এক প্রকল্পে প্রকৌশলীর গাফিলতিতে টাকা নষ্ট হওয়ার পর তার শাস্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এর আগে এ ধরনের একটি প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতির কারণে অনেক টাকা নষ্ট হয়েছে। আবার ওই ইঞ্জিনিয়ার দেখি এ প্রকল্পের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। তাহলে তার তখনকার ভুলের জন্য কি শাস্তি দেওয়া হয়েছে?’
এ সময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার কোনো সদুত্তর দিতে না পারলে প্রধানমন্ত্রী ওই প্রকৌশলীর শাস্তি নিশ্চিত করার কথা বলেন। পরে প্রতিমন্ত্রী ও সচিব বলেন, একনেক থেকে ফিরে গিয়েই তারা ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি ও বিধিবিধানগত ব্যবস্থা শুরু করবেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্টে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করলেও ওই প্রকৌশলীর নাম বলেননি তিনি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্রেও সেই প্রকৌশলীর নাম জানা যায়নি।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলা জেলার চরফ্যাশন পৌর শহর সংরক্ষণ’ প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রসঙ্গ তোলেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি বলতে যেটি বলা হয়েছে সেটি হচ্ছে ভুল অ্যাসেসমেন্টের কারণে ওই সময় সরকারের অনেক টাকা জলে গিয়েছিল।
একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সবজি রফতানি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ বিমানকে দু’টি কার্গো বিমান কেনার বিষয়ে চিন্তা করতে বলেছেন। কারণ, কৃষিপণ্য রফতানি বেড়েছে। অন্য বিমানে বেশি ভাড়া নিয়ে পাঠাতে হচ্ছে বলে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। দু’টি কার্গো বিমান কিনলে অনেক কম খরচেই রফতানি করা যাবে। এছাড়া নভেম্বর মাসে আরও একটি ড্রিমলাইনার বিমান আসছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আরও কিছু নির্দেশনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে সারাদেশের বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচ দিয়ে করতে হবে। নতুন করে স্লুইস গেট নির্মাণ না করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেননা এসব গেট মরিচা পড়ে কয়েক দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। আর কাজ করে না। তাই একেবারেই অপরিহার্য না করে এসব গেট নির্মাণ করা যাবে না। হাওর অঞ্চলে সড়ক নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকৃতিকে বাঁধা দিয়ে কিছু করা যাবে না। তাই এসব সড়কে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহের জন্য প্রচুর ব্রিজ বা কালভার্ট রাখতে হবে। তাছাড়া যেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা যায় সেখানে সেটিই করতে হবে।
এম এ মান্নান আরও বলেন, কোনো এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হলে সেই প্রকল্পের সঙ্গে গাছ লগানোর জন্যও বরাদ্দ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে কোনো প্রকল্প প্রস্তাবে গাছ লাগানোর প্রস্তাব থাকলে তা কেটে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা কমিশনকে বলেছেন।
সারাবাংলা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন