২০১৭ সালের মহান বিজয় দিবসের আগে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দৃঢ়চিত্তে তিনি বলেছিলেন- ‘আমি যাবোই এলাকায়। আপনারা টেনশন নিয়েন না, সব ব্যবস্থা করেন। বিজয় দিবসে আমি এলাকায় থাকবো।’ কিন্তু সেই বিজয় দিবসে তিনি এলাকায় আসেননি, আসে তার মৃত্যুর খবর। স্তব্ধ হয়ে পড়ে সবকিছু, বিজয় দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানও সংক্ষিপ্ত করা হয় রণাঙ্গণের বীর সেনানি অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হকের মৃত্যুর কারণে।
আজ (১৬ ডিসেম্বর) প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ছায়েদুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এই দিনে মারা যান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ছায়েদুল হক। ওইদিন সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকে টানা পাঁচবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন ছায়েদুল হক। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা ছায়েদুল হক ২০০১ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও বিজয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন সবাইকে। মূলত তার সততার কারণেই হাওরবেষ্টিত নাসিরনগর উপজেলার মানুষ ভালোবেসে বারবার তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে পাঠিয়েছেন জাতীয় সংসদে।
হাওরবাসীর কাছে ‘ছায়েদ ভাই’ হিসেবেই বেশি সমাদৃত ছিলেন ছায়েদুল হক। নাসিরনগরের ব্যাপক উন্নয়নের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে তার নাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের সঙ্গে নাসিরনগর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন ছিল ছায়েদুল হকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের এক মাইলফলক।
উল্লেখ্য, ছায়েদুল হক ১৯৪২ সালে নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বভাগ গ্রামের উত্তপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের খ্যাতনামা এ আইনজীবী ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন