ব্যাংক খাতে অনিয়মে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। বলেন, ‘ব্যাংক লুটেরাদের যেকোনো মূল্যে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তারা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পাওনা আদায় করা হবে।’
পাশাপাশি ব্যাংক খাতে যারা ভালো কাজ করছেন তাদের পুরস্কার দেওয়ার কথাও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। বলেন, যারা ভালো কাজ করছেন তাদের উৎসাহিত করা হবে। যারা মন্দ কাজ করছেন তাদের তিরস্কার করা হবে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ বাজেট নিয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)’র এক সংলাপে অংশ নিয়ে মোস্তফা কামাল এ সব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আরও শক্তিশালী করা হবে। অনিয়মের জন্য ফারমার্স ব্যাংকের ১৪ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তবে যারা নিয়ম মেনে ব্যবসা করবে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সরকার।’
সিপিডির অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পরিকল্পনামন্ত্রী তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনাদের বিএনপি সরকারের আমলে কত মাস ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাওয়া যায়নি। আমাদের সময় অনিয়ম হয়নি এমন কথা বলব না। আমরা কোনো ব্যবস্থায় নিইনি এমন অভিযোগ সঠিক না।’
‘উইন উইন সিচুয়েশন আমরা ম্যাচ করব। আমরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের রিফর্মস আনব। রিফর্মস এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করব।’
সিডিপির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সংলাপ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা রহমান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সিপিডির বক্তব্য অনুযায়ী- আমাদের যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা তা হয়তো আমরা অর্জন পারিনি। এর পেছনে মূল সমস্যা হচ্ছে পাওয়ার। এনার্জি না থাকলে ইন্ডাস্ট্রি হয় না। আর এটা না হলে আউটপুটও পাবেন না। আর রপ্তানিরও কোনও ব্যবস্থা থাকবে না।’
সিপিডিকে উদ্দেশ্য করে মোস্তফা কামাল বলেন, ‘গতবার যখন সিপিডি প্রোগামে এসেছিলাম, তখন হতদরিদ্র হিসেবেই এসেছিলাম। এখন আমরা হতদরিদ্র নেই। কিছু দিন আগেই জাতিসংঘ আমাদের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে। তার আগে বিশ্বব্যাংক নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেয়।’
‘দরিদ্র শ্রেণির বন্ধনি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি। আরও একটি সুখবর হচ্ছে, ১০ বছর আগে পৃথিবীর অর্থনীতিতে আমাদের অবস্থান ছিল ৫৮তম দেশ। এই ১০ বছরে আমরা ১৬টি দেশকে ডিঙ্গিয়েছি- আমাদের অবস্থান এখন ৪২তম স্থানে। এই ১৬টি দেশ হলো: ফিনল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, নিউজিল্যান্ড, কাতার, ভিয়েতনাম, পর্তুগাল, গ্রিস, পেরু, ইরাক, আলজেরিয়া, কাজাখস্তান, হাঙ্গেরি, কুয়েত, সুদান ও তেল সমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলা।’
‘আগামী ২২ বছরে এ দেশ আরও ২২ দেশকে পেছনে ফেলবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই ৪২ থেকে উন্নত দেশে পাড়ি দেয়া। এটা আমরা করতে পারব ইনশাল্লাহ।’
‘তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২০তম। আমরা জি-টোয়েন্টি বা এলিট ক্লাসে পৌঁছে যাব।’
অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন