রুমডেটিংয়ের সময় বয়ফ্রেন্ডকে এক বান্ধবী মিসকল দেয়ায় ভয়ংকর কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক ছাত্রী। ওই বান্ধবীর সঙ্গে তার বয়ফ্রেন্ডের সম্পর্ক আছে এমন সন্দেহে প্রথমে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে ওই ছাত্রী তার বয়ফ্রেন্ডকে শিলপাটা দিয়ে মাথা থেতলে হত্যা করে। এঘটনার পর ওই ছাত্রী ঢাকায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরে পরিবারের সদস্যরা লাশ ঘর থেকে বস্তায় ভরে হাওরে নিয়ে পুতে রাখে। দুই মাস নিখোঁজের পর ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ভয়ংকর ওই ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের লাখাইয়ে। নিহত উজ্জ্বল মিয়া কলেজে পড়াশোনা করতেন। সোমবার বিকেলে উপজেলার মেন্দির হাওরে একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি মুড়াকরি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। উজ্জ্বল মাধবপুর সৈয়দ সাঈদ উদ্দিন কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এ ঘটনায় একই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের মঞ্জুু মিয়া ও তার মেয়ে ফারজানা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় থানা চত্ত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ।
পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে জানান, উপজেলা ধর্মপুর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৭) হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী। ফেসবুকের মাধ্যমে উজ্জ্বলের সঙ্গে ফারজানার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সূত্র ধরে উজ্জল মাঝে মাঝে ফারজানা আক্তারের বাড়িতে আসা যাওয়া করত। একপর্যায়ে তাদের মাঝে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে উঠে। ফেব্রুয়ারি মাসে ফারজানার বাবা-মা ঢাকা যান। এ সুযোগে গত ২০ ফেব্র“য়ারি ওই ছাত্রীর বাড়িতে ডেটিংয়ের জন্য যায় উজ্জ্বল। ওই রাতে তারা দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হন। এ সময় উজ্জ্বলের মোবাইলে তার এক বান্ধবী মিসকল দেয়। একপর্যায়ে ওই বান্ধবী উজ্জ্বলকে এসএমএস করে। এটি দেখতে পেয়ে ফারজানা প্রথমে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ওই রাতেই ঘরে থাকা মসলা বাটার শিল দিয়ে উজ্জ্বলের মাথায় আঘাত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। একপর্যায়ে লাশ বস্তায় ভরে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে। পরদিন ঢাকায় গিয়ে বাবা মাকে বিষয়টি জানায়। তারা ঢাকা থেকে এসে তার বাবা লাশ নিয়ে মেন্দি হাওরে পুঁতে রাখেন।
এ ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি উজ্জ্বলের বাবা থানায় একটি জিডি করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে তদন্ত শুরু হয়। ২১ এপ্রিল ফারজানা ও তার বাবা মঞ্জু মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে ফারজানা ঘটনা স্বীকার করে। তার বাবা মঞ্জু মিয়াও পরে বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো তথ্যমতে সোমবার বিকেলে হাওর থেকে উজ্জ্বলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন