নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হাওয়ার আগেই ভেঙে পড়লো এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ। এসময় দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় ভবনের নির্মাণ সামগ্রী।
ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার আগতাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, আগতাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন ২৯ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মাণের শর্তে মেসার্স আমিন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। সে মোতাবেক গত বছরের ৩ জুন ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের কাজ শুরু করে। কাজটি চলতি (মার্চ) মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেটি ভেঙে পড়ে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়ে নির্ধারিত তারিখে দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে। দ্বিতল ভবনের এক তৃতীয়াংশের কাজ শেষ হওয়ার পর ওই ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ে। ঠিকাদারের নির্মাণ শ্রমিকরা তড়িঘড়ি করে ভেঙে পড়া ছাদের অংশ সরিয়ে ফেলেন।
বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় অসন্তোষ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আগতাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলার কাজ প্রায় ৬ মাস যাবত ধীরগতিতে চলছে। ভবনের নির্মাণ কাজ বেশির ভাগ সময় রাতে করা হয় বলেও স্থানীয়রা জানায়।
নির্মাণ কাজে নিয়োজিত থাকা এলজিইডি’র তদারকি কর্মকর্তা (এসও) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের কাজ দায়সারাভাবে দেখভাল করার অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা দাবি করেন, নির্মাণাধীন ছাদে ভিম না করে শুধু কলামের ওপর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ছাদ ঢালাই করার ফলে ওই ছাদ ভেঙে পড়েছে।
এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মাইনুল ইসলাম বলেন, আগতাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ভেঙে পড়ার কথা জানতে পেরেছি। তবে কি কারণে ছাদ ভেঙে পড়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা কমিটি এবং গ্রামবাসী নির্মাণ কাজ শুরুর আগে সঠিকভাবে কাজ করার দাবি জানালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন বলেন, ইতোপূর্বে ওই ভবনের নিচতলা যেভাবে মজবুত করা হয়েছে আমরা দ্বিতল ভবনের কাজ এতো মজবুতভাবে করতে পারবো না। আমরা দ্বিতল ভবনের কাজ নরমালভাবেই করে যাব। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় ভবনের ছাদ ভেঙে পড়েছে বলে মনে হয়।
এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিন ট্রেডার্সের কর্তৃপক্ষ সুমনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলী শাহীনুর রহমান অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কনস্ট্রাকশন ভুলক্রটি হতেই পারে, এটা বড় কোনো ব্যাপার না। ভুলক্রটি হলে তা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমাধান করবে। এছাড়া রাতে কোনো কাজ করা হয় না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন