পুলিশের এসবির’র প্রধান মনিরুল ইসলামের শশুর বাড়ির সাথে পারিবারিক বিরোধের কারণে এক ব্যক্তিকে ডিবি (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ) ধরে এনে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে (জননিরাপত্তা) নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের বাটিকামারী গ্রামের নুজহাতুল হাছান নামে এক ব্যক্তির চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে এসবি’র প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মনিরুল ইসলাম এবং তাঁর ভায়রা ডিবি’র ঢাকা দক্ষিণের ডিসি শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তদন্তের জন্য চিঠি দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চিঠিতে বর্ণিত অভিযোগে বলা হয়, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মনিরুল ইসলামের শশুর বাড়ির সাথে দীর্ঘ দিনের পারিবারিক বিরোধ নুজহাতুল হাছান নামে এক ব্যক্তির পরিবারের। এই বিরোধের কারণে গত বছরের (২০২১) ৫০ মে নুজহাতুল হাছানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি। অভিযানের সময় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায় ডিবি’র সদস্যরা। পরের দিন নুজহাতুল হাছানকে তাঁর বাড়ি থেকে তোলে নিয়ে যায় ডিবি। তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে পাঁচ দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয় তখন। কয়েক দফা ক্রসফায়ারের হুমকিও দেয়া হয় তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে। এক পর্যায়ে মনিরুল ইসলামের ভায়রা ডিবি’র ঢাকা উত্তরের ডিসি কাজী শফিকুল আলম ৩০০ টাকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক আপোষনামায় স্বাক্ষর নেয় তাঁর নিকট থেকে ডিবি কার্যালয়ে। আপোষনামায় স্বাক্ষর নিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
চিঠিতে অভিযোগের বর্ণনায় আরো উল্লেখ করা হয়, আপোষনামার শর্ত অনুযায়ী অভিযোগকারী নুজহাতুল হাছান ব্যবসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকে তিনি গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরে গ্রামের বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে গত ১১ জানুয়ারী তিনি জানতে পারেন তাঁর নামে দু’টি মামলার চার্জশীট দেওয়া হয়েছে। এবং চার্জশীটে তাঁকে পলাতক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগকারী জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে দাবী করেন, তিনি কখনো পলাতক ছিলেন না। বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এই চার্জশীটের পর থেকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার কমিশনের লেখা চিঠিতে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাঁকে আরো নির্যাতনের আশঙ্কায় রয়েছেন বলে নুজহাতুর হাছান মানবাধিকার কমিশনের সহায়তা চেয়েছেন।
এই অভিযোগের তদন্ত করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে মানবাধিকার কমিশন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন