ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক মো. হাসানপুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টাতে অগ্নিকাণ্ড শুরুর ভিডিও ফুটেজ দেওয়ায় রাজমহল হোটেলের মালিককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক মো. হাসানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে জিডি দায়েরকারী মোহাম্মদ আজম বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক হাসান ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমাকে দেখে নেবে, খেয়ে ফেলবে- এ ধরনের আরও অনেক কথা বলেছেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে ২৫ মার্চ চকবাজার থানায় একটি জিডি করেছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি এসব হুমকিতে ভয় পাই না। ভয়ের বয়স অনেক আগেই পার করে এসেছি।’
ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশে থাকা রাজমহল হোটেলের সিসি ক্যামরায় ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণ হয়েছে। এরপর পুলিশ হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। সেই ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
আজম বলেন, ‘আমি কাউকে কোনও ফুটেজ দেইনি। ঘটনার পর পুলিশ সব নিয়ে গেছে। তারপরও আমাকে হাসান দায়ী করছেন। তিনি এলাকার অনেককেই ফোন করে গালিগালাজ করছে। আমি উপায় না পেয়ে জিডি করেছি।’
আজমের দায়ের করা জিডি নম্বর ১১৬৬। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেছেন, ‘মো. হাসান, পিতা: মৃত ওয়াহেদ, মাতা: অজ্ঞাত, বাসা নম্বর ৬৪. নন্দ কুমার দত্ত রোড, চুড়িহাট্টা, চকবাজার, ঢাকা – ১২১১। এই ব্যক্তি তার মোবাইল নম্বর থেকে ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমি (আজম) বাসায় থাকাকালীন ফোন করে। ফোনে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সে আমার বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে বারবার বলতে থাকে। আমি তার কাছে কারণ জানতে চাইলে সে আমাকে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টির কথা বলে।’
এ বিষয়ে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিক হাসানকে তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দিয়ে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জিডি বিষয়টি চকবাজার থানা পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত করেছে বলে জানিয়েছেন জিডি দায়েরকারী মোহাম্মদ আজম। তিনি বলেন, ‘জিডি চকবাজার থানার পুলিশ অফিসার মুরাদ তদন্ত করছেন। আমার সঙ্গে তার কথাও হয়েছে।’
তবে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীমুর রশিদ তালুকদার বলেন, ‘আমার আসলে বিষয়টি জানা নেই। আমি অন্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।’
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জিডি হলে অবশ্যই থানার ওসি জানবেন। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। আমরা অবশ্যই জিডি দায়েরকারীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। এ বিষয়ে আইনগত যে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার আমরা সব করবো।’
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় আশেপাশের পাঁচটি ভবনে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৭০ জন প্রাণ হারায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন