্রে যারা ধর্মীয় ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ দাবি করেন তারা ধর্মীয় রীতিমতো খলিফার দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র হলেও দেশ সেবার সুযোগ আছেই কিন্তু সমাজ সেবার ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি স্বতন্ত্র বলে পরিচয় দিচ্ছে সে এই সমাজকে ধোকা দিচ্ছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে অন্যের সমালোচনা করে মুক্তি পেতে চাচ্ছে। আসলে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব কারণ মানুষ সামাজিক জীব।

আব্দুল্লাহ আল শাহীন

শারজাহ,ইউএই

বিষয়: বিবিধ

৮৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File