লোকালয়ে বন্য হাতি, ঘুম নেই আনোয়ারাবাসীর
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে লোকালয়ে চলে আসছে হাতির দল। তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘরবাড়ি, ক্ষেত-খামার ও ফসলি জমিতে। এতে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী।
সর্বশেষ, বুধবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বন্য হাতির আক্রমণে বটতলী গ্রামের পুরাতন গুচ্ছগ্রামের ডা. ফরিদের বাড়ির পাশে মোমেনা খাতুন (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হন।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় পাহাড় থেকে একটি হাতি এসে গুচ্ছগ্রাম এলাকায় তাণ্ডব চালায়। এ সময় বৃদ্ধ মোমেনা রান্না করছিলেন। পেছন থেকে হাতি আক্রমণ চালিয়ে পায়ে পিষ্ট করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এর আগে গত শুক্রবার (২১ জুন) রাতে বন্য হাতির আক্রমণে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামে আমুর পাড়া এলাকায় এক শিশু আহত হয়। আহত শহিদুল বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান চৌধুরী জানান, হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে বৃদ্ধ মোমেনার নিহতের ঘটনাটি বন বিভাগ ও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। মধ্যরাতের দিকে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েক দিন ধরে কেইপিজেড ও দেয়াঙ পাহাড়ে হাতি নেমেছে। সন্ধ্যা নামলেই হাতিগুলো সড়কে ও লোকালয়ে চলে আসছে। গত কয়েকদিনে আশপাশের এলাকায় হাতিগুলো গাছপালা ও স্থাপনা ভেঙে ক্ষতি করেছে, তাণ্ডব চালাচ্ছে। এতে কেইপিজেডের দায়িত্বরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা প্রহরী ও আশপাশের এলাকাবাসীরদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, এর আগে গত বছর ৬ জুলাই বটতলী ইউনিয়নের ছিরাবটতলী এলাকায় বন্য হাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে স্থানীয় কৃষকদের ক্ষেত-খামার, গাছপালা, বাড়ির দেয়াল ভাঙচুর করে। এ সময় হাতির আক্রমণে আহত হন এক বৃদ্ধা নারী। পরে ১৩ জুলাই উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নে হাতির আক্রমণে আবদুর রহমান (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এলাকা পাহাড়ের পাশে হওয়ায় বিভিন্ন সময় বন্য হাতি এসে তাণ্ডব চালায়। এ সময় বাড়ির দেয়াল, গাছপালা ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে আতঙ্কে আছি। উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন এলাকাবাসীর নিরাপত্তার সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেন।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন