একজন বক্তা যখন ওয়াজ করতে যান তখন তাকে হাজারো দিকে খেয়াল রাখা দরকার। বক্তাজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার সাথে এদেশের অনেকের মত আমারও দ্বিমত আছে, কিন্তু তিনি বিতর্কের উর্ধের একজন বক্তা ছিলেন এটা স্বীকার করতে একটুও কার্পণ্যতা করি না।
ওয়াজের ময়দানে তিনি কখনো কোনো বিতর্কিত ফতোয়া দিতেন না। তাঁর জানার পরিধিটা কিন্তু কম ছিল না। তাঁর পাণ্ডিত্যের ব্যাপারে শক্র মিত্র সকলে একবাক্যে মেনে নিতে প্রস্তুত। তাই তিনি এ ময়দানে বহুদিন রাজ করতে পেরে ছিলেন।
এখনকার অনেক বক্তাই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেন না। সামনে জনসমুদ্রের মত শ্রোতা দেখে নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা অমিমাংশিত মাসআলাগুলোও জনসাধারণের সামনে ফতোয়া আকারে প্রকাশ করে যাচ্ছে।
আমি মনে করি, এটা তাদের অপরিপক্বতা। তারুণ্যের গরমীর বহিঃপ্রকাশ। নতুবা ময়দানটাকে এভাবে ভাগাভাগি করে নেওয়ার কি দরকার?
সবশেষে একটা কথা বলি, অনেকে না বুঝে কওমীয়ানদের বিরোধিতা করে থাকেন। এ দেশে যতবার ইসলামে আঘাগ এসেছে ততবার কওমীয়ানরা নিজ স্বার্থের উর্ধে উঠে এর প্রতিবাদ করে গেছে। নিকট অতীতকে নিয়ে একটু ভাবুন।
শাহবাগে ইসলাম আক্রান্ত হলে কওমীয়ানরা হেফাজতের ব্যানারে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এটা প্রতিহত করেছে।
আদালতে ধর্ম অবমাননা করে মূর্তি বসালে কওমীয়ানদের প্রতিবাদের মুখে সরকার তা সরাতে বাধ্য হয়।
পাঠ্যসূচীতে নাস্তিক্যবাদ প্রবেশ করলে সে হেফাজত রাজপথে নেমে তা প্রতিহত করে।
কাদিয়ানী ফিতনাসহ ছোট বড় এমন হাজার সমস্যা কওমীয়ানরা বুক পেতে মোকাবেলা করে যাচ্ছে।
সুতরাং যাদের কিবলা এক, যাদের নবী এক, যাদের সাথে ফুরুয়ী মতবিরোধ থাকলেও উসূলী মতবিরোধ শূন্যের কোঠায় তারা চাইলে কওমীয়ানদের সাথে একাকার হয়ে সমাজ ও ইসলামের কাজ করতে পারেন। এটা দেশ ও জনগণ সকলের জন্য কল্যাণকর হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন