রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক ছাত্রীকে চলন্ত অটোরিকশার মধ্যেই যৌন হয়রানি করে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
এতে অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী থানায় অভিযোগ করেন। পরে সেটি মামলা আকারে গ্রহণ হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন অটোরিকশা চালক এবং অন্যরা চালকের পরিচিত কেউ।’
তিনি বলেন, ‘যে সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে, ইতিমধ্যে সে সড়কের পাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা করছি। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জানা যায়, সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় রাজশাহীর নগর ভবন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ঘটনার পর নিজেই তার ফেসবুকে ঘটনাটি তুলে ধরেন। তারপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে তিনি লিখেন, ‘আমার বাসা উপশহর। বাসা দূর বলে আমি সাধারণত রুয়েট থেকে রেলগেট পর্যন্ত অটোতে করে আসি। আজকেও প্রতিদিনের মতো অটো নিলাম, সঙ্গে ছিল দুজন অপরিচিত রুয়েটিয়ান ভাইয়া আর একজন ভদ্রলোক। রুয়েটিয়ান ভাই দুজন চিশতিয়ার সামনে নেমে গেলেন। ভদ্রা পার হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ অটোওয়ালা অটো থামায় দিল, সামনে থাকা ভদ্রলোককে বলল, আপনি নেমে যান, আমি নিজস্ব লোক তুলব! আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই ভদ্রলোককে জোরপূর্বক নামিয়ে চারজন গুন্ডার মতো লোক উঠল। আবার অটো চালানো শুরু হয়ে করল’।
ওই ছাত্রী আরো জানান, ভদ্রা থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত রাস্তা মোটামুটি নির্জন, ইচ্ছামতো সেই চারজন আমাকে স্পর্শ করা শুরু করল। হাজারবার অটো থামানোর জন্য চিৎকার করার পরও অটোওয়ালা পশুর মতো হাসতে থাকল’।
তাকে চলন্ত অটোরিকশা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি লিখেন, নগর ভবনের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে তারা অটো থেকে ধাক্কা মেরে আমাকে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে গেল! যতক্ষণে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি ততক্ষণে অটো বহুদূর...'
তাকে যৌন হয়রানির কোনো বিচার হবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেন, ‘কাহিনিটা শুধু শেয়ার করলাম। এইটা বাংলাদেশ, কোনো বিচারের আশা আমি করছি না’।
তিনি আরো লেখেন, ‘অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে আমার পোশাক কী ছিল? সাধারণ বাঙালি নারীর মতো সালোয়ার কামিজ।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন