বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমানের লাশ বিকৃত করেছে বার্মার নাসাকা বাহিনী

লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ০৭ জুন, ২০১৪, ১০:১৮:৫৯ রাত



বার্মার Border Guard Police (BGP) কর্তৃক বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমান কে হত্যা করায় নাফ নদী এখন উত্তাল। কোন কারন ছাড়াই হঠাৎ করেই বার্মার নাসাকা বাহিনী বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমান কে হত্যা করল। বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমান প্রথমে নাসাকা বাহিনীর গুলিতে আহত হন। তারপর বার্মিজ পশুরা উনাকে টেনে হেচড়ে বার্মার অভ্যন্তরে নিয়ে যেয়ে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে। বার্মিজ পশুরা বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমান কে শুধু বিনা চিকিৎসায় হত্যাই করে নি উনার মৃতদেহ পর্যন্ত বিকৃত করেছে। একজন সেনার কাছে প্রতিপক্ষের সেনার মৃতদেহ একধরনের আমানত সরুপ। যে কোন পেশাদার সৈনিক কখনই প্রতিপক্ষের মৃতদেহের অসম্মান করবে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধার সময় বর্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীও অনেক মুক্তিযোদ্ধার লাশ সামরিক মর্যাদায় দাফন করেছিলো। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নামে অনেক সমালচনা থাকলেও উনারা কখনই শহীদ কোন মুক্তিযুদ্ধার লাশ বিকৃত করেছে এই অভিযোগ নাই। কিন্তু বার্মার নাসাকা বাহিনী বিডিআরের সুবেদার মিজানুর রহমান কে বিনা চিকিৎসায় শুধু হত্যাই করল না উনার মৃতদেহ পর্যন্ত বিকৃত করল। তারপর নাসাকা বাহিনী শাহাদাত বরণকারী মিজানুর রহমানের লাশ হস্তান্তরের স্থান হিসেবে খুব দুর্গম একটি স্থান বেছে নেয়। বিডিআরের খবর হয়ে গেছে এত দুর্গম স্থান থেকে মিজানুর রহমানের লাশ টা নিয়ে আসতে। বার্মা চাইলেই কিন্তু পারত মিজানুর রহমানের লাশ টা বিডিআরের ক্যাম্পের কোন কাছাকাছি সুবিধজনক কোন স্থানে ফেরত দিতে। আসলে বর্বর বৌদ্ধ জাতির কাছ থেকে আমরা এর থেকে আর কি ভাল আশা করতে পারি ?

কালকে যুগান্তর পত্রিকায় দেখলাম বার্মা হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে সীমান্তে জড়ো করছে। এদের কে নাকি বার্মা মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করবে এবং বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধ শুরু হলে রোহিঙ্গাদের দিয়ে বার্মিজ সেনাবাহিনীর মাল আনা নেওয়া করবে। চিন্তা করে দেখুন বার্মিজরা কতটা বর্বর জাত। খুব দুঃখ লাগল যখন দেখলাম বাংলাভাষী বৌদ্ধ পেইজগুলি বার্মিজ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে পোস্ট দিচ্ছে ও রোহিঙ্গাদের সাথে বার্মার বৌদ্ধরা ঠিক আচরণ করছে সেই কথাই বলছে। রোহিঙ্গাদের দূর্দশার কথা আপনাদের কে কি আর বলব। এক কথায় যদি রোহিঙ্গাদের দূর্দশার কথা আপনাদের কে বুঝাতে চাই তাইলে বলব -“ বার্মার সেনাবাহিনী প্রায়ই এই রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়েদের কে বাড়িঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। ইচ্ছা হলে গনধর্ষন করার পর এই রোহিঙ্গা মেয়েদের কে তারা বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় আর তা না হলে তাদের কে তারা হত্যা করে ফেলে। যেই সকল রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়ে সেনা ক্যাম্পে থেকে ফেরত আসে তারা সারাজীবন একটা কলঙ্ক নিয়ে বেঁচে থাকে।“ যারা প্রথম আলো পত্রিকা পড়েন তারা জানেন যে রোহিঙ্গা মুসলমানরা তাদের রাখাইন অঙ্গরাজ্যের কোন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পায় না। সরকারি বেসরকারি কোন হাসপাতালেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রবেশাধিকার নেই। ঐ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্যারাসিটামল টাইপ যৎসামান্য চিকিৎসা সুবিধা পায় আমাদের রোহিঙ্গা ভাই ও বোনেরা। যারা কোন জনগোষ্ঠির চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা রহিত করতে পারে তারা মানুষ না, তারা জানোয়ারের চেয়েও অধম। আর এত নিষ্ঠুর আচরণ শুধু গৌতম বুদ্ধের অনুসারি বৌদ্ধদের দ্বারাই সম্ভব। বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা কি খালি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ? না রোহিঙ্গা মুসলমানদের ছেলে মেয়েরা রাখাইন অঙ্গরাজ্যের কোন স্কুলে ভর্তিও হতে পারে না। নাৎসি কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পের আদলে গড়ে ওঠা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের আঁটকে রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গারা ঐ বীভৎস ছাউনিগুলো থেকে বের হয়ে জীবিকা আহরণের চেষ্টা করলে রাখাইন বৌদ্ধ নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হবার সমূহ ঝুঁকি থাকে। ঐ ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের রাখা হয়েছে যাতে তারা ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নূন্যতম নূন্যতম মৌলিক মানবাধিকার বলতেও এই বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানরা বৌদ্ধদের কাছ থেকে পায় না। করুক। বার্মা, চীন ও থাইল্যান্ডে যুগের পর যুগ ধরে এই বৌদ্ধরা মুসলমানদদের উপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীর শিক্ষিত লোকেরা এখন এইসব জেনে গেছে। ইউরোপ আমেরিকায় এখন একটা কথা প্রচলিত আছে কেউ যদি পশু দেখতে চায় তাইলে সে যেন বৌদ্ধদের কে দেখে। আপনি হয়ত এখন আমাকে প্রশ্ন করবেন কেন বৌদ্ধরা এত বর্বর। এর উত্তর টা আমি এখন আপনাদের কে দিচ্ছি।

মগের মুল্লুক এই নাম টা তো আমরা সবাই শুনেছি। বর্তমান মিয়ানমারের বৌদ্ধরাই হচ্ছে অতীতের ‘মগের মুল্লুক’ এর মগ নৌ-দস্যুদের বংশধর।

“পর্তুগীজ নৌ-দস্যুদের সঙ্গে যখন আরাকানী বৌদ্ধরা হাত মিলিয়ে বাঙলার উপকূলীয় এলাকায় সম্ভ্রম হরণ-লুণ্ঠন-হত্যার মতো জঘন্য কর্মে লিপ্ত হয় তখন থেকেই ‘মগ’ ও ‘মগের মুল্লুক’ জাতি ও দেশবাচক শব্দ দুটি অরাজকতার নামান্তর রূপে ব্যবহৃত হতে থাকে। ‘মগ’ মানে রাখাইন বৌদ্ধ আর ‘মগের মুল্লুক’ মানে রাখাইন রাজ্য এই পরিচয় আজ অনেকের কাছেই অজ্ঞাত। বরং সমাজ-জীবনের কোথাও অনাচার-অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতন, অনিয়ম-উচ্ছৃঙ্খল অবস্থা দেখা দিলে তাকেই বলা হয় ‘মগের মুলুক’। কিন্তু কারা এই মগ বা মগের মুল্লুক বলতে কাদের বুঝায় তা আমরা জানি না। (তথ্যসূত্র: বঙ্গে মগ-ফিরিঙ্গী ও বর্গীর অত্যাচার, মুহম্মদ আবদুল জলিল, বাংলা একাডেমী, পৃষ্ঠা ২৫)

এই বাংলার ধনসম্পদের প্রাচুর্য দেখে বারংবার বিদেশী, অবাঙালী ও অমুসলিম দস্যুরা এই ভূখন্ডে হানা দিয়েছে, যাদের মধ্যে ছিল পর্তুগীজ হার্মাদ নৌদুস্য, মগ নৌদস্যু, অশ্বারোহী মারাঠা বর্গী দস্যুদল প্রভৃতি। এর মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মগদের ভয়াবহ যুলুম নিয়ে ঐতিহাসিক শিহাবুদ্দীন তালিশ লিখেছিলেন- “চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত যাতায়াতের পথে নদীর উভয় পার্শ্বে একজন গৃহস্থও থাকল না। এই মগের ধ্বংস ক্রিয়ার ফলে বাকলার মতো সমৃদ্ধশালী জনবসতি পূর্ণ জেলায় এমন একটি গৃহও ছিল না, যার মানুষ একটি প্রদীপ জ্বালাতে পারে। (সূত্র: ঐ, পৃষ্ঠা ৩৫)

বাংলার ধনসম্পদ লুণ্ঠনকারী ঐসব বৌদ্ধ মগ জলদস্যুদের বংশধররাই হচ্ছে আজকের মিয়ানমারের রাখাইন বৌদ্ধ সম্প্রদায়। মগ আর রাখাইন, এ দুটো একই জাতিগোষ্ঠীর দুটো ভিন্ন নাম। ‘মগ’ নামটি ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত দেখেই তারা ‘রাখাইন’ নাম ধারণ করেছে বলে ধরা হয়। তবে নাম পরিবর্তন করলেও তাদের পূর্বপুরুষদের দস্যুরক্ত তাদের মাঝে এখনও রয়ে গিয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে ঐতিহাসিকদের বর্ণনানুযায়ী মানুষ নামের অযোগ্য এই হিংস্র রাখাইন বৌদ্ধরা নির্মমভাবে শহীদ করছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের। বিডিআর সদস্য মিজানুর রহমানকে গুলিবিদ্ধ করার পর বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে এই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মগ নৌ-দস্যুদের উত্তরসূরীরা।

বাংলার ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা নৃশংস এই মগ নৌ-দস্যুদের দমন করেছিলেন ইতিহাসবিখ্যাত সুবাদার শায়েস্তা খাঁ। তার ছেলে বুযূর্গ উমেদ খাঁ কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের সহায়তায় মগদের দমন করার ঘটনা বাংলার ইতিহাসের পাতায় এখনো সমুজ্জ্বল। সুতরাং পূর্বসুরীদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাঙালী মুসলমানরা আবারও রাখাইন নামধারী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মগ নৌ-দস্যুদের সমূলে নির্মূল করুক। বাঙালী মুসলমান তার ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা থেকে মিয়ানমারের মগদের বিরুদ্ধে ফের জিহাদ ঘোষণা করুক।

বিষয়: বিবিধ

১৩০৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

233607
১১ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
আবদুল্লাহ বাংলাদেশী লিখেছেন : বুঝলাম না, মানুষ আপনার পোস্টে মন্তব্য করতে ভয় পাচ্ছে কেন? এতো ভয় পেলে চলবে নাকি? ফারাবি ভাই, আপনার লেখা চালিয়ে যান, আমরা পাশে আছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File