বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরের কাস্টমস ওয়েব্রিজে বিজিবি স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয়ার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। রবিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি বাণিজ্য সহ বন্দর থেকে সব ধরনের মালামাল খালাশ প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। ফলে গত দু’দিনে সরকারের ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়।
বেনাপোল বন্দরে আমদানিকৃত পণ্য মাপার ওয়েইং স্কেলে বিজিবি প্রত্যাহারের দাবিতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি বাণিজ্যসহ পণ্য খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। আমদানি রফতানি বন্ধ থাকায় দু’দেশের বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক। বৈধ রুটে আমদানিকৃত পণ্য চালানে কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রমের বাইরে বিজিবির কাস্টমস আইন বহির্ভূত হস্তক্ষেপের ফলে বেনাপোলের সামগ্রিক বাণিজ্য ও রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান।
সোমবার (১৬ জুলাঈ) দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট ও রফতানি টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায় দু’দেশের বন্দর এলাকায় শত শত আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে যত্রতত্র।
বেনাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এমদাদুল হক লতা জানান, মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের রায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আইন এবং বিভিন্ন সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্দেশনা বিজিবি উপেক্ষা করে বন্দর ও কাস্টমস ওয়েইং স্কেলে বসে আমদানি পণ্যচালানের ওজন পরিমাপ করা শুরু করলে বিজিবি, কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
শনিবার (১৪ জুলাই) থেকে বিজিবির কয়েকজন সদস্য বন্দর ও কাস্টমস ওয়েইং স্কেলে বসে আমদানিকৃত পণ্যচালানের মালামাল নিজেরাই ওজন করতে থাকে। বিজিবি বন্দর এলাকায় আমদানি ও রফতানি কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করায় ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আদায় ।
বিজিবি বলছে তারা জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির ৬০ তম সভার কার্যবিবরণীর গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ক বন্দর ও চেকপোস্ট সমূহে আমদানিকৃত মালামাল ওজন করার সময় বিজিবির প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে।
তবে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, আইনে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যক্রম সম্পাদনে উল্লিখিত আইন, প্রজ্ঞাপন ও বিধি বিধান উপেক্ষা করে কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রমে বিজিবির এমন কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে আইন বহির্ভূত।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনায় বলা হয়েছে পত্র নথি নং-০৮.০১.০০০০.০৬৩.০১.০০৬.১৫/৭৬, তারিখ : ০২/০৮/২০১৫ পত্রে বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানিকৃত নয় এমন পণ্য পরিবহন তথা চোরাচালান রোধকল্পে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে টাস্কফোর্সের আওতায় নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ উক্ত পত্রে বিল অব এন্ট্রির পণ্য টাস্কফোর্সের আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে।
এ দিকে ৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির ৬০ তম সভার কার্যবিবরণীর গৃহীত সিদ্ধান্তের পেক্ষিতে কাস্টমস ও বন্দরের দু’টি ওয়েইং স্কেলে আমদানিকৃত মালামাল ওজন করার সময় বিজিবির প্রতিনিধি উপস্থিত নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন