প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশনের পর পেটের মধ্যে গজ ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। তীব্র যন্ত্রনায় অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করে বের করা হয় ওই গজ-ব্যান্ডেজ। তবুও বাঁচানো যায়নি তাকে, অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে মারা যান প্রসূতি মা নাসিমা বেগম।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫ নভেম্বর রংপুর নগরীর মীরগঞ্জ তালুক তামপাট গ্রামের রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম নগরীর ধাপের রোজ প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্মদেন। অপারেশন করার পর নাসিমা বেগমের পেটের ভেতরে গজ ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার পর তার পেট ফুলে যায়। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করার পর ১২ নভেম্বর রোজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ব্যবস্থা পত্র দিয়ে ছেড়ে দেন। বাসায় চলে আসার পর আবার তীব্র ব্যাথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে নাসিমা বেগম। এরপর শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম করার পর পেটের ভেতরে গজ ব্যান্ডেজ ধরা পড়ে। গত রোববার দুপুরে তার পেটে অপরারেশন করে গজ ব্যান্ডেজ বের করেন চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে মারা যান নাসিমা বেগম।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. স্বপন জানান, প্রসূতির অপারেশন করে পেটের গজ ব্যান্ডেজ পাওয়া যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
রোজ প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রোগীর স্বজনদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। নাসিমা বেগম মারা যাওয়ার খবরে ওই হাসপাতালের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন।
রোগী মৃত্যুর বিষয়ে রোজ প্রাইভেট হাসপাতালের ম্যানেজার মোবারক হোসেন মিলন বলেন, রোগীর পেটে ইনফেকশন হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা, হিরম্ব বর্ম্মন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত রোজ প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন