‘বোন মৃত্যু দাও, নয়তো মজুরি কমিশন দাও’ পোশাকে এমন কথা লিখে অনশন পালন করছেন খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই উদ্দেশ্য করে এমন স্লোগান লিখেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে ১১ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে খুলনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ১০/১২ জন শ্রমিক। ইতোমধ্যে তাদেরকে স্যালাইনও দেয়া হয়েছে। শীতের রাতে না খেয়ে ও খোলা স্থানে অবস্থান করায় এমন অবস্থা হয়েছে তাদের। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান আজ (১১ ডিসেম্বর) বুধবার জানান, গুরুতর অসুস্থ ২ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রচণ্ড শীত ও ক্ষুধার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সমস্যা সমাধানে ঢাকায় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ না হওয়ায় শ্রমিকরা অনশন অব্যাহত রেখেছেন। যতই কষ্ট হোক, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।
তিনি আরও জানান, শ্রমিকরা স্ব স্ব মিল গেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন। তারা কাঁথা-বালিশ, লেপ, কম্বল নিয়ে সেখানেই রাত্রিযাপন করেন। জুট মিলগুলোতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। অনশনের কারণে স্টার জুট মিলের শ্রমিক বাবুল ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক সুলতান অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সুলতানের স্যালাইন চলছে। আমরণ অনশন পালনকারী শ্রমিকরা শ্রমিকদের এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না।
শ্রমিকরা জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবত বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের সিদ্ধান্ত বাতিল ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির টাকা প্রদানসহ ১১ দফা দাবি জানিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন আন্দোলন চললেও এ পর্যন্ত শ্রমিকদের দাবি দাবা পূরণ হয়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।
খুলনা অঞ্চলে মোট রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল রয়েছে। এর মধ্যে খুলনাতে রয়েছে সাতটি আর যশোরে দু’টি। খুলনায় থাকা পাটকলগুলো হলো ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল ও ইস্টার্ন জুট মিল। আর যশোরের দু’টি জুট মিল হলো-কার্পেটিং ও জেজেআই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন