এজাহারকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা, তার বোন শারমিন ও বোনের স্বামী মিলে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে পেটান। ছবি: দেশ রূপান্তর
সীতাকুণ্ডে মোবাইল চুরির অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রায়হান নামের পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
নিহত যুবকের নাম মোহাম্মদ এজাহার মিয়া (২৭)। তিনি উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের অলিকাজির বাড়ির মোহাম্মদ মফিজের ছেলে। লামিয়া নামে তার দেড় বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
এঘটনায় অভিযুক্ত এসআইয়ের বোন নাসরিন আক্তার ও বোনের স্বামী মো. মিজানকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত এজাহার মিয়ার শাশুড়ি মরিয়ম বেগম বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে কর্মরত এসআই রায়হান তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে তার নিজ বসতবাড়ি ভাটিয়ারি কলেজ পাড়ায় নিয়ে যান। সে ফিরছে না দেখে রাত ১০টায় আমি তাদের বাড়ি যাই।’
তিনি বলেন, ‘এসময় এজাহারকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা, তার বোন শারমিন ও বোনের স্বামী মিলে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে পেটাচ্ছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে সে বলে এজাহার তার বোনের মোবাইল ফোন চুরি করেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত মোবাইল ফোন এনে দেবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে ছাড়া হবে না।’
এজাহারের শাশুড়ি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমি চলে আসি। আমরা কী করব বুঝতে পার ছিলাম না। কথা বললে আমাদের নামেও মামলা দেবে বলে হুমকি দেন এসআই।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোররাত ৫টার সময় একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে এজাহারকে মুমূর্ষু অবস্থায় ভাটিয়ারি-হাটহাজারী লিংক রোডের ব্রিজ এলাকায় এনে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তারা।’
এজাহারের শাশুড়ি জানান, সকালে অবস্থার অবনতি দেখে তাকে স্থানীয় বিএসবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। পরে তার মৃতদেহ ভাটিয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসেন তারা।
খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম শেখ দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে এসআই রায়হান পলাতক। সে যেহেতু পুলিশে চাকরি করে, তাই পালানোর সুযোগ নাই। তার বোন ও বোনের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন