গভীর রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরের কক্ষে ছাত্রলীগ তাদের অনুসারী তুলতে চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগ ওই কক্ষে তাদের অনুসারী তুলতে পারেনি। শনিবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে বারোটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নুরুর কক্ষে তৎপরতা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানীর অনুসারী ও হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আরাফাত হোসেন জৌতিসহ অন্তত ২০ জন ছাত্রলীগ কর্মী নুরুর কক্ষে গিয়ে (নম্বর ১১৯) তার রুমমেট নাজিমকে কক্ষ থেকে বের হয়ে ১১১ নম্বর কক্ষে যেতে বলে। তারা নুরুর বইপত্র বের করে আগুন ধরিয়ে দেয়ার কথা বলে।

এসময় উপস্থিত ছাত্রলীগের কর্মীরা নুরুর বইপত্রগুলো নিয়ে হলের সিঁড়ির কাছে রাখে। পরে রাত আড়াইটার দিকে মুহসীন হলের সহকারি আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম এসে বইপত্রগুলো কক্ষের ভেতরে নিয়ে আসেন।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ১১৯ নং কক্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর থাকতো। গত ৩০জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করার ঠিক আগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। মারাত্মক আহত হয়ে নুরু এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ বিষয়ে নুরুর রুমমেট নাজীম বলেন, আমাকে এসে তারা হলের ১১১ নম্বর কক্ষে যেতে বলে। বইপত্রগুলো বের করে। এর বেশি তিনি কিছু বলতে চাননি।

ছাত্রলীগের মুহসীন হল শাখা সহ-সভাপতি আরিফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাজিমকে তার কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে দেয়া হচ্ছিল।

এ বিষয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, ওরা চেয়েছিল আমার বইপত্র-সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দিয়ে একটি আতঙ্কের সৃষ্টি করতে। যাতে আর কেউ কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে সাহস না পাই। তিনি প্রক্টরকে জানিয়েছেন বলে জানান।

হলের সহকারি আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, হলের নিরাপত্তাকর্মীরা আমাকে ফোন দিয়ে বলে ১১৯ নং কক্ষে সমস্যা হচ্ছে। আমি এসে বইগুলো বাইরে দেখেতে পাই। ওই কক্ষের বাসিন্দা নাজিমকে বলি এটা তোমার বরাদ্দকৃত কক্ষ তুমি এখানে থাক।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, হল প্রশাসনকে সমন্বয় করে প্রক্টরিয়াল টিম পাঠিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

সারাবাংলা