দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়া একজন বীর প্রতীকের জীবন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও অর্থের অভাবে চিকিত্সা করতে পারছেন না টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের বীরযোদ্ধা হামিদুল হক (৭৪)।
দিনের পর দিন বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে এই মানুষটি। বিছানায় শুয়ে নিজের করুণ দশার কথা ভেবে প্রতিনিয়ত চোখের পানি ফেলছেন তিনি। দীর্ঘ কর্মময় জীবনে তিনি শিক্ষকতা করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। অর্থ-সম্পদকে কখনও গুরুত্ব দেননি। এতে করে সবার কাছ থেকে পেয়েছেন সম্মান ও শ্রদ্ধা। এতেই তুষ্ট ছিলেন তিনি। সেই মানুষটি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছেন। নানান রোগে তিনি এখন মৃত্যু শয্যায়। অথচ চিকিত্সা করাতে পারছেন না তিনি। হামিদুল হক এখন দু’চোখে এখন ঝাঁপসা দেখছেন। কানেও কম শোনেন। হাঁটাচলাও করতে পারেন না।
হামিদুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্বের জন্য আমাকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের সরকারি গেজেট অনুযায়ী আমার বীরত্বভূষণ নম্বর ৪২২। অথচ আজ আমার করুণ দশা। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না অনেক দিন ধরে। ভাতা থেকে যা পাই তাই দিয়ে চলে আমার সংসার। চিকিৎসা করানোর মতো টাকা থাকে না হাতে।
১৯৯০ সালে সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন হামিদুল হক। সেই মানুষটি বর্তমানে সখীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।
সখীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এম ও গণি বলেন, হামিদুল হক ১১ নম্বর সেক্টরে কাদেরিয়া বাহিনীর অধীনে যুদ্ধ করেছেন। তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছেন। পরিবারে আয়ের তেমন উত্স নেই। তার পাশে আমার সবার দাঁড়ানো উচিত।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের দায়িত্বে থাকা ও সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, হামিদুল হক বীরপ্রতীকের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উন্নত চিকিত্সার জন্য জানানো হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন