সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ‘আকস্মিক বৈঠক’ বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে পড়ন্ত বিকেলে ব্যাপক পুলিশ পাহারায় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন দলটির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির। মঙ্গলবার সূর্য ডোবার পূর্বে ফুল দেওয়ার এই দৃশ্য দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
দলটির নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি জনপ্রিয় দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় ব্যাপক পুলিশ পাহারার প্রয়োজন পড়ে কেন?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমনের অনুসারীরা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দিতে শহরের মুক্তিযোদ্ধা হোসেন বখত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। তাদের নিরাপত্তা বিধানে তৎক্ষণাৎ আসতে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যদের।
পরে, সামনে-পিছনে পুলিশ পাহারায় একটি মিছিল এগিয়ে যায় ট্রাফিক পয়েন্টস্থ শহীদ মিনারের দিকে। সূর্য ডোবার পূর্বে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা।
সকালে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পৃথক মিছিলসহ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, পৌর মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামী নেতা মতিউর রহমান পীর প্রমুখ।
দলীয় সূত্র জানা যায়, শনিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ‘মধ্যহ্ন ভোজকে’ জেলা কমিটির সংগঠনের ‘কার্যকরী কমিটির বিশেষ সভা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জেলা আওয়ামী সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক এমপিকে কৌশলে ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ব্যারিস্টার ইমন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট অনুসারীরা। এ নিয়ে প্রভাবশালী ওই গ্রুপে চাপা ক্ষোভও দেখা দেয়।
জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি মতিউর রহমান সভার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে দেড় মাসের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছি। সেই উপলক্ষে ওরা খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেছিল। এখানে কোন রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। এটা শুধু বিদায় জানানোর মতো একটি ব্যাপার ছিল। যারা এটাকে ‘কার্যকরী কমিটির বিশেষ সভা’ হিসেবে প্রচার করছেন তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা বলছেন। আমি বলব, তারা যেন দলের বিষয় নিয়ে এইসব বিভ্রান্তি না ছড়ান। আমার অনুপস্থিতিতে দল গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলবে।’
পুলিশ পাহারায় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ এ ব্যাপারে বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ মিছিলের সামনে-পিছনে অবস্থান নিয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন