পিন্টু দেবনাথ। বন্ধুরূপী এক ভয়ঙ্কর ঘাতক। টাকা মেরে দেওয়ার জন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে হত্যা করে একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছিল পিন্টু। লোভ তাকে করেছিল আরো হিংস্র। প্রবীরের বন্ধু কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহাকে ৭ টুকরো করে মরদেহ ফেলেছিলো শীতলক্ষ্যায়।
পিন্টুর সেই নৃশংসতায় সঙ্গ দিয়েছিল তার বান্ধবী রত্না রাণী। সাথে হাত মিলিয়েছিল বাপেন ভৌমিক ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
দুই বন্ধু হত্যায় আজ সবাই কারাগারে।
কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা হত্যায় রোববার পিন্টু ও রত্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
স্বপন সাহা হত্যা মামলা:
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, স্বপন সাহা হত্যা মামলায় পিন্টু ও রত্নার বিরুদ্ধে রোববার অভিযোগ গঠন করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
এই খুনের দায় স্বীকার করে গত বছরের ২২ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মহসীনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল পিন্টু।
এ ঘটনায় পিন্টুর বান্ধবী রত্না রাণী ও আবদুল্লাহ আল মোল্লা মামুন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহাকে হত্যা করে লাশ সাত টুকরা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় বন্ধু পিন্টু দেবনাথ ও তার সহযোগীরা।
স্বপন সাহা হোসিয়ারি ব্যবসার পাশাপাশি পাসপোর্টের ব্রোকারি করতেন। ফতুল্লার কাশীপুর এলাকার সেলিনা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে তার প্রেম ছিল। পরে স্বপন কুমার সাহা মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম রাখেন সাইদুর রহমান স্বপন। বিয়ে করেন সেলিনাকে।
স্বপন নিখোঁজ হলে ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর তার বড় ভাই অজিত কুমার সাহা নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর স্বপনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার ৬ নভেম্বর ফতুল্লা থানায় অপর একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল ট্র্যাক করেই আটক করা হয়েছিল রত্না রানী চক্রবর্তীকে। রত্না শহরের মাসদাইর এলাকায় বসবাস করলেও তার স্থায়ী বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
প্রবীর হত্যা মামলার সাক্ষ্য:
এদিকে, স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের মামলায় রোববার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে সাক্ষী দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী রূপা ঘোষ, নিহতের ভাই মামলার বাদী বিল্পব চন্দ্র ঘোষ ও বোন শিল্পি রানীসহ ৩জন।
সাক্ষীরা হত্যাকারী হিসেবে পিন্টু দেবনাথ, আবদুল্লাহ আল মামুন ও বাপেন ভৌমিককে অভিযুক্ত করে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পিপি এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, প্রবীরের স্ত্রী ও ভাই বোন আসামিদের অভিযুক্ত করে সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারী দিন ধার্য্য করেছেন।
গত বছরের ১৮ জুন রাতে নিখোঁজ হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষ। পরে ৯ জুলাই শহরের কালীরবাজার এলাকা থেকে পিন্টু দেবনাথ ও বাপেন ভৌমিক বাবুকে গ্রেফতার করে ডিবি।
তাদের দেওয়া তথ্যমতে রাতেই শহরের আমলাপাড়া এলাকার রাশেদুল ইসলাম ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রবীর ঘোষের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন