সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিগত তিন বছরের পিইডিপি-৩ আওতায় স্লিপ ফান্ডের ৪০ হাজার করে বরাদ্দকৃত টাকা তছরুপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যেক বছর একই উপকরণ দেখিয়ে টাকাগুলো বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা নিজেদের পকেটে পুরেছেন।
২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৩৬টি বিদ্যালয়ে আয়না, ডায়াস, ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এপ্রোস ও কাপ দলের জন্য ষষ্ঠ ড্রেস কেনা, ওয়েটমেশিন, শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ, প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনা, বিদ্যালয়কে আকর্ষণীয় করা ও প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য পাটের তৈরি মাদুর, সাইন্ডবক্স, গ্লোব, সিটিজেন চার্টার, গণহত্যার ইতিহাস সম্বলিত বই কেনার জন্য স্লিপ ফান্ডে ৪০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু, সংশ্লিষ্টরা একবার নিম্মমানের উপকরণ কিনে পরের বছরগুলোতে ভুয়া ভাউচার করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন।
চর-হামকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, বিগত তিন বছরে কিছু উপকরণ কেনা হলেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে কোনো কাজই করা হয়নি। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই পুরাতন কাজগুলোকে নতুন দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের গুয়ারাখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষক শাহাজাহান আলী মিঞা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ে বরাদ্দের বিপরীতে বিগত তিন বছরে সব কাজই করা হয়েছে।’
তবে সগুনা ইউনিয়নের পতিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থবছরের বিল-ভাউচার জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু, আগের দুই বছরের টাকা দিয়ে কি কেনা হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’
শিক্ষক নেতা আইয়ুবুর রহমান রাজন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এ বছর স্লিপ ফান্ডের অর্থের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু, আগের দুই বছরের টাকা বলা চলে অসাধু শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সভাপতিরা মিলে হরিলুট করেছেন।’
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোস্তাফিজুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে সেভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হয়নি। এবার আমরা সতর্ক রয়েছি। অনিয়ম ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন