রোজা ও নামাজ ইসলামের ফরজ বিধান। রোজার চেয়ে নামাজের গুরুত্ব কোনো ক্রমেই কম নয় বরং নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রোকন আর রোজা তৃতীয়। তা সত্ত্বেও আমাদের সমাজে নামাজের চেয়ে রোজাকেই গুরুত্ব দিয়ে পালন করতে দেখা যায়। অথচ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের ওপর ফরজ করা হয়েছে। এমনকি রমজান মাসেও দেখা যায় অনেকেই আমরা ফরজ নামাজ ছেড়ে দিই। অথচ মাহে রমজানে দিনভর রোজা রাখলে পালন হয় ১ ফরজ; আর দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজে আমাদের উপর রয়েছে ১৭ ফরজ। নামাজের ব্যাপারে অবহেলার পেছনে আসলে কী কারণ রয়েছে আমরা কি তা কখনো ভেবে দেখেছি? অথচ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজের আনুগত্য কর। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে’। (সূরা আনকাবুত- ৪৫)
অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘যারা কিতাবকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে আমি এরূপ সৎকর্মশীলদের কর্মফল নষ্ট করি না’। (সূরা আরাফ-১৭০) সূরা বাইয়্যিনাতে আম্বিয়ায়ে কেরামের দাওয়াতের দ্বিতীয় ধাপ স্বরূপ নামাজকে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তাদের এছাড়া কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহতায়ালার ইবাদত করবে এবং নামাজ কায়েম করবে’। (সূরা বাইয়্যিনাহ- ৫)
তাছাড়া নামাজের ব্যাপারে যারা উদাসীন থাকে তাদের ব্যাপারে শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য নিজেদের নামাজের ব্যাপারে যারা থাকে গাফেল।’ (সূরা মাউন ৪-৫)। অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘(সেদিন) অপরাধীদের সম্পর্কে পরস্পরে জিজ্ঞাসা করবে যে, কিসে তোমাদের জাহান্নামের ঠেলে দিয়েছে? তারা বলবে, আমরা নামাজি ছিলাম না।’ (সূরা মুদ্দাসসির ৪২-৪৩)।
আর কিয়ামতের দিন নামাজের মাধ্যমেই হিসাব-নিকাশ শুরু হবে। যার নামাজ সঠিক হবে তার অন্যান্য আমলও সঠিক বলে বিবেচিত হবে। এ মর্মে রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘বান্দা ও কুফরের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ (মুসলিম, মেশকাত)
হজরত উবাদা ইবনে সামির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) আমাদের সাতটি অসিয়ত করেন, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ হলো, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করো না যদিও তোমাকে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয় বা অগ্নিকু-ে নিক্ষেপ করা হয়। আর ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করো না। কেননা যে ইচ্ছা করে নামাজ ছেড়ে দেয় সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন