পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল নামে এক যুবক স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীসহ চারজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পরে খুনি নিজেই তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খুনি নির্মল ছাড়া অন্য চারজনই চা বাগানের শ্রমিক।
রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগানে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করে দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ভোর ৫টার দিকে নির্মল ও ডলির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ডলিকে মারধর করতে থাকলে ডলি দৌড়ে অন্য ঘরে বাবা-মায়ের কাছে চলে আসে। তখন নির্মল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডলিকে কোপাতে থাকে। তাকে রক্ষা করতে শাশুড়ি ছুটে আসলে তাকেও কোপায় নির্মল। এ সময় দুই প্রতিবেশী ঠেকাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও সে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হলে ঘাতক নির্মল নিজের ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
জানা গেছে, নির্মল মাদকাসক্ত ছিলেন। তার বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছরখানেক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই ছিলেন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসিনুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্মল মাদকাসক্ত ছিলেন। অতিরিক্ত মদ পানের কারণে মাতাল হয়ে নির্মল এই ঘটনা ঘটান। হত্যাকাণ্ডের শিকার চারজন হলেন, নির্মলের স্ত্রী জলি ব্যানার্জি (৩৫), তার শাশুড়ি লক্ষ্মী ব্যানার্জি (৫০), পাশের ঘরের বসন্ত ভৌমিক (৫৫), বসন্তের মেয়ে শিউলি ভৌমিক (১৬)।
এছাড়া নির্মলের দায়ের কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন বসন্ত ভৌমিকের স্ত্রী কানন ভৌমিক। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা পাল্লাতল এলাকায় চা শ্রমিকের কাজ করতেন।
পাল্লাতল চা বাগানের ম্যানেজার এবিএম মাহবুবুর রহমান জানান, নির্মলের বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছর খানিক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তারপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকছিলেন।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূল কারণ উদঘাটনের জন্য চেষ্টা চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন