শিক্ষকদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা ও ক্লাসে ফিরছেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বৈঠকে বসেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষকরা আমাদের কথা দিয়েছেন। যেগুলো পূরণ করা সম্ভব সেগুলো শিক্ষকরা পূরণ করবেন। আর যেগুলো আইনি বিষয়, সেগুলো আইনের মাধ্যমে সমাধান হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের আশ্বাসে আস্থা রেখেছি। আগামীকাল (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় আমরা অংশগ্রহণ করব এবং ক্লাসে ফিরে যাব।
এদিকে, ওই আত্মহত্যার ঘটনায় সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থণা করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজনে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন।
সোমবার দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার পর মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল তার সহপাঠীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাবে বরখাস্তের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার রাতে গ্রেফতার হন রাতে গ্রেফতার হন হাসনা হেনা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন এবং তাদের ছয় দফা দাবি লিখিত আকারে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা বাবা দিলীপ অধিকারী বলেছিলেন, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।
ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ১০টায় রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন অরিত্রির বাবা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন