সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আর পড়তে চান না নুসরাত জাহান রাফির ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানান তিনি। রায়হান ওই মাদরাসার দশম শ্রেনীর ছাত্র।
রায়হান বলেন, কিভাবে ওই মাদরাসায় পড়বো? কি জবাব দেবো সহপাঠি ও শিক্ষকদের? কিভাবে ভুলবো আমার আপুর অসহ্য যন্ত্রণার কথা? আমি আর ওই মাদরাসায় পড়বোনা। আমার বোনও মাকে বলেছিলে আলিম পাস করার পর ওই মাদরাসায় আর ভর্তি হবো না। ফেনীর অন্য যে কোন মাদরাসায় ফাজিলে ভর্তি হয়ে লেখা পড়ার কথা বলেছিলো সে।
রায়হান আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেছিলেন দাখিল পরীক্ষার তার পড়ালেখার দায়ীত্ব নেবেন তিনি। দাখিল পাস করে তাঁর সাথে সাক্ষাত করে জানাবো তিনি সহযোগিতা করলে আমি উন্নত দেশে পড়ালেখা করতে চাই। আমার বোনের স্মৃতি যেন হারিয়ে না যায়। দেশবাসীর সহযোগিতায় আমার বোনের প্রতিবাদের এই দৃষ্টান্ত কখনো হেরে যেতে দিবো না।
গত ২৭ মার্চ নাসরাতকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার ১০ দিন পর ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের উপরে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অধক্ষের অনুগতরা। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকালে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
এ ঘটনা অধ্যক্ষসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। এখন পর্যন্ত সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমীন, পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদাক মাকসুদ আলমসহ ২১জনকে জনকে আটক করেছে করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
আটজন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন