চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি সিএনজি অটোরিকশা চালক আবদুল মোনাফের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রথমে হত্যা করা হয়। এরপর তার ছুরি দিয়ে নিহত মোনাফের গলায়, বুকে, পিঠে ও মাথায় উপর্যুপরি আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে লাশ জমিতে ফেলে দেয় খুনিরা।
গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই দিয়েছে এক কিশোর ও দুই যুবক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমন খবর জানালেন লোহাগাড়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
ওসি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে গ্রেফতার ওই কিশোর ও দুই যুবক জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে একটি হিউম্যান হলার (ম্যাজিক) গাড়িতে করে কিশোর মিজানুর রহমান শাহেদ ও আবদুল মোনাফ লোহাগাড়া ঠাকুর দিঘীর বাজারের দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় তাদের দু’জনের পিছু নেয় সিএনজি অটোরিকশা চালক খোরশেদ ও মো. হাসান। বাজার পেড়িয়ে কিছুদূর গিয়েই এক জমিতে প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে মিজানকে বলৎকার করে আবদুল মোনাফ। আর সে সময় সেখানে হাজির হয়ে তাদের দু’জনকে হাতে নাতে ধরে ফেলে খোরশেদ ও হাসান।
বকাঝকার এক পর্যায়ে মোনাফের গলার মাফলার দিয়ে মোনাফকে ফাঁসদিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রথমে হত্যা করে তারা। এরপর সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছুরি দিয়ে মোনাফের গলায় বেশ কয়েকটি আঘাত করে। একইভাবে পিঠে, বুকে ও মাথায় আঘাত করে লাশ ফেলে দেয়।
কিশোর মিজানকে এসব কাজে আর লিপ্ত না হতে শ্বাসিয়ে তাকে তাড়িয়ে দিয়ে চলে যায় খোরশেদ ও হাসান। এরপরের দিন ঠাকুরদিঘি বাজারের পাশে জমি থেকে ওই অটোরিকশা চালক আবদুল মোনাফের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসি বলেন, এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করে নিহতের স্ত্রী খতিজা বেগম।
ওসি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ভিকটিম আবদুল মোনাফের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সূত্রধরে প্রথমে কিশোর মো. মিজানুর রহমান সাহেদকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যেও ভিত্তিতে পরে পদুয়ার মৌলভী পাড়ার মো. মুছা প্রকাশ কালন সওদাগরের পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. খোরশেদ আলম (২৭) ও সাতকানিয়া থানার দক্ষিণ ছদাহা মুন্সী আবু তাহেরের পুত্র মো. হাসানকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা খুনের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।
ওসি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তাদের তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেয় দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার মো. আবদুল হক, উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুন্নবী ও সোহেল সিকদার উপস্থিত ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন