বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে শেষ স্ট্যাটাস দেন কলেজ ছাত্র রাজির। এরপর বিষ পান করে বেছে নেন আত্মহননের পথ। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহীমপুর গ্রামের এই শিক্ষার্থী যে স্ট্যাটাস দেন, তাতে প্রকাশ পায় জীবনের প্রতি চরম বিতৃষ্ণা।
রাজিব ইব্রাহীমপুর গ্রামের মনির উদ্দীনের ছেলে। তিনি দামুড়হুদা ওদুদশাহ ডিগ্রি কলেজে পড়তেন। চলমান এইচএসসি'র পরীক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৮ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী।
রাজীবের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন, ভাই-ভাবিসহ সবার কাছে বিদায় জানান। পোস্টটি তার বড় ভাই দেখামাত্রই বাড়িতে ফোন করেন। কিন্তু তার আগেই বিষ পান করেন রাজীব। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে মারা যান তিনি।
মৃত্যুর আগে ফেসবুকে রাজিব তার স্ট্যাটাসে লেখেন:
'এটা আমার লাইফের শেষ স্ট্যাটাস। জানি কথাগুলো শোনার পর অনেকে মানতে পারবে না, আবার অনেকের কাছে ভালো লাগবে শুনে। কিন্তু এটাই হয়ে গেছে সময়ের কাছে বাস্তবতার কাছে। আমি হেরে গেলাম। খুব ইচ্ছে ছিল আর দশজনের মতো স্বাভাবিকভাবে জীবন চালানোর কিন্তু পারলাম না, ডিসিশনটা আমি খুব সহজভাবে নেই নাই। আমাকে বাধ্য হয়ে নিতে হইছে।'
রাজিব লিখেছেন, 'ডিপ্রেশন আমাকে শেষ করে দিছে। মেন্টালি ফিজিক্যালি কোনোভাবেই আমি ভালো নেই। স্বপ্ন ছিল অনেক কিন্তু সেটা পূরণ করতে পারলাম না, তার আগেই চলে যেতে হলো আমাকে মাফ করে দেবেন সবাই, বড় ভাই-ভাবি, মেজো ভাই, ফ্রেন্ডস কারো সাথে যদি কখনো অন্যায় করে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দিয়েন সবাই, আর ফ্যামিলির কথা কী বলবো যদিও সবাই ভুলে যাবে কিন্তু ফ্যামিলি কখনো ভুলবে না। বাবা-মা, ভাই সবাই আমাকে মাফ করে দিও ভালো থেকো তোমরা সব সময়।'
ফেসবুকে পোস্ট করা রাজিবের স্ট্যাটাস
রাতেই তার মরদেহ পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। আজ শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, যুবকের আত্মহত্যার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন