কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে কথিত চুরির অভিযোগ এনে অহিদুল ইসলাম অহিদ (২৬) নামে এক যুবককে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর ভুয়া মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ নির্যাতিত সেই যুবককে সংঘর্ষের মামলার আসামি করে আদালতে তোলার পর গত ১০ দিন ধরে সে কারাবাসে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অহিদুল ইসলাম অহিদ উপজেলার জগদল গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অহিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অহিদ এলাকায় শাড়ি-কাপড়ের রং ও নকশা তৈরির কারিগরের কাজ করেন। গত ১৬ জুন সন্ধ্যার দিকে হোসেনপুর উপজেলার লাকুহাটি গ্রামে অহিদকে কয়েকজন আটক করে চোর অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে নির্মমভাবে পেটায়। এ সময় সে বারবার ‘আব্বা আব্বা’ বলে আকুতি জানিয়েও নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি। রাতে নির্যাতনকারীরা অহিদকে পুলিশ ডেকে তাদের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশ কোন ধরনের চুরির মামলা না নিয়ে অহিদকে গত ৮ মে পৌর এলাকার নতুন বাজারে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় ৯ মে থানায় দায়ের করা পুলিশের কাজে বাধাদান ও আহত করার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। পরদিন ১৭ই জুন অহিদকে আদালতে পাঠানোর পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
সোমবার রাতে ফেসবুকে অহিদকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা অহিদকে কয়েকজন নির্যাতন করছেন।
নির্যাতিত যুবক অহিদের বাবা বাবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে গাছের সাথে বেঁধে নির্দয়ভাবে পেটানো হয়। তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, লাকুহাটি গ্রামের পল্টু, এরশাদ ও রাসেলসহ বেশ কয়েকজন এই নির্যাতনে নেতৃত্ব দেয়। পরে তারাই পুলিশ ডেকে তার ছেলেকে কোন ধরনের চুরির মামলা না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বাবুল মিয়া আরও বলেন, আমার নিরপরাধ ছেলেকে একেতো নির্যাতন করা হয়েছে। তার উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। আমি এই ঘটনার বিচার কার কাছে চাইব ?
এ ব্যাপারে হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) নূর ইসলাম জানান, যুবকটিকে নির্যাতনের ঘটনা তার জানা নেই। এছাড়া নিরপরাধ কাউকে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলার আসামি করার কথা নয়। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন