কাঁটাতারের বেড়া দু’দেশকে ভাগ করলেও রক্তের বাঁধন ছিন্ন করতে পারেনি। দেশ ভাগের পর আত্মীয় স্বজনরা দুদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সারাবছর কেউ কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। অপেক্ষায় থাকেন ‘পাথর কালি মেলা’র জন্য।
এদিন প্রিয়জনকে একনজর দেখার জন্য হাজারো মানুষ ছুটে আসেন হরিপুর, কান্দাইল, বেতনা, ডাবরি, কাঁঠালডাঙ্গী, বুজরুখ, মৌলানি সীমান্তে। বিজিবি-বিএসএফ’র সহায়তায় শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টায় কাঁটাতারের বেড়া এলাকায় আগত লোকজন যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
এ সময় আত্মীয় স্বজনের জন্য তারকাটার ওপর দিয়ে শুকনা খাবার ও শাড়ি কাপড়সহ কাঁটাতারের দু’প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ তাদের প্রিয়জনদের জন্য বাড়ি থেকে আনা খাবারসহ নানা উপহার সামগ্রী বিনিময় করেন।
বীরগঞ্জ থেকে আসা সুমন চন্দ্র বাংলানিউজকে জানান, আমি আমার আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছি। আমি প্রতিবছরের এ দিনটির অপেক্ষায় থাকি। পাথর কালি মেলাকে কেন্দ্র করে বছরে একবার হলেও আমি আমার আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারি।
পঞ্চগড় থেকে আসা ইয়াসমিন আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বজনদের দেখা পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের নবীন চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, মাকে এক বছর ধরে দেখিনি। দীর্ঘদিন পর মাকে কাছাকাছি পেয়ে মায়ের কান্না দেখে নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম না। আমার বাবা-মা ভাই বোন সবাই ওপারে থাকেন। আমার পরিবার নিয়ে আমি বাংলাদেশে থাকি। তবে বছরে দুইবার আমি আমার মা-বাবা সহ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারি।
ঠাকুরগাঁও-৫০ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল সামিউল নবী বাংলানিউজকে জানান, ১৯৭৪ সালের পর পাকিস্তান-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দণি দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ বিভাগের পর আত্মীয় স্বজনরা দুদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সারা বছর কেউ কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। অপেক্ষায় থাকেন এ দিনটির জন্য।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন